ইভেন্ট কমানো হয়েছে এশিয়ান গেমসে
এশিয়ান গেমসে ইভেন্ট কমিয়ে আনা হয়েছে। ২১টির জায়গায় এবার কোরিয়ায় ১৭তম গেমসে বাংলাদেশ ১২টি ইভেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। অর্থাৎ ৯ ইভেন্ট বাদ দেওয়া হয়েছে। কমনওয়েলথ গেমসে বিশাল বহর পাঠিয়ে শুধু শুটিংয়ে একটি রুপা এসেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়ার ক্ষুব্ধ হওয়াটাই স্বাভাবিক। কেননা স্কটল্যান্ডে যেতে অঢেল অর্থ খরচ হয়েছে। এ সিদ্ধান্তে বিওএ-প্রধান প্রশংসিত হচ্ছেন।
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, হঠাৎ করে এতগুলো ইভেন্ট কমানো হলো কেন? বিশেষ করে গেমসের মূল আকর্ষণ অ্যাথলেটিকস ও সাঁতারকে বাদ দেওয়াটা অনেকে ভালো দৃষ্টিতে দেখছেন না। পদক জেতার কিঞ্চিৎ সম্ভাবনা নেই তার পরও জনপ্রিয়তার কথা চিন্তা করে ফুটবল ও হকিকে ঠিকই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে অ্যাথলেট ও সাঁতারুরা দোষ করলেন কী? অনেক ক্রীড়াবিদ আক্ষেপের সুরে বলেছেনম স্বপ্ন ছিল দেশের হয়ে এশিয়ান গেমসে প্রতিনিধিত্ব করব। বাদ দেওয়ায় এখন কোন উৎসাহে খেলা চালিয়ে যাব?
একজন খেলোয়াড়ের নিশ্চয়ই লক্ষ্য থাকে না শুধু লোকাল আসরে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা। মূল স্বপ্ন থাকে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে বড় বড় গেমসে অংশ নেওয়া।বহর ছোট করার পেছনে মূল কারণ কিন্তু দেখানো হচ্ছে ক্রীড়াবিদদের ব্যর্থতা। স্বাধীনতার পর যদি সাফল্যের কথা বলি শুটিং ও ক্রিকেটের নামই উচ্চারিত হবে। কেননা কমনওয়েলথ ও এশিয়ান গেমসে এ দুটো ইভেন্ট থেকে বাংলাদেশ স্বর্ণ ও রুপা জিতেছে। কাবাডিও রুপা পেয়েছে কিন্তু বাস্তবে তাদের আরও ভালো করা উচিত ছিল। কথা উঠেছে ক্রীড়াবিদরা ব্যর্থ হলেই কি শুধু অর্থের অপচয় হয়?
বিওএ কি নয়টি ইভেন্ট বাদ দেওয়ার আগে তা গভীরভাবে চিন্তা করে দেখেছে? কী দেখেছে বা বিবেচনা করেছে বলা মুশকিল। কিন্তু অর্থ অপচয়ের মূল কারণ কিন্তু গেমসে অযথা ডেলিগেটের সংখ্যা বাড়ানো। ১৯৭৮ সাল থেকেই তো মূলত বিদেশে গেমসে যাওয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ। গ্লাসগো কমনওয়েলথ পর্যন্ত যদি সফরসঙ্গীর হিসাব মেলানো হয় তাহলে প্রয়োজনীয় তুলনায় প্রতিনিধির সংখ্যা বেশি হবে। হয়তো কোনো কোনো ক্ষেত্রে কম-বেশি হতে পারে। প্রশ্ন উঠেছে, ইভেন্ট যখন কমানো হলো তখন প্রয়োজন ছাড়া সরকারি খরচায় কর্মকর্তারা যাচ্ছেন সে প্রসঙ্গটি উঠল না কেন? শুধু কর্মকর্তা হলে না হয় চলত। এখানে তো স্ত্রী, ছেলেমেয়েদেরও সফরসঙ্গী করা হচ্ছে। এবার কমনওয়েলথ গেমসে কী হয়েছে। খেলোয়াড়দের কষ্টটা এখানে আমরা ব্যর্থ এটা আমরা মেনে নিলাম। কিন্তু অর্থের অপচয়ের মূল খাত কী, তা তলিয়ে দেখা হচ্ছে না।
কেউ কেউ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন আমাদের বলির পাঁঠা বানানো হলো। অথচ যারা বিতর্কের মূল হোতা তারাই বেঁচে যাচ্ছেন। বিওএ-প্রধানের নির্দেশেই মূলত ইভেন্ট কমানো হয়েছে। এখন আবার অনেকে বলছেন প্রয়োজন ছাড়া কারা কারা গ্লাসগোয় সফরসঙ্গী হয়েছেন তা তদন্ত করা। প্রশ্ন উঠেছে, ইভেন্ট কমালেও এশিয়ান গেমসে প্রতিনিধির সংখ্যা কমবে কি? কেননা বিওএ আবার অতীতে কৌশল খাটিয়ে গোপনে বেশ কজনকে গেমসে নিয়ে গেছে। এবার যে হবে না তা কি নিশ্চিত করে বলা যাবে?