তিন স্তম্ভের দিকেই তাকিয়ে বাংলাদেশ


প্রকাশিত: ১২:০৩ পিএম, ১৪ মার্চ ২০১৭

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের যাত্রা প্রায় ১৭ বছর। ২০০০ সালে এ রাজকীয় ক্লাবে ঢোকার পর ইতোমধ্যে বাংলাদেশ খেলে ফেলেছে ৯৯টি টেস্ট। এ সময়ে বাংলাদেশ দলের টেস্ট ক্যাপ পেয়েছেন ৮৫ জন ক্রিকেটার। এর মধ্যে পারফরম্যান্সের বিচারে সাড়া জাগিয়েছেন কয়েকজনই। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয় তিন স্তম্ভ সাকিব, তামিম ও মুশফিকের নাম। আর শততম টেস্টে এ তিন স্তম্ভের দিকেই তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।

অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থাকতেই আলোচনায় আসেন মুশফিকুর রহীম। এমনকি এ সময়ে টেস্ট ক্রিকেটেও অভিষেক হয় তার। তবে ক্রিকেটের ভিতটা গড়েছেন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি)। মুশফিকের মত সাকিব আল হাসানও বিকেএসপিতে গড়েছেন নিজেকে। তবে তামিম ইকবালের পরিচয় বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খানের ভাতিজা ও সাবেক ওপেনার নাফিস ইকবালের ছোট ভাই হিসেবেই।

২০০৫ সালে লর্ডসে মাত্র ১৭ বছর বয়সে টেস্ট ক্রিকেট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় মুশফিকুর রহীমের। প্রথম ম্যাচেই নিজের জাত চিনিয়েছিলেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। এরপর খুব দ্রুতই নিজেকে তৈরি করেছেন আস্থার প্রতিমূর্তি। টেস্ট ক্রিকেটে মুশফিকের দিকেই তাকিয়ে থাকে গোটা বাংলাদেশ। বংলাদেশের হয়ে টেস্টে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিটি আসে তার হাত ধরেই।

সাকিব আল হাসানের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে। তবে টেস্ট অভিষেক হয় তার ১০ মাস পরে। ধীরে ধীরে সাকিবই প্রথম বাংলাদেশকে দেখান ব্যাট ও বল হাতে ইমরান খান, ইয়ান বোথামের মত কিভাবে ধারাবাহিকভাবে পারফরম্যান্স করে যেতে হয়। তিনিই প্রথম কোন বাংলাদেশি আইসিসি র্যাবঙ্কিংয়ের তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেন। দুদিন আগেও তিন সংস্করণেও শীর্ষ অলরাউন্ডার ছিলেন তিনি।

তিন স্তম্ভের সবচেয়ে কনিষ্ঠ সদস্য তামিম ইকবাল। সাকিব-মুশফিকের চেয়ে প্রায় দুই বছর ছোট এ ওপেনারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ওয়ানডে দিয়ে ২০০৭ সালে। তবে টেস্ট অভিষেকের জন্য অপেক্ষা করতে হয় প্রায় এক বছর। অভিষেক ম্যাচেই আলো ছড়ান তিনি। এরপর গত এক দশকে একের পর এক রেকর্ড ভেঙে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যানই তিনি।

কাকতালীয়ভাবে বাংলাদেশের পক্ষে টেস্টে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি এসেছে এ তিন তারকার হাত ধরেই। গলে প্রথম মুশফিক করার পর ঘরের মাঠে খুলনায় এ কীর্তি গড়েন তামিম। কদিন আগেই ওয়েলিংটনে ডাবল সেঞ্চুরি করেন সাকিব। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানও করেছেন তারাই।

Vision
৪৮ টেস্টে ৯২ ইনিংস ব্যাটিং করে ৩৮.৯৬ গড়ে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৫৪৬ রান করেছেন তামিম। তার পরেই আছেন সাকিব। তামিমের মত তিনিও খেলেছেন ৪৮টি টেস্ট। তবে তামিমের চেয়ে দুই ইনিংস কম ব্যাট করে ৪০.৩৩ গড়ে করেছেন ৩৩৪৮ রান। এরপরই আছেন মুশফিক। ৫৩ টেস্টে ৯৮ ইনিংস ব্যাটিং করে ৩৫.০৬ গড়ে ব্যাটিং করে করেছেন ৩১৯১ রান।

মুশফিক-তামিম শুধু ব্যাটসম্যান হলেও সাকিব একজন অলরাউন্ডার। ব্যাটের পাশাপাশি বোলিংয়েও সমান দক্ষ তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বাধিক উইকেট সংগ্রহকারীও তিনি। ৪৮ টেস্টে ৮০ ইনিংসে বল করে পেয়েছেন ১৭০টি উইকেট। টেস্টের পাশাপাশি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশের সর্বাধিক উইকেট শিকারি তিনি।

কলম্বোর পি সারা স্টেডিয়ামে আগামীকাল (বুধবার) শততম টেস্টে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। এ টেস্ট শুধু মাইলফলক অর্জনের ম্যাচই নয় এটা মানরক্ষার ম্যাচও। কারণ অভিজ্ঞতা ও শক্তির তুলনায় শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশই এগিয়ে। তার উপর গলে প্রথম টেস্টে হেরে ইতোমধ্যেই সিরিজে পিছিয়েও আছে টাইগাররা। তাই সিরিজ ড্র করতে এ টেস্টে জয়ের বিকল্প নেই মুশফিকদের। আর এ কাঙ্ক্ষিত জয় পেতে দায়িত্বটা নিতে হবে সাকিব, তামিম ও মুশফিককেই।

আরটি/এমআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।