উইকেটে পানি দেয়া নিয়ে হাথুরুসিংহের ‘নো কমেন্টস’


প্রকাশিত: ০১:৫৪ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৭

পাহাড়-সমুদ্র আর সবুজ গাছপালার দেশ নিউজিল্যান্ড। মানুষের আচার-আচরণ, কথাবার্তাও বেশ ভালো। লোকজন নিপাট ভদ্র। সৌজন্যতাবোধ-নম্রতা ও বিনয়ও যথেষ্ট। কিউই ক্রিকেটাররাও যথেষ্ট ভদ্র। বিনয়ীও।

তবে বিস্ময়কর হলো বাংলাদেশকে ওয়েলিংটন টেস্টে হারাতে নিজেদের সঙ্গে খাপ খায় না। এমন এক আচরণ করেছে কিউরা, যা রীতিমত শিষ্টাচার ও নিয়মবহির্ভূত। কি সেই আচরণ? তাহলে শুনুন- একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর, চতুর্থ দিন খেলা শেষে যে উইকেটে টেস্ট চলছিল, তার ঠিক পাশের দুই উইকেটে পানি দেয়া হয়েছে, যা ক্রিকেটীয় নিয়মনীতিবহির্ভূত। কোনোভাবেই টেস্ট চলাকালীন মূল উইকেট তো প্রশ্নই আসে না, তার আশপাশের উইকেটেও পানি দেয়ার নিয়ম নেই।

কিন্তু একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর, চতুর্থ দিন সেই ক্রিকেটীয় নিয়ম-কানুন পরিপন্থী কাজই করেছেন বেসিন রিজার্ভের কিউরেটর। বাংলাদেশের একটি বাংলা দৈনিকে আজ সে সম্পর্কে বিস্তারিত খবর প্রকাশিতও হয়েছে।

Babu-Vaiপ্রতিবেদনে প্রায় পরিষ্কার উল্লেখ আছে, কিউরেটরের চতুর্থদিন উইকেটে পানি দেয়ার দৃশ্যটা পর্যন্ত বাংলাদেশ কোচ হাথুরুসিংহের মোবাইলে ছবি তোলা আছে। এমন সংবাদ প্রকাশের পর খুব স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ থেকে নিউজিল্যান্ড যাওয়া সাংবাদিকদের মধ্যে একটা অন্যরকম প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

তারা এ বিষয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট, বিশেষ করে বাংলাদেশ দলের হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের মনোভাব ও বক্তব্য কী? তা জানতে আজ স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় বাংলাদেশের টিম হোটেলে ছুটে যান কয়েজন সিনিয়র সাংবাদিক; কিন্তু সে আশার গুড়েবালি।

টিম ম্যানেজমেন্টের কেউ এ সম্পর্কে মুখ খুলতে রাজি হননি। বাংলাদেশের সাংবাদিকরা চেয়েছিলেন এ বিষয়ে কোচ হাথুরুসিংহের প্রতিক্রিয়া জানতে; কিন্তু তিনি আজ মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম জানান, আগামীকাল দ্বিতীয় টেস্ট নিয়ে কথা বলবেন কোচ হাথুরু। তখন তার কাছেই জানতে চাইতে পারেন আপনারা। পরে নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় সময় রাত ৮টার দিকে ডিনারের উদ্দেশ্যে হোটেল রুম থেকে অন্য সব কোচিং স্টাফ কোর্টনি ওয়ালশ, রিচার্ড হ্যালসল, থিলান সামারাভিরা ও ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়নের সাথে নিচে নেমে আসলে কোচ হাথুরুর কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘আচ্চা কোচ বেসিন রিজার্ভে টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে ক্রিকেটীয় নিয়মনীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে যে পানি দেয়া হলো সে বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি?   

হাথুরুর সাফ জবাব, ‘নো কমেন্টস’। একইভাবে বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম উইকেটে পানি ঢেলে দেয়ার বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলতে পারেননি। তার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া হলো- ‘আচ্ছা আজ বাংলাদেশের একটি বাংলা জাতীয় দৈনিকে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, ওয়েলিংটন টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে বেসিন রিজার্ভের কিউরেটর মূল উইকেটে দুটি পাশের উইকেটে পানি দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট তথা আপনার বা ম্যানেজার সাব্বির খানের বক্তব্য কি?

braverdrink

এ স্পর্শকাতর ও শতভাগ আইনবিরোধী ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিসিবি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিবাদ জানাবে কি না? কিংবা আইসিসি, নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড এবং ম্যাচ রেফারি জাভাগাল শ্রীনাথের কাছে আদৌ কোনোরকম অভিযোগ পেশ করে জানিয়েছে কি না? নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের কাছে কোনো রকম অভিযোগ পেশ করা হয়েছে কি না?

এসব প্রশ্ন শুনেও নির্বিকার রাবিদ ইমাম। তার মূল কথা হলো, এ ইস্যুতে আমি বা আমরা কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেইনি। তবে রাবিদ আরও জানান, দেশের বাইরে কোনো ঘটনা ঘটলে কিংবা কোনো স্পর্শকাতর ইস্যু নিয়ে কোনোরকম নেতিবাচক পরিস্থিতির উদ্রেক ঘটলে আমরা সরাসরি বোর্ড প্রধান ও বিসিবির সাথে যোগাযোগ রাখি। সফরে থাকাকালীন আমাদের যেকোনো ইস্যুতে কোনো কিছু হলে বোর্ডের দৃষ্টিতে আনতে হয়, তাহলে আমরা যথাযথ প্রক্রিয়ায় জানিয়ে দেই। কোনো বিষয়ে রিপোর্ট হয়ে থাকলে দেখতে হবে। এ মুহূর্তে বিবৃতি দেয়ার মতো অবস্থা নেই।’

এরপর প্রশ্ন উঠল, তাহলে পত্রিকায় যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তা সঠিক কি না? রাবিদের জবাব, ‘রিপোর্টের খবর আমরা আগে জানতাম না। এখন আপনাদের কাছ থেকে শুনলাম। রিপোর্ট পত্রিকায় আসছে বললেন, আমরা আগে দেখে নেই। কি ঘটনা ঘটেছে? সেটাই তো আমরা জানি না। আপনারা বলছেন, চতুর্থ দিন শেষে কিউরেটর চতুর্থ উইকেটে পানি দিয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা কোন মন্তব্য করবো না।’

একবার এমন কথা বললেও পরক্ষণে রাবিদের শেষ কথা, পত্রিকার রিপোর্ট আজকে এসেছে। আমরা আগে পড়ে জেনে নেই। রাবিদ যে বিষয়টি পাশ কাটিয়ে গেলেন, তা বোঝা গেল পরক্ষণেই। তাই তো তার মুখে এমন সংলাপ, শুধু চতুর্থ দিনের কোনো ইস্যু কিংবা ঘটনার কারণে নয় আমাদের বোর্ডের সাথে, আইসিসির লোকজন এবং নিউজিল্যান্ড বোর্ডের সাথেও যোগাযোগ আছে। এ ব্যাপারে আমরা কোনো মন্তব্য করবো না। এমনিতে যেকোনো ইস্যুতে আমাদের বোর্ডের পরামর্শ বা যোগাযোগের প্রয়োজন পড়লে আমরা যোগাযোগ করি।

এআরবি/আইএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।