লঙ্কান ক্রিকেটের সঙ্গে থাকাই যেন স্বর্গসুখ জয়সুরিয়ার!


প্রকাশিত: ১০:০৮ এএম, ১০ মার্চ ২০১৭

১৯৮৯ থেকে ২০১১- প্রায় দুই যুগের দীর্ঘ ক্যারিয়ার। এ ২২ বছরে লঙ্কান ক্রিকেটে অনেক সাফল্যের সঙ্গী সনাৎ জয়সুরিয়া। ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কা যেবার প্রথম বিশ্বকাপ বিজয়ী হয়, তার অন্যতম রূপকার। তার ১৭ বলে করা হাফ সেঞ্চুরি ছিল এক সময় ওয়ানডের দ্রুততম অর্ধশতক। একটানা ১৯ বছর (১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত) অটুট ছিল ওই রেকর্ড।

ওই বছর এবি ডি ভিলিয়ার্স ১৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি করলে জয়সুরিয়ার রেকর্ড ভেঙে যায়। শচীন টেন্ডুলকার, এবি ডি ভিলিয়ার্স, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম আর ক্রিস গেইলদের নামের আগে মাস্টার ব্লাস্টার্স ব্যবহার করা হয়। সত্যিকার অর্থে সনাৎ জয়সুরিয়া হলেন সীমিত ওভারের ফরম্যাটের ক্রিকেটে প্রথম ‘মাস্টার ব্লাস্টার্স’।
 
এমন হিমালয় সমান যার অর্জন। তার নিজের সম্পর্কে কি ধারণা? দীর্ঘ ক্যারিয়ারকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন জয়সুরিয়া? আজ গল স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে ক্যারিয়ারের জের টানতে গিয়ে জয়সুরিয়াকে পরিতৃপ্তই মনে হলো। কোন অতৃপ্তি-অপ্রাপ্তি ভিতরে কাটার মতো বিধছে বলে মনে হয় না।

Babuতাই বলে উঠলেন, ‘সত্যি বলতে কি আমার ক্রিকেট জার্নিটা ছিল চমৎকার। আমি সব সময়ই নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলাম। আমার কোনো আফসোস-অনুশোচনা আর অতৃপ্তি নেই। আরও বেশি খুশি আবার আমাকে লঙ্কান ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচক করা হয়েছে। সেই সুবাদে আবার ক্রিকেটের সাথে জড়িয়ে থাকার এবং দেশের ক্রিকেটে অবদান রাখার সুযোগ পেয়েছি।’
 
এরপর আরও অনেক কথা বলেছেন। যার সারমর্ম হলো, আসলে ক্রিকেট তার অন্যরকম ভালো লাগা। ভালোবাসা। তার সব সুখ যেন ক্রিকেট মানে লঙ্কান ক্রিকেটের সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে থাকার মাঝে। তাইতো মুখে এমন কথা, ‘খেলোয়াড়ী জীবনে আমি ২২ বছর লঙ্কান ক্রিকেটের সেবক হিসেবে কাজ করেছি। আবার দেশের ক্রিকেটে সেবা করার সুযোগ পেয়ে তাই আমি সন্তুষ্ট। আসলে আমার দেশের ক্রিকেটের জন্য কিছু করতে পারাই আমার ভালো লাগা। আমি তাতেই অন্যরকম আনন্দ পাই। এর আগেও আমি দুই বছর প্রধান নির্বাচকের পদে আসীন ছিলাম। এবার আবার সেই পদে ফিরে এসেছি। এই ফিরে আসা আমাকে দুটি কাজ একসাথে করার সুযোগ করে দিয়েছে। প্রথমত প্রধান নির্বাচক হিসেবে শ্রীলঙ্কার জাতীয় দলকে আবার চাঙ্গা করা। আবার শক্তিশালী দল হিসেবে গড়ে তোলা। সর্বোপরি লঙ্কান ক্রিকেটে সেবকের ভূমিকা পালন করা।’

Vision
 
প্রধান নির্বাচক হয়ে দ্বিতীয়বার ফেরার পর কেমন লাগছে? আপনার কি মনে হয় শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের সেই সব সোনালী দিন আবার ফিরে আসবে? এমন প্রশ্নের জবাবে জয়সুরিয়ার সাজানো গোছানো জবাব, ‘প্রথমত বলবো এখন ভালোই চলছে সব কিছু। আমার হাতে আছে এক ঝাঁক তরুণের গড়া দল। আমরা সেই সব তরুণদের দিয়ে একটা ভালো দল তৈরি করার চেষ্টায় আছি। দলে বেশ কজন সত্যিকার মেধাবী ক্রিকেটার আছে। আমরা তাদের সুযোগ দিচ্ছি। এবং তারাও ভালোই খেলছে। আমার মনে হয়- দল হিসেবে দাঁড়াতে আরও কিছু সময় লাগবে। আশা করছি কিছু সময় পেলে দলে স্থিতি আসবে।’

নিজ দলের প্রশংসা করলেও দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে না পারায় মন খারাপ তার। তাইতো মুখে এমন কথা, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় নিজ দলের পারফরম্যান্সে আমি সন্তুষ্ট নই। তবে সেটাকে আমি খুব বড় করে দেখতে নারাজ। কারণ দলটা একটা ক্রান্তিকালের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ক্রিকেটারদের একটু সময় দিতে হবে। তবেই তারা নিজেদের মেলে ধরতে পারবে। দলেও স্থিতি ফিরে আসবে।’
 
শ্রীলঙ্কা কবে নাগাদ তাদের সোনালী সময় ফিরে পেতে পারে? এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে জয়সুরিয়া বলে উঠলেন, ‘তা কি আর দিনক্ষণ গুণে বলা যায়? একটা নির্দিষ্ট সময়ের ফ্রেমে তাকে বেঁধে রাখলে চলবে না। আগে ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতা বাড়াতে হবে। আগে আমাদের যেমন অভিজ্ঞতা ছিল। আমার বিশ্বাস- অভিজ্ঞতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সত্যিকার উন্নতিও হবে। শেষ কথা হলো, আমরা ক্রিকেটারদের কেমন সুযোগ করে দিতে পারছি, তারা কত বেশি সময় দলে থাকছে- এগুলো বিবেচ্য। তারপর আপনারা দেখবেন তারা কেমন খেলে?’

এআরবি/এনইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।