টেস্টে শ্রীলঙ্কা-বধ সময়ের দাবি


প্রকাশিত: ০৪:১৩ পিএম, ০৬ মার্চ ২০১৭

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথম মুখোমুখি হয় ২০০১ সালে, কলম্বোয় এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে। আত্তাপাত্তু-জয়াবর্ধনে–মুরালিধরনের দাপটে সে ম্যাচে হারলেও ইতিহাসে ঢুকে যান বাংলাদেশের এক নবীন- মোহাম্মদ আশরাফুল। অভিষেকে সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে করেন টেস্ট সেঞ্চুরি।

পরের বছরই প্রথমবারের মতো লঙ্কানদের বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। লঙ্কা সফরে সেবার অরবিন্দ ডি সিলভা, জয়সুরিয়া ও মুরালিধরনের দাপটে বড় ব্যবধানেই হারতে হয় খালেদ মাসুদের দলকে। এরপর লঙ্কায় আরও তিনবার যান টাইগাররা। আর তাতে একমাত্র সফলতা সর্বশেষ গল টেস্টে ড্র।

শুধু লঙ্কায়ই নয়, বাংলাদেশে তারা এসেছে তিন বার। আর তাতেও সফলতা মাত্র একটি। ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম টেস্ট ড্র করতে পেরেছিলেন মুশফিকরা। সর্বশেষ গল টেস্টে ড্র। মোট ১৬ টেস্টে মাত্র দুটি ড্র-ই বাংলাদেশের অর্জন।

তবে ২০০১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে অনেক বদলে গেছে বাংলাদেশ। তেমনি বদলে গেছে শ্রীলঙ্কাও। পার্থক্যটা মানের দিক থেকে বাংলাদেশের গ্রাফটা ঊর্ধ্বগামী হলেও নিজেদের উন্নতির ধারাটা ধরে রাখতে পারেনি লঙ্কানরা।

দলের অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের হারিয়ে লঙ্কানদের সেই শক্তি আজ অনেকটাই অনুপস্থিত। এক সাঙ্গাকারাই বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৫ টেস্টে করেছেন ১৮১৬ রান। ১৩ টেস্টে জয়াবর্ধনে ১১৪৬ এবং ১১ টেস্টে দিলশানের রান ১০০৮ রান।
 
বাংলাদেশের জন্য খুশির খবর- এ তিন স্তম্ভ অনেক আগেই অবসর নিয়েছেন। তাদের অবসরের পর দলটিতে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান বলতে আছেন এক দিনেশ চান্দিমাল। নেই নিয়মিত অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজও।

আর বল হাতে লঙ্কান কিংবদন্তী মুরালিধরনের প্রিয় প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিপক্ষে মাত্র ১১ টেস্ট খেলেই নিয়েছেন ৮৯টি উইকেট। সেই মুরালিধরন অনেক আগেই অবসর নিয়েছেন দল থেকে। নেই ফার্নান্দো, মালিঙ্গা আর ভাসও। বল হাতে নেতৃত্ব দেবেন প্রায় ৩৯ বছরের বুড়ো রঙ্গনা হেরাথ, যিনি এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৬ টেস্টে নিয়েছেন ২৫ উইকেট।
 
অপরদিকে তামিম, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকের বাংলাদেশ যথেষ্ট অভিজ্ঞ লঙ্কানদের থেকে। বোলিংয়ে কিছুটা নবীন হলেও সাকিব, মোস্তাফিজ, তাসকিন, তাইজুলদের নিয়ে টাইগারদের বোলিং লাইন-আপ তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী।
Vision
তবে ঘরের মাঠে সবসময় কঠিন প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪ টেস্টে ৩টিতে সেঞ্চুরি পাওয়া দিনেশ চান্দিমালও ফর্ম ফিরে পেয়েছেন। আর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন টেস্টে ৩০৯ রান করা উপুল থারাঙ্গাও ভয়ঙ্কর হতে পারেন। তাছাড়া বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে হরহামেশা খেলা এ ক্রিকেটার খুব ভালো করেই জানেন টাইগারদের শক্তি। ভোগাতে পারেন কুশল মেন্ডিস, দিলরুয়ান পেরেরা, আসলে গুনারত্নে কিংবা লাকশান সান্দাকানরাও। কারণ বাংলাদেশকে পেলেই লঙ্কান তরুণরা যেন নিজেদের ‘শচীন টেন্ডুলকার’ ভাবতে শুরু করেন।

তব সর্বশেষ দুই বছরে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ফলাফলও যথেষ্ট ভালো। জয় না পেলেও কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তাদের মাঠে দারুণ লড়াই করছে তারা। আর ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের অতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়। সে তুলনায় অনেক পিছিয়ে লঙ্কানরা। সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে তিন টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়।

তাই সব দিক মিলিয়ে এবারই লঙ্কানদের বিপক্ষে টেস্ট জিতে নেওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগটা এবারই পাচ্ছে বাংলাদেশ। নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে এ ভাবনা অবান্তরও নয়। প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কান ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্বলতম দল। আর সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ পারফরম্যান্স করা দলটি এখন পরিণত। তাই টেস্টে শ্রীলঙ্কা বধ এখন সময়ের দাবি টাইগারদের।

আরটি/এনইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।