‘আগমনী বার্তা দিয়ে রাখলো মোসাদ্দেক’


প্রকাশিত: ০৪:১৫ পিএম, ১৭ মার্চ ২০১৭

বাংলাদেশের ক্রিকেটে পঞ্চ পাণ্ডব বলতে মাশরাফি, সাকিব, তামিম-মুশফিকের পর যে নামটি চলে আসে, তা হলো ‘মাহমুদউল্লাহ।’ বেশ ক’বছর ধরেই জাতীয় দলের অন্যতম স্তম্ভ মাহমুদউল্লাহ। তবে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ডের সাথে পর পর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করে পাদপ্রদীপের আলোয় আসা।
 
এরপর অবশ্য দিনকে দিন খানিক নুয়ে পড়া। মাঝে নিজেকে খুঁজে না পাওয়া। অবশেষে শততম টেস্টে ড্রপ মাহমুদউল্লাহ। তার মতো বড় ক্রিকেটারের জায়গায় দলে সুযোগ পাওয়া বাড়তি মানসিক চাপ বৈকি। সেই চাপ নিয়ে প্রথম টেস্ট খেলতে নামা। তাও এমন এক সময় যখন ভালো খেলা খুব জরুরি।
 
দল তখনো ৪৮ রানে পিছিয়ে। যদিও সাকিব আল হাসান ক্রিজে, তারপরও তাকে সঙ্গ দেয়ার মতো শেষ ব্যাটসম্যানই ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। যে কোনো তরুণের জন্য ঘাবড়ে যাওয়ার মতো পরিবেশ ও প্রেক্ষাপট। জীবনের প্রথম টেস্টেই অগ্নি-পরীক্ষার মুখোমুখি।

কিন্তু সবাইকে অবাক করে সে পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উৎরে গেলেন মোসাদ্দেক। শুধু উৎরে যাওয়াই নয়, অষ্টম উইকেটে সাকিবের সাথে হাত মিলিয়ে ১৩২ রানের বিরাট জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে দেয়ার গুরুত্বপূর্ণ মিশনেও রাখলেন কার্যকর ভূমিকা। শেষ পর্যন্ত ৭৫ রানের এক পরিপাটি ইনিংস খেলে প্রমাণ দিলেন- সীমিত ওভারে ক্রিকেটের চেয়েও তিনি দীর্ঘ পরিসরে অনেক বেশি সাবলীল ও দক্ষ।
 
প্রমাণ জেনে নিন, ৮ ওয়ানডেতে একটি মাত্র ফিফটি। আর ৪ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সর্বোচ্চ ২০। সেই মোসাদ্দেক প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই উইকেটে প্রায় তিন ঘণ্টা উইকেটে কাটিয়ে বল খেললেন ১৫৫ টি। টেসট অভিষেকে বাংলাদেশের সেঞ্চুুরিয়ান আছেন তিন জন; আমিনুল ইমলাম বুলবুল, মোহাম্মদ আশরাফুল ও আবুল হাসান রাজু। তাদের পথ ধরে চার নম্বরে নাম লেখাতে পারতেন মোসাদ্দেক; যদি মিরাজ একটু বেশি সময় দিলেই হয়ে যেত।

শেষ দিকে সঙ্গী না পেয়ে মারতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসা। কিন্তু শতরান করতে না পারলেও আবির্ভাবে মোসাদ্দেক সবার মন কেড়েছেন। রেখেছেন সামর্থ্যের প্রমাণ।

২১ প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৩৩ ইনিংসে দুর্দান্ত রেকর্ড এই ২১ বছরের যুবার। ৭ সেঞ্চুরিতে রান অাছে ২১৩৫। গড় ৬৮.৮৭। আর সবচেয়ে কথা সাত শতরানের তিনটিই ডাবল সেঞ্চুরি। তার সমসাময়িক আর কারও নেই ঐ সমৃদ্ধ রেকর্ড।
দিন শেষে তাই মোসাদ্দেকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সাকিব আল হাসান।
 
মোসাদ্দেকের অ্যাপ্রোচ ও অ্যাপ্লিকেশনটা খুব মনে ধরেছে সাকিবের। তাই মুখে এমন কথা, ‘মোসাদ্দেকের স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি কেমন? আমি তো আসলে ওটা বিচার করার কেউ না। তবে আমি মনে করি ওর অনেক বড় ভবিষ্যত আছে। আমার বিশ্বাস, মোসাদ্দেক জাতীয় দলের হয়ে এমন খেলতে পারলেই ভালো।’
 
সাকিরবের সবচেয়ে ভালো লেগেছে মোসাদ্দেকের অ্যাপ্রোচ। তার ধারণা, এটা একদম আন্তর্জাতিক মানের। তাইতো মুখে এমন কথা, ‘মোসাদ্দেকের অ্যাপ্রোচটা একদম আন্তর্জাতিক খেলার উপযোগী। আমি আশা করব, ও যেন এই অ্যাপ্রোচটা ধরে রাখতে পারে।’

এআরবি/এনইউ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।