সাকিবের পারফরম্যান্সে খুশি মুশফিক
নিউজিল্যান্ড সফরেই সাকিব আল হাসান আভাস দিয়েছিলেন, দারুণ ছন্দেই আছেন। ওয়েলিংটন টেস্টে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেছিলেন। তুলে নিয়েছিলেন ডাবল সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসটাও এখন তারই দখলে, ২১৭ রানের। ৪১৮ মিনিট ক্রিজে থেকে ২৭৬ বলে ৩১টি চারের সাহায্যে সাজান অনবদ্য ইনিংসটি।
পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা সাকিব অব্যাহত রেখেছেন ভারত সফরেও। প্রথম ইনিংসে ৮২ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস খেলেছেন। যদিও ভারতীয় বোলারদের কড়া শাসন করেও শেষটা ভালো হয়নি। অর্থাৎ সেঞ্চুরি তুলে নিতে পারেননি। বিদায় নিয়েছেন প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দেয়া এক শটে। যা তার নামের সঙ্গে যায় না। ভালো খেললেও তাই সমালোচনা শুনতে হয়েছে সাকিবকে।
তার আগে প্রথম ইনিংসে সাকিব বল হাতে ছিলেন অনেকটা নিষ্প্রভ। ২৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে কোনো উইকেটের দেখা পাননি। খরচ করেছেন ১০৪ রান। মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম কিছু উজ্জ্বল ছিলেন সাকিবের চেয়ে। তাইজুল নেন ৩ উইকেট; আর মিরাজের পকেটে ওঠে দুটি।
দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য সাকিবই বাংলাদেশের পক্ষে সেরা বোলিংটা করেছেন। ৯ ওভারে ৫০ রান দিয়ে ঝুড়িতে জমা করেছেন দুই উইকেট। ইকোনোমি রেট ৫.৫৫। আর তাসকিন আহমেদও দুই উইকেট লাভ করেন। তবে ওভার প্রতি বেশি রান দিয়েছেন। বাংলাদেশি পেসার ৭ ওভারে ৪৩ রান খরচ করেছেন। যার ইকোনোমি রেট ৬.১৪।
এদিকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা সাকিবের কাছে আরো বেশি প্রত্যাশা ছিল; এটা বলা বাহুল্য। সাকিব ক্রিজে থাকায় প্রতিপক্ষ আতঙ্কে ছিল। কিন্তু রবীন্দ্র জাদেজার লাফিয়ে ওঠা এক বলই সাকিবের পথচলা থামিয়ে দেয় ২২ রানে। এরপর হয়তো আশাহত হয়ে পড়ে বাংলাদেশ!
সব মিলে গোটা টেস্ট ম্যাচেই আলোচনায় সাকিব। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকুর রহীমকে সাকিবের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করতে বললে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জানান, সাকিবের পারফরম্যান্সে তিনি খুশি। বলেন, ‘আমরা চাই সাকিব এমন বোলিং করবে যাতে করে একটা ব্রেক থ্রু এনে দিতে পারে। বাকি কাজগুলো দলে অন্যরা যারা আছে তাদের। এটা তিনটা স্পিনার খেলানোর একটা কারণ। সাকিবের পারফরম্যান্সে কাজে আমি খুশি। সেকেন্ড ইনিংসে যখন তার হাতে বল দিয়েছি, তখনো সে ভালো বোলিং করেছে।’
তবে প্রথম ইনিংসে সাকিবকে দিয়ে কেন কম ওভার করানো হলো; তা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন। এর জবাবে মুশফিক বলেন, সাকিবের বোলিং নিয়ে আমি বলতে পারি, প্রথম ইনিংসে আমাদের তিনজন স্পিনার সামনে থেকে লিড দিয়েছে। আমার এবং টিম ম্যানেজম্যান্টের মনে হয়েছে তাইজুল ও মিরাজ তাদের কাজটা ঠিকমতো করতে পেরেছে। তাই আমাদের তাদের ওপরই আস্থা রেখেছিলাম। এটা আসলে নির্ভর করে নির্দিষ্ট দিনে কে ভালো করছে তার ওপর। আমার ওই দুইদিন মনে হয়েছে তাইজুল ও মিরাজের জুটিটা ভালো হচ্ছিল। আমরা চাই যে সাকিব যতটুকু বোলিং করতে সেটা যেন দলের কাজে লাগে। সাকিব সেই অবস্থায় নেই তাকে দিয়ে লং স্পেল বোলিং করাতে হবে।’
ব্যাটিং নিয়ে খুব একটা হতাশা আছে সমর্থকদের মাঝে। মুশফিক বললেন ভিন্ন কথা, ‘যে কন্ডিশনেই খেলেন না কেন, আপনাকে সেভাবে প্রস্তুত হতে হবে। টেস্টে বড় ইনিংস খেলতে হলে একজন ব্যাটসম্যানকে অবশ্যই তার অফস্ট্যাম্প কোথায় সেটা জানতে হবে। এবং আপনার ডিফেন্সটা অনেক শক্তিশালী থাকতে হবে। এই দুইটা জিনিস থাকলে বড় রান করা পসিবল। আমি যত দূর জানি এই দুইটা জিনিস অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি এই দুইটা বিষয়ের ওপর সব সময় মনোযোগ দিয়ে থাকি। আল্লাহর রহমতে সেটা করতে পেরেছি। একটু হলেও ভালো লেগেছে।’
আইএইচএস/এনইউ/জেআইএম