প্রথম দিনের নায়ক দলের সবাই


প্রকাশিত: ০২:৫৫ পিএম, ১৫ মার্চ ২০১৭

দারুণ একটা দিন গেল বাংলাদেশের। এমন দলীয় পারফরম্যান্সই আশা করেছিলাম। আজকের দিনের নায়ক নির্দিষ্ট কেউ নয়, দলের সবাই। বোলাররা প্রত্যাশা অনুযায়ী বোলিং করেছে। শুরু থেকেই খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষাও ছিল প্রাণবন্ত। ফিল্ডিংও আজকে দারুণ আক্রমণাত্মক ছিল মুশফিকদের। তবে দুশ্চিন্তা একটাই, উইকেটে এখনও আছেন দিনেশ চান্দিমাল। এছাড়া আজকের দিনটা বাংলাদেশেরই ছিল। আশাকরি শততম টেস্টটা আরও ভালো করে স্মরণীয় করে রাখবে টাইগাররা।

যদিও টস ভাগ্য আমাদের পক্ষে এবারও আসলো না। গত চার টেস্টেই আমরা টস হারলাম। টেস্টে টস সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। তবে সে ঘাটতি শুরুতে বোলাররা পুষিয়ে দিয়েছে। তারপরও বলবো, এ উইকেটে আগে ব্যাটিং করে ভালো স্কোর করতে পারলে ওদের চাপে ফেলে দেওয়া যেত। তবে ভাগ্যের উপর কারো হাত নেই। প্রথম সেশনে ওদের অলআউট করতে হবে। উইকেট প্রথম তিন দিন ব্যাটসম্যানদের পক্ষেই থাকার কথা।

বোলারদের কথা না বললেই নয়। তারা আজকে নিখুঁত বোলিং করেছে। তবে শুরুতে যে চাপটা দিয়েছিলাম, সেটা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারিনি। শেষদিকে ভাগ্যটা ওদের পক্ষে গেছে। ৭ ওভার আগেই খেলা শেষ হলো। শেষে কিন্তু উইকেট পড়ার সুযোগ থাকে বেশি। আগামীকাল যেভাবেই হোক শুরুতেই চান্দিমালকে আউট করতে হবে। ও কিন্তু আমাদের বিপক্ষে খেললেই ব্র্যাডম্যান হয়ে যায়। আমাদের বিপক্ষে এর আগে মনে হয় পাঁচ টেস্ট খেলে তিনটি সেঞ্চুরি করেছে। গল টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও হাফসেঞ্চুরি করে অপরাজিত ছিল। তাই ওকে আটকাতে হবে।

ওদের অলআউট করতে আমাদের তিনটি উইকেট দরকার। এটা কিন্তু অন্য প্রান্ত থেকেই তুলে নেওয়া যায়। হেরাথ ব্যাটিং জানে তবে এমন আহামরি কেউ নয় যে আমাদের বিপক্ষে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাটিং করবে। সকালের শুরুটা আমাদের জন্য তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুরুতে উইকেট না পেলে ঝামেলা হয়ে যাবে।

একাদশ দেখেও একটু অবাক হয়েছিলাম। তিনটি পরিবর্তন আশা করেছিলাম। সেখানে হয়েছে চারটি। মুমিনুলকে বাদ দেওয়া কতটা যুক্তিপূর্ণ হলো আমি বুঝতে পারছি না। তবে মোসাদ্দেকের অভিষেকে আমি খুশি। কারণ ছেলেটা সীমিত ওভারের চেয়ে কিন্তু বড় দৈর্ঘের ম্যাচেই ভালো খেলে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি করেই জাতীয় দলে এসেছিল। এখন দেখার বিষয় ও কেমন করে। আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ওর আছে। এটা হয়তো কাজে দেবে।

আগের দিনই বলেছিলাম একটা পেসার কমিয়ে তাইজুলকে নেওয়া হতে পারে। তাই হয়েছে। ওকে অন্তর্ভুক্ত করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হয়েছে। কলম্বোর উইকেট বরাবরই স্পিন সহায়ক। আর আজকে তাইজুল ভালো বোলিংও করছে। এছাড়াও ওর ব্যাটিং ক্যালিবারও ভালো। টেলএন্ডে এসে কিছু রান করতে পারবে। গল টেস্টে এটার অভাব আমরা দেখেছি। টেলএন্ডে কেউই রান করতে পারেনি। শেষদিকে ১০/১৫ রান করে করতে পারলে স্কোরটা বড় হয়ে যায়। মোট কথা, দল দেখে আমি খুশি।

মোস্তাফিজের বোলিং আজকে দারুণ লেগেছে। নিউজিল্যান্ডে যেমন আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখেছিলাম আজ তার ছিটেফোঁটাও ছিলো না। দারুণ প্রাণবন্ত বোলিং করেছেন। এটা আমি আগের টেস্টেও দেখি নাই। মোস্তাফিজের পর মিরাজই ওদের কোণঠাসা করে দিয়েছে। শুরুতে পেসাররা ভালো করার পর হঠাৎ ওকে আনায় একটু অবাক হয়েছিলাম। তবে মিরাজ যেভাবে বোলিং করেছে তাতে আমি বিস্মিত। উইকেটের পিছনে মুশফিকও ছিল দারুণ। অধিনায়কত্বেও দারুণ মুন্সিয়ানা দেখিয়েছে মুশফিক। কার্যকরী বোলিং পরিবর্তন করেছে সে।

Vision

সাকিবও আজকে দারুণ বোলিং করেছে। ওর পরিসংখ্যানটা হয়তো আরও ভালো হতো। দুইবার চান্দিমালকে আউট করেও হলো না। রিভিউভাগ্যটা ওদের পক্ষেই গেছে। সত্যি আজকে চান্দিমাল অনেক ভাগ্যবানও ছিল। তাসকিনকে হটিয়ে শুভাশিস দলে ছিলো। কেন ছিল তা ও দেখিয়ে দিয়েছে।

সব মিলিয়ে আমি আশাবাদী। ওদের ২৩৮ রানে ৭টা উইকেট নিয়েছি। আড়াইশর মধ্যে অলআউট করতে পারলে খুবই ভালো হবে। প্রথম সেশনের আগেই ওদের অলআউট করে সারাদিন ব্যাটিং করতে হবে। কমপক্ষে ৫/৬টা সেশন ব্যাটিং করতে পারলে এ টেস্টে আমরাই জিতবো। আর শততম টেস্টে জয় দিয়ে শেষ করতে পারলে খুবই দারুণ হবে।

আরটি/আইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।