শ্রীলঙ্কাকে ৩২৫ রানের লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ


প্রকাশিত: ১২:৫৯ পিএম, ২৫ মার্চ ২০১৭

কলম্বো টেস্টে ব্যক্তিগত ৮২ রানে যখন তামিম আউট হয়েছিলেন, তখন ডাগআউটে দাঁড়িয়ে খুব বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। সামনা সামনি না দেখলেও পরে টিভি রিপ্লেতে তা দেখেছেন তামিম। যদিও জয়ের পর হাথুরু বলেছিলেন, তামিমের প্রতি কোনো রাগ নেই তার।

কিন্তু তামিম কি কোচের সেই বিরক্তি প্রকাশের ধরণটা মনের মধ্যে গেঁথে রেখেছিলেন? আর ভেবেছিলেন ব্যাট দিয়েই কোচকে জবাবটা দিয়ে দেবেন! এ জন্যই হয়তো ডাম্বুলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে পণ করে নেমেছিলেন তামিম ইকবাল!

আগ্রাসী তামিমকে আজ দেখা গেল ভিন্নরূপে। শুরু থেকে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে সেঞ্চুরি তুলেই মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশের এই ড্যাশিং ওপেনারকে। তার সেঞ্চুরির সঙ্গে সাব্বির-সাবিকের অসাধারণ দুটি হাফ সেঞ্চুরির ওপর ভর করেই শ্রীলঙ্কার সামনে ৩২৫ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

তামিমের সেঞ্চুরির পাশাপাশি এদিন উজ্জ্বল ছিল বন্ধু সাকিব আল হাসানও। তামিমের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ১৪৪ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়ে তোলেন তিনি। নিজেও তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। ৭২ রান করে আউট হন সাকিব আল হাসান।

শুধু সাকিবই নয়, তামিমকে দারুণ সঙ্গ দেন সাব্বির রহমানও। দ্বিতীয় উইকেটে ৯০ রানের জুটি গড়ে বড় ইনিংসের ভিত গড়ে যান এ ড্যাশিং ব্যাটসম্যান। তিনি আউট হন ৫৪ রানে। ফলে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩২৪ রান করে বাংলাদেশ দল।

Vision

শনিবার ডাম্বুলায় টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। ২৯ রানের জুটিও গড়েন তারা দু’জন। তবে ইনিংসের ৫ম ওভারে এসে সুরাঙ্গা লাকমালের বলে ধরাশায়ী হন সৌম্য। অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বল অযথাই খোঁচা মারতে গিয়ে নিজের উইকেট বিলিয়ে আসেন এ ওপেনার।

এরপর সাব্বির রহমানকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন তামিম। ৯০ রানের বড় জুটি গড়ে দলকে চাপমুক্ত করেন তিনি। তবে দলীয় ১১৯ রানের মাথায় এ জুটি ভাঙেন অ্যাসেলা গুনারত্নে। অধিনায়ক উপুল থারাঙ্গার দুর্দান্ত এক ক্যাচের বলি হন সাব্বির। ঝাঁপিয়ে পড়ে বাজ পাখির মত ক্যাচ লুফে নেন লঙ্কান অধিনায়ক। আউট হওয়ার আগে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন সাব্বির। ৫৬ বলে ১০টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি।

এরপর পরের ওভারেই দলের বিপদ বাড়িয়ে আউট হয়ে যান মুশফিকুর রহীম। লক্ষণ সান্দাকানের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। নামের পাশে যোগ করতে পেরেছেন মোটে ১ রান। ফলে ১ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। এ অবস্থায় সাকিব আল হাসানকে নিয়ে দলের হাল ধরেন তামিম ইকবাল।

সাকিব-তামিমের ব্যাটেই মূলতঃ বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যায় টাইগাররা। ১৪৪ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটসম্যান। তবে দলীয় ২৬৪ রানে লাকমালের দ্বিতীয় শিকার হন সাকিব। তার স্লোয়ার বলে সুইপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে সান্দাকানের হাতে ধরা পড়েন এ অলরাউন্ডার। ৭১ বলে ৭২ রানের ইনিংসটি সাজান তিনি ৪টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে। সাকিবের এই ব্যাটিং দেখেই বোঝা যায় তিনি কতটা সাবধানি ব্যাটিং করেছেন আজ।

লাহিরু কুমারার করা ৪৮তম ওভারে চতুর্থ বলে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে চক্কা হাঁকান তামিম। পরের বলে আরও একটি ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং অনে গুনাথিলাকার হাতে ধরা পড়েন তিনি। তবে আউট হওয়ার আগে দলের জন্য কাজের কাজটি করে যান তিনি। ১২৭ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন তিনি। ১৪২ বলের ইনিংসটিতে ছিল ১৫টি চার ও ১টি ছক্কা। শেষদিকে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৯ বলে ২৪ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৭ বলে ১২ রান করেন। ফলে ৫ উইকেটে ৩২৪ রানের বড় সংগ্রহই পায় বাংলাদেশ দল।

আরটি/আইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।