মুশফিকের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানালেন আকরাম-ইমরান


প্রকাশিত: ০২:২৪ পিএম, ০২ মার্চ ২০১৭

ব্যাটিং, কিপিং আর ক্যাপ্টেন্সি- তিন তিনটি গুরু দায়িত্ব একসঙ্গে পালন করা যে কারও জন্যই কঠিন; কিন্তু  গত ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১১ থেকে সে কঠিন কাজটিই একসঙ্গে করেছেন মুশফিকুর রহীম।

অবশেষে এবার কিপিং ছেড়ে টেস্টে পুরো দস্তুর ব্যাটসম্যান বাংলাদেশের সাদা জার্সির অধিনায়ক। তার এ সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক কথা। পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি-ব্যাখা। পর্যালোচনা। বড় অংশ মুশফিকের কিপিং ছাড়াকে সমর্থন জানিয়েছে।

তাদের কথা, একসঙ্গে ওই তিন দায়িত্ব পালন করা সত্যিই কঠিন ছিল। তাতে করে মুশফিকের ওপর বাড়তি চাপ পড়ছিল। ব্যাটিং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। অধিনায়কত্বের ওপরও একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়তো। এখন মুশফিক অনেকটাই চাপমুক্ত।

আবার অন্য মতও আছে। আরেক পক্ষের কথা, মুশফিক এমনিতেই নরম স্বভাবের। ব্যাটিংয়ের সময় অনমনীয় দৃঢ়তা দেখালেও ব্যক্তিগত জীবনে কিছুটা আবেগপ্রবণ। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি কিপিংও তার অনেক পছন্দের। ভালোলাগার। তিনি ওই দুটাই উপভোগ করেন।

শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগেও বলে গেছেন, টিম ম্যানেজমেন্ট চাইলে কিপিং করবো না। তবে আমি ব্যাটিং-কিপিং একসঙ্গে চালিয়ে যেতে আগ্রহী। তাই কারও কারও সংশয়-সন্দেহ পছন্দের কিপিং ছেড়ে দিলে আবার কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াও হতে পারে।  

তবে পূর্বসূরি আকরাম খান মুশফিকের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। বিসিবি ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি চেয়ারম্যানের মূল্যায়ন, ক্রিকেটীয় যুক্তি ও ব্যাখ্যায় মুশফিকের এ সিদ্ধান্ত সঠিক, বুদ্ধিদীপ্ত ও সময়োচিত।

জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক জাগো নিউজের সাথে আলাপে জানান, ‘মুশফিক সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। আমার মনে হয় তার কিপিং না করাই ভালো। কারণ এক সঙ্গে তিনটি গুরু দায়িত্ব পালন মোটেই সহজ কাজ ছিল না। তাতে করে ব্যাটিং ও কিপিং দুটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দীর্ঘ সময় কিপিং করার পর আবার ব্যাটিং করা শারীরিক ঝক্কি-ঝামেলার বিষয়। পাশাপাশি মনোযোগ-মনোসংযোগের ওপরও বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতো। কিপিং ছেড়ে দেয়ায় সে চাপ আর থাকবে না। একদম চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারবে মুশফিক। এখন ব্যাটিং ও ক্যাপ্টেন্সি-দুই ক্ষেত্রেই বাড়তি মনোযোগ-মনোসংযোগ দিতে পারবে। আমার মনে হয় তার ব্যাটিংটা আরও ভাল হবে।’

আকরাম খানের মত এত ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে বলেননি। তবে কোচ সরোয়ার ইমরানের মত, মুশফিক একদম মন থেকে কিপিং করতে না চাইলে সমস্যা নেই; কিন্তু যদি সে চাপের মুখে বা পিড়াপিড়িতে কিপিং না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, তাহলে উল্টো প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে।’
Vision
এছাড়া কোচ সারোয়ার ইমরান মনে করেন, ‘মুশফিকের কিপিং না করার প্রভাব পড়বে টিম কম্বিনেশনেও। এখন টিম ম্যানেজমেন্ট নিশ্চয়ই তা ভেবে চিন্তেই স্থির করবে।’

তবে ইমরান অকপটে স্বীকার করেছেন, মুশফিক টেস্টে আমাদের এক নম্বর ব্যাটসম্যান। ব্যাটিং ও কিপিং একত্রে করায় এতকাল সে অর্থে বিশ্রাম মেলেনি। ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে দীর্ঘ সময় কিপিং করার পর তার পর্যাপ্ত বিশ্রাম দরকার ছিল। যে কারণে সে তেমন ওপরে মানে চার নম্বরে নামতেও পারতো না।

আর কথাটা শুনতে ভাল না লাগলেও সত্যে, বেশিরভাগ সময় টেস্টে আমাদের দুই উইকেটের পতন খুব তাড়াতাড়িই হয়ে যায়। তাই পর্যাপ্ত বিশ্রামের ফুরসতও মেলে না। এখন কিপিং না করায় আর তার বিশ্রামের প্রয়োজন পড়বে না। মুশফিক চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামতে পারবে। তাতে পুরোপুরি ফ্রেশ এবং ফ্রি হয়ে ব্যাট করতে পারবে।

এআরবি/আইএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।