মুশফিক একাই লড়বেন, বাকিরা কবে?


প্রকাশিত: ০৩:৪০ পিএম, ০৯ মার্চ ২০১৭

এখনও যদিও অনেক কিছুই ঘটতে পারে। তারপরও বলে দেয়া যায়- বাংলাদেশের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে যাচ্ছে লঙ্কানরা। ম্যাচ বাঁচাতে চার বছর আগের মতো একটি ডাবল সেঞ্চুরি না হলেও একজোড়া শতরান খুব দরকার পড়বে। এখন প্রশ্ন হলো- সেই দরকারি কাজ করবেন কে? একা মুশফিকুর রহীম?
 
অসীম ধৈর্য  মনোযোগ-মনসংযোগের প্রতীক হয়ে শুধু অধিনায়কই একপ্রান্তে লড়াই করবেন? আর বাকিরা নিজের মতো খেলে একটা সময় উইকেট দিয়ে চলে আসবেন? গতকাল শেষ সেশন আর আজকের প্রথম চার ঘণ্টায় সে দৃশ্যই চোখে পড়েছে।

Babuঅধিনায়ক মুশফিক প্রাণপণ লড়লেন। ‘দলের প্রয়োজন। আমাকে কিছু করতেই হবে। দলের বিপদে সব দায়-দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে আমাকেই খেলতে হবে। লম্বা সময় উইকেটে কাটিয়ে দীর্ঘ ইনিংস খেলতেই হবে’- এমন দৃঢ় প্রত্যয় ও সংকল্প দেখা গেছে হায়দরাবাদেও।

আজও সংগ্রামী ব্যাটিংয়ের অনুপম প্রদর্শনী মুশফিকের। হয়তো শতরান করতে পারেননি। ফিরে গেছেন ১৫ রান পেছনে থেকে। তারপরও চেষ্টায় ত্রুটি ছিল না। চার ঘণ্টা ৮ মিনিট ক্রিজে ছিলেন। যে বলে আউট হয়েছেন, ঠিক ওই শটটি ছাড়া মুশফিক ছিলেন দায়িত্ব সচেতনতা, ধৈর্য্য, সংযম আর গভীর মনোযোগের প্রতিমূর্তি।
 
তার সাথে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তরুণ মেহেদী হাসান মিরাজও। এই তো সেদিন হায়দরাবাদে ভারতের সাথে প্রথম ইনিংসে অধিনায়ককে সঙ্গ দেয়া এই তরুণ ধীরে ধীরে ব্যাটিং ব্যর্থতার খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন।
মুশফিকের ইস্পাত দৃঢ়তা আর মিরাজের দাঁতে দাঁত কামড়ে পড়ে থাকার ফসল শুধু ১০৬ রানের পার্টনারশিপই নয়, ফলোঅনের লজ্জা থেকে মুক্তির সনদও।
 
এই জুটি না হলে নির্ঘাত ফলোঅনের মুখে পড়তে হতো। তখন ১৮৪ নয় হয়তো আড়াইশো রানে পিছিয়ে থাকতে হতো।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, মুশফিক যদি বারবার দায়িত্ব নিয়ে খেলে শেষ চার টেস্টে দুটি শতরান (১৫৯, ১৩, ১২৭, ২৩, ৮৫)  উপহার দিতে পারেন, তাহলে তামিম, সৌম্য, মুমিনুল, সাকিব ও মাহমুদউল্লাহরা পারবেন না কেন?
 
তারা নিশ্চয়ই মুশফিকের চেয়ে খারাপ ব্যাটসম্যান নন। শ্রীলঙ্কার কোচ গ্রাহাম ফোর্ড আজ সংবাদ সন্মেলনে কথা বলতে এসে তার দলে তরুণ প্রতিভা কুশল মেন্ডিস সম্পর্কে বলতে গিয়ে সোজা জানিয়ে দিলেন, ‘টেকনিক সব সময় শেষ কথা নয়। টেস্টে ভালো খেলার এবং লম্বা ইনিংস সাজানোর প্রথম ও মূল শর্ত হলো ধৈর্য, মনোযোগ-মনসংযোগ এবং শট নির্বাচন। আমি কোন বল খেলব, কোনটা ছাড়ব আর কোনটাকে মারব-এটাই আসল।’
 
লঙ্কান কোচ যে গুণগুলোর কথা বলেছেন, তার সবগুলো আছে মুশফিকের। বাংলাদেশের বেশির ভাগ ব্যাটসম্যান উইকেটে গিয়ে অযথা ছটফট করে এদিক-ওদিক দিয়ে ব্যাট চালিয়ে খুব জলদি ২০/২৫ রান করে ফেলেন। মুশফিক তা করেন না। ঠাণ্ডা মাথায় পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে উইকেটের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন সব সময়। প্রতি ইনিংসেই। বাকিরা সে চেষ্টা করেন হঠাৎ। হঠাৎ। এটাই পার্থক্য।

বাকিরা যেদিন মুশফিকের ধৈর্য, সংযম আর গভীর মনোযোগ-মনসংযোগ দায়িত্ব সচেতনতার পাশাপাশি সঠিক বল নির্বাচন করে খেলতে পারবেন, কেবল তখনই তামিম, সাকিব ও সৌম্যরা মুশফিকের মতো নির্ভরতার প্রতীক হতে পারবেন।

গলে কি তাদের সে বোধোদয় হবে? পরের ইনিংসে কি মুশফিকের ভূমিকায় আর কাউকে দেখা যাবে? ম্যাচ বাঁচাতে হলে কাউকে না কাউকে এগিয়ে আসতেই হবে। না হয় কাগজে-কলমে শক্তিও সামর্থ্যে পিছিয়ে থাকা হেরাথ বাহিনীর কাছেই হারতে হবে।

এআরবি/এনইউ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।