অসহায় আত্মসমর্পণ বাংলাদেশের


প্রকাশিত: ০৮:০৩ এএম, ১১ মার্চ ২০১৭

আরও একটি স্বপ্নের অপমৃত্যু। বার বার স্বপ্ন দেখিয়ে স্বপ্নভঙ্গ করা যেন টাইগারদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। শ্রীলঙ্কার ৪৫৭ রানের লক্ষ্যে জয় প্রায় অসম্ভব। কিন্তু ড্র করা খুব কঠিন ছিলোনা। প্রয়োজন ছিল দায়িত্ব নিয়ে নিজের কাজটি করার। আর তা করতে ব্যর্থ হন মুশফিক-সাকিবরা। উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার মিছিলে যোগ দিয়ে ২৫৯ রানের বড় পরাজয়ই মানতে হয় বাংলাদেশকে।

স্বপ্নের শুরুটা হয়েছিল আগের দিন। প্রথমে দারুণ বোলিং-ফিল্ডিং করার পর ব্যাটিংটাও করেছিল নিশ্ছিদ্র। কোন উইকেট না হারিয়ে ৫৭ রান তুলে দিন শেষ করেছিল তারা। তবে স্বপ্নের সমাধি করে ফেলে তারা প্রথম সেশনেই। এ সেশনেরই পাঁচ উইকেট হারিয়ে হারের প্রহর গুণতে থাকে।

তবে ষষ্ঠ উইকেট কিছুটা ব্যতিক্রম ছিলেন মুশফিকুর রহীম ও লিটন কুমার দাস। তবে ৫৪ রানের জুটি গড়েই যেন হাঁপিয়ে ওঠেন এ দুই ব্যাটসম্যান। লেগ স্ট্যাম্পের প্রায় এক ফুট বাইরের বল খোঁচাতে গিয়ে আউট হন মুশফিক। আর লিটন আউট হন ছয় হাঁকাতে গিয়ে। ম্যাচ এখানেই শেষ। এরপর বাকি ছিল হারের ব্যবধানটা কত হয় তা দেখার।

খুব বেশি অপেক্ষ করতে হয়নি এর জন্য। লিটন আউট হওয়ার ৬০ বলের মধ্যেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন মেহেদী হাসান মিরাজ। আর তাতেই ১-০তে সিরিজে এগিয়ে যায় লঙ্কানরা। ঘরের মাঠ যে লঙ্কানদের দুর্গ তা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন তারা, তা দলের শক্তি যেমনই হোক।

শনিবার ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। সবাইকে হতাশ করে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য (৫৩)। আউট হতে পারতেন দিনের প্রথম বলেই। তবে শর্ট লেগে তার ক্যাচ না ধরতে পারায় বেঁচে যান তিনি। তবে পরের বলে সৌম্য রক্ষণাত্মক ভঙ্গীতেই খেলতে চেয়েছিলেন। তবে বল তার ব্যাট ফাঁকি দিয়ে স্টাম্পে লাগে।

সৌম্যের বিদায়ের পর উইকেটে টিকতে পারেননি মুমিনুলও (৫)। দিলরুয়ান পেরেরার বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি। মুমিনুলের বিদায়ের রেশ না কাটতেই সাজঘরে ফিরে গেলেন তামিম (১৯)। আবার দিলরুয়ান পেরেরা। অফ স্টাম্পে পিচ করা বল ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় স্লিপে গুনারত্নের হাতে।

তামিমের বিদায়ের পর সবাই তাকিয়ে ছিল সাকিবের ব্যাটের দিকে। হতাশ করেন সাকিবও। হেরাথের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান এ অলরাউন্ডার। আর সাকিবের বিদায়ের পর ভরসা ছিল আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহর উপর। হেরাথের আর্ম বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পরে ফেরেন খালি হাতে।

এরপর লিটন দাসকে নিয়ে দলের হাল ধরেন মুশফিক। ৫৪ রানের জুটিও গড়েন তারা। তবে মধ্যাহ্ন বিরতির কিছুক্ষণ পরই সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক। সান্দাকানের লেগ স্ট্যাম্পের বাইরের বল টার্ন করে আরও বাইরে যাওয়ার সময় ব্যাট চালাতে গেলে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

Vision

এর দুই ওভার পর সাজঘরে ফেরেন লিটন। হেরাথের বলে স্লগ করতে গিয়ে আকাশে উঠিয়ে দেন তিনি। আর সে বল তালুবন্দি করতে কোন ভুল করেননি থারাঙ্গা।আউট হওয়ার আগে করেন ৩৫ রান।  এরপর আর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি এল এন্ডাররা। হেরাথের ঘূর্ণিতে একে একে কুপোকাত হন তাসইন, মোস্তাফিজ ও মিরাজ। বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয় ১৯৭ রানে।

সাঙ্গাকারা-জয়াবর্ধনে-দিলশানের বিদায়ের পর শ্রীলঙ্কার আগের সে শক্তি আর নেই। এমনকি নেই নিয়মিত অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজও। হেরাথ, চান্দিমাল ও থারাঙ্গা ছাড়া বাকি সবাই প্রায় নতুন। কিন্তু তাতেও  রক্ষা হলো কই। সেই পাহাড়সম রানেই হার। তবে এ গল্পে যত না কৃতিত্ব লঙ্কানদের তার চেয়ে বেশি বাংলাদেশের ব্যর্থতার।

আরটি/এমআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।