কলম্বোয় প্রথম দিনটা বাংলাদেশের


প্রকাশিত: ১১:৫৩ এএম, ১৫ মার্চ ২০১৭

দিনের খেলা তখনও ৬.৫ ওভার বাকি। তার আগে থেকেই লঙ্কান ক্রিকেটাররা আম্পায়ারদের কাছে আর্জি জানাচ্ছিল খেলা বন্ধ করে দেয়ার জন্য। বাংলাদেশ প্রস্তুত দিনের বাকি ওভারগুলো করতে। সাকিব আল হাসান বোলিং শুরুই করেছিলেন; কিন্তু তখন ঈষাণ কোনে ঘণকালো মেঘ। সূর্য্য দেখা যাচ্ছিল না। আলোও কমে আসলো। সুতরাং, শেষ পর্যন্ত দুই আম্পায়ার আলিম দার ও এস রবি আলোচনা করে দিনের বাকি ওভারের খেলা বাতিল ঘোষণা করলেন।

ফলে শেষ বিকেলের সুবিধাটা আর আদায় করতে পারলো না বাংলাদেশ। কারণ, শেষ মুহূর্তে ওই কয় ওভার করা গেলে হয়তো একটা-দু’টা উইকেটের পতন ঘটাতে পারবো টাইহাররা। তারপরও নিজেদের শততম টেস্টে প্রথম দিনটা বাংলাদেশেরই। শুরু থেকেই চাপে রেখে ২৩৮ রানে লঙ্কানদের প্রথম সারির ৭ ব্যাটসম্যানকে তুলে নিয়েছে মুশফিক অ্যান্ড কোং।

তবুও কথা থেকে যায়। কারণ, প্রথম সারির ৭ ব্যাটসম্যানকে আউট করে লেজ বের করতে পারলেও শঙ্কা কাটেনি বাংলাদেশ দলের। মুশফিকদের কপালের ভাঁজ চওড়া করে বহাল তবিয়তে উইকেটে রয়ে গেছেন দিনেশ চান্দিমাল। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাঁচ টেস্টে তিনটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। এ টেস্টেও তেমন কিছুর আভাষ দিচ্ছেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।

ইতোমধ্যেই ৮৬ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত আছেন চান্দিমাল। তার সঙ্গী অধিনায়ক রঙ্গনা হেরাথ অপরাজিত আছেন ১৮ রানে। এছাড়া ৩৪ রান করে করেন নিরোশান ডিকভেলা ও ধনঞ্জয় ডি সিলভা।

আগের দিন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিক বলেছিলেন শততম টেস্টে দলীয় পারফরম্যান্স চান। এদিন বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা তা করে দেখিয়েছেন। পাঁচ বিশেষজ্ঞ বোলারই পেয়েছেন উইকেট। তবে অপেক্ষাকৃত বেশি উজ্জ্বল ছিলেন দুই তরুণ মোস্তাফিজ ও মিরাজ। দু’জনই পেয়েছেন ২টি করে উইকেট।

নিজেকে কিছুটা দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন সাকিব আল হাসান। কারণ তার বলে দু’বার আউট হয়েও রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেছেন দিনেশ চান্দিমাল। ফলে ডিকভেলার উইকেট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এছাড়াও ১টি করে উইকেট নেন শুভাশিস ও তাইজুল।

বুধবার কলম্বোর পি সারা স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে শ্রীলঙ্কা। শুরু থেকেই বাংলাদেশি বোলারদের তোপে পড়ে স্বাগতিকরা। শুরুটা করেন মোস্তাফিজ। করুনারত্নেকে মিরাজের তালুবন্দি করে সাজঘরে ফেরান বাংলাদেশের বিস্ময় বালক মোস্তাফিজ। তারপর জোড়া উইকেট তুলে নিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। গল টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান কুশল মেন্ডিসকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে এবং উপুল থারাঙ্গাকে সৌম্যের তালুবন্দি করেন ডানহাতি এই স্পিনার।

এরপর মধ্যাহ্ন বিরতির আগে অ্যাসেলা গুনারাত্নেকে ফেরান শুভাশিস রায়। দ্বিতীয় স্পেলে বোলিং করতে এসেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন গুনারাত্নেকে। তবে পঞ্চম উইকেটে ৬৬ রানের জুটি গড়ে ভয়ংকর কিছুরই পূর্বাভাস দিচ্ছিলেন ধনঞ্জয় ও চান্দিমাল। তবে এ জুটি ভেঙ্গে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফিরিয়ে আনেন তাইজুল। তার বল লেগে ঘুরাতে চেয়েছিলেন ডি সিলভা; কিন্তু ব্যাটে বলে সংযোগ ঘটাতে না পারায় বোল্ড হয়ে যান তিনি।

এরপর নিরোশান ডিকভেলাকে সঙ্গে নিয়ে ৪৪ রানের জুটি গড়েন দিনেশ চান্দিমাল। এ জুটি ভাঙেন সাকিব। তার লেগ স্ট্যাম্পের ওপরের বল রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়েছিলেন ডিকভেলা; কিন্তু বলের ফ্লাইট পুরো মিস করেন এবং আগেই শট খেলে বসেন। ফলে বোল্ড হয়ে যান ডিকভেলা।

শুরুর মত শেষটাও করেন মোস্তাফিজ। দিলরুয়ান পেরেরাকে ফিরিয়ে প্রথম দিনে বাংলাদেশের শেষ সাফল্যটা পান কাটার মাস্টার। তার বল আড়াআড়ি ব্যাট চালিয়ে কাট করতে চেয়েছিলেন পেরেরা। তবে বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় দ্বিতীয় স্লিপে। আর সে বল তালুবন্দি করতে কোন ভুলই করেননি সৌম্য সরকার।

১৯৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া শ্রীলঙ্কাকে উদ্ধারের চেষ্টায় চান্দিমালের সঙ্গে জুটি বাঁধেন অধিনায়ক হেরাথ। ইতোমধ্যে অপরাজিত থেকে গড়ে তুলেছেন ৪৩ রানের জুটি। ফলে ৭ উইকেটে ২৩৮ রান নিয়েই দিন শেষ করে স্বাগতিকরা।

আরটি/আইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।