শেরেবাংলার আউট ফিল্ডের ওপর ৬ ইঞ্চি স্তর নতুন হচ্ছে


প্রকাশিত: ০৪:১২ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আজ সকালেও শ্রীলঙ্কাগামী টেস্ট দলের ফিল্ডিং ও ক্যাচিং প্র্যাকটিস হলো শেরেবাংলার ভেতরেই। পুরো মাঠ জুড়ে নয়। কিন্তু একটা সীমিত জায়গার ভেতরে। শেরেবাংলার পুরো আউট ফিল্ডে এখন ক্যাচিং প্র্যাকটিস কেন, কোনো কিছুই করা সম্ভব নয়।
 
কেউ হঠাৎ শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ভেতরে ঢুকলে একটু অবাকই হবেন? দেখবেন, মাঠের চার ভাগের প্রায় অর্ধেক অংশে ঘাস নেই। মাঠের প্রায় ৬০% জায়গা ন্যাড়া। শুধু ঘাসহীনই নয়, মাটির অনেকখানি কেটে ফেলা। মাঠের এখানে-ওখানে মাটির ঢিবির মতো উঁচু। কোথাও মাটি কাটার মেশিনে ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে। আবার পিচের ওপর ভারি রোলার চালানো হচ্ছে।
 
মোদ্দা কথা, শেরেবাংলার আউট ফিল্ডের পরিচর্যার কাজ চলছে পুরোদমে। আসলে কি কাজ হচ্ছে? হঠাৎ কেন ও কি কারণে এই পরিচর্যা? তবে কি শেরেবাংলার আউট ফিল্ডে বড় ধরনের কোনো সমস্যা দেখা দিয়েছে? শেরেবাংলার মূল বৈশিষ্ট্য যে ড্রেনেজ সিস্টে, তা কি ভেঙ্গে পড়েছে? কিংবা সেখানে কি কোনো সমস্যা দেখা দিয়েছে?
 
আউটফিল্ডের ঘাসে কি আগাছা বেশি জন্মেছে? পিচে কোন সমস্যা? ওপরে কিংবা নিচের স্তরে বালুর পরিমাণ বেড়ে গেছে? গত ক’দিন যারা শেরেবাংলার স্টেডিয়ামের ভেতরে গেছেন, তাদের সবার মনেই এ প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। জাগো নিউজের পক্ষ থেকে ওপরের প্রশ্নগুলোই করা হয়েছিল বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির ম্যানেজার সৈয়দ আব্দুল বাতেনকে।
 
তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, ‘বড় ধরনের সংস্কার বা পরিচর্যার কাজ নয়। পিচেরও তেমন বড় সমস্যা হয়নি। মাঠ ও পিচের ওপরের স্তরটা ঠিক করা হচ্ছে শুধু।’
 
বিসিবি গ্রাউন্ডস কমিটির ম্যানেজার জানান, অতিমাত্রায় খেলা হওয়ার কারণে এবং বেশ ক’বছর পরিচর্যা না হওয়ায় শেরেবাংলার আউট ফিল্ডের ওপরের স্তরে বালুর আবরণ পড়ে গেছে। মোটা দাগে বলতে গেলে বলতে হয়, বছরের বেশির ভাগ সময় খেলা ও প্র্যাকটিসে মাঠ ব্যবহৃত হয় অনেক বেশি। বিশ্রাম মেলে কম। সব মিলে ওপরের স্তরটা কেমন যেন হয়ে গেছে। তাই মাঠ সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
 
বাতেনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মাঠের কি ধরনের সংস্কার দরকার? তা নির্ধারণ করতে এক অস্ট্রেলিয়ান বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়েছেন তারা। গত জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখে কিথ অকোফ নামের ওই অস্ট্রেলিয়ান বিশেষজ্ঞ ঢাকা আসেন। এবং শেরেবাংলার মাঠ খুটিয়ে দেখে একটি রিপোর্ট দিয়ে যান। সেই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে মাঠের সংস্কার কাজে হাত দেয়া হয়েছে।
 
বিসিবি গ্রাউন্স কমিটি ম্যানেজার আরও জানান, পুরো মাঠের নির্মাণ শৈলি ও ড্রেনেজ সিস্টেমে হাত দেয়া হবে না। আউট ফিল্ডের ওপরের স্তরের ৬ ইঞ্চি পরিমাণ মাটি কেটে নতুন মাটি ফেলা হচ্ছে। তাতে করে ওপরের স্তরে চেপে বসা বালু সরে যাবে। মাঠ আরও সজীব সতেজ হয়ে উঠবে।
 
ইতোমধ্যেই প্রায় অর্ধেক আউট ফিল্ড থেকে ওপরের ছয় ইঞ্চি পরিমাণ মাটি কেটে ফেলা হয়েছে। আরও প্রায় দু’মাস সময় লাগবে পুরো মাঠের ওপরের স্তরের মাটি ওপড়ে নতুন মাটি ফেলা এবং মান সমান করতে। তারপর ঘাস রোপণ পর্ব শুরু হবে। ঘাস আনা হবে ভারত থেকে। কোলকাতার ইডেন গার্ডেনে যে মিহি দুর্বা লাগানো আছে, সেই দুর্বাই হয়তো বসানো হবে শেরেবাংলায়।  

এদিকে আউট ফিল্ডের পাশাপাশি পিচের ওপরের স্তরের মাটিও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সেই মাটি সরানোর কাজ শেষ। এখন নতুন মাটি দিয়ে রোলিং চলছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, শেরেবাংলার পিচের ওপরের স্তরে কালো কাঁদা মাটির (ক্লে) ব্যবহার করা হয়েছে।
 
বাতেন জানান, শেরেবাংলার পিচের ওপরের স্তরের দেড় থেকে আড়াই ইঞ্চি পরিমাণ মাটি উপড়ে ফেলে নতুন মাটি ফেলা হয়েছে। এবারও সেই কালো কাঁদা মাটির স্তর নতুন করে বসানো হয়েছে। যে কেউ এখন শেরেবাংলায় ঢুকলেই দেখবেন পিচের রং কালো।

তবে এই কালো রূপ শেষ পর্যন্ত থাকবে না। কারণ ওপরের দেড় থেকে আড়াই ইঞ্চি কালো কাঁদা মাটির ওপর পানি দিয়ে রোলিং করা হবে। এর ওপরে আবার ঘাস বপণ করা হবে। ক্রমাগত রোলিং এবং ঘাস গজিয়ে ওঠার পর আবার পানি দিয়ে নিয়মিত ভারি ও হালকা রোলারের ব্যবহারের পিচের বর্তমান কালো রূপ আর থাকবে না।

এআরবি/এনইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।