‘নিউজিল্যান্ডের পেসারদেরও একদিন অভিষেক হয়েছিল’


প্রকাশিত: ০৯:৩২ এএম, ১০ জানুয়ারি ২০১৭

বেসিন রিজার্ভের সঙ্গে একদম লাগোয়া প্র্যাকটিস কমপ্লেক্স। পাশাপাশি পাঁচটি নেট। সবুজ ঘাষে আচ্ছাদিত দ্রুত গতির, শক্ত ও বাউন্সি ট্র্যাক। তার এক নম্বর পিচে টানা বেশ খানিক্ষণ বল করলেন তাসকিন আহমেদ। বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের অফস্টাম্পের আশে পাশে একটানা বেশ কিছুক্ষণ বল করে গেলেন। লাইন ও লেন্থ ছিল চমৎকার। অফস্টাস্পের বাইরে বেশ কবার ব্যাটসম্যান পরাস্ত হলেন তার পেস ও সুইংয়ে। উজ্জবিত তাসকিনের হাত থেকে বেশ কিছু এক্সপ্রেস ডেলিভারিও বের হলো।

Babuকোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে তা পাখির চোখে পরখ করলেন। ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি চেয়ারম্যান জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান আর প্রধান নির্বাচক এবং আরেক সাবেবক জাতীয় অধিনায়ক মিনহাজুল আবেদিনও নেটের পাশে দাঁড়িয়ে তা দেখলেন। সবার আশা, একদম আদর্শ কন্ডিশনে অভিষেক হতে যাচ্ছে তাসকিনের।

পিচে ঘাস প্রচুর। গ্রীষ্মকাল। পিচ শক্তও বেশ। বাউন্সও বেশি থাকবে। সব মিলে একজন দ্রুত গতির বোলারের অভিষেকের অনুকূল ক্ষেত্র। তা নয় মানা গেল।

কিন্তু কঠিন সত্য হলো বেসিন রিজার্ভের পিচ যতই ফাষ্ট বোলার ফ্রেন্ডলি হোক না কেন, তাসকিন কি সেখানে নিজেকে মেলে ধরতে পারবেন ? তারতো দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটের সঙ্গেই যোগাযোগ অনেক কম। সব মিলে সাকুল্যে মাত্র ১০ টা প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন। এত কম ম্যাচের অভিজ্ঞতা নিয়ে টেস্ট অভিষেক, তাও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ব্ল্যাক ক্যাপ্সদের বিরুদ্ধে। যারা নিজেদের মাটিতে যারপরনাই শক্তিশালী।  এত স্বল্প অভিজ্ঞতা নিয়ে তাসকিন কতটা কুলিয়ে উঠতে পারবেন?

এ প্রশ্ন অনেকের মনেই উঁকি দিচ্ছে। কিন্তু তাসকিন ভয় ডরহীন। প্রেস মিটে এমন প্রশ্ন উঠতেই তাসকিনের আত্মবিশ্বাসী উচ্চারণ, হ্যাঁ আমি মোটে ১০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার স্বল্প অভিজ্ঞতা নিয়ে টেস্টে মাঠে নামার অপেক্ষায় উন্মুখ। অভিজ্ঞতার আলোকে হয়তো সেটা বেশ কম। তবে এখন আর তা নিয়ে ভাবি না। আমি নিজের সেরাটা উপহার দিতে চাই। এখানে এই কন্ডিশনে অভিষেক হলে আরো ভালো লাগবে। আমি নিজেকে তৈরির চেষ্টা করেছি। নেটে ১৫ /২০ ওভার বলও করেছি। এখানে বাতাস আছে। হয়তো বাতাস থাকবেও। সম্পূর্ণই অনভ্যস্ত ও প্রতিকূল কন্ডিশন। বাতাসে প্লাস ও মাইনাস দুটাই আছে। ইনশাল্লাহ আমরা যদি ভালো করতে পারি, তাহলে তাদেরও সমস্যা হবে।’

কিন্তু আপনারা তো কিউই ফাস্ট বোলারদের চেয়ে অভিজ্ঞতায় অনেক পিছিয়ে। হ্যাঁ নিউজিল্যান্ডের পেসাররা অনেক অভিজ্ঞ। তাদের তুলনায় আমাদের অভিজ্ঞতা বেশ কম। এ কথা বলার পর তাসকিনের মুখ থেকে একটি অন্যরকম কথা বেড়িয়ে এসেছে। যা তার ভিতরের চিন্তার গভীরতা নির্দেশ করছে।

braverdrink

তাসকিন একটা প্রসঙ্গের অবতারণা ঘটিয়েছেন। তার অনুভব, তিনি একা নন। সবাইতো একটা সময় অভিজ্ঞতায় পিছিয়েই থাকে। কেউ আর আগে থেকে হাত পাকিয়ে আসেন না। সবাই দেখে খেলেই অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করেন। বিশ্বের সব বোলার বা ক্রিকেটারেরই একদিন না একদিন অভিষেক হয়। তার আগে সবাই কম বেশি অনভিজ্ঞ থাকে।

তাইতো মুখে এমন কথা,  `এই কিউই পেসারদের সবার একদিন অভিষেক হয়েছে। তারাও একদিন অনভিজ্ঞ অবস্থায়ই শুরু করেছিলেন। এখন আর ওসব নিয়ে ভাবলে চলবেনা। ভাবতে চাইওনা। মানছি আমরা অভিজ্ঞ নই। অনভিজ্ঞ। তবে আনাড়ি নই। আমাদেরও সামর্থ্য আছে। আমাদের কোচিং স্টাফরাও অনেক সাহায্য করছেন। প্রয়োজনীয় বুদ্ধি পরামর্শ দিচ্ছেন। জানি উইকেটে গতি-বাউন্সের পাশাপাশি মুভমেন্ট থাকবে। সুইং হবে। নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী বল করতে চাই। সবচেয়ে বড় কথা অতি মাত্রায় আক্রমণাত্মক হওয়া চলবে না। উইকেটে ঘাস আছে মানেই যে কোনো লাইন ও লেন্থে বল করলেই সফল হবো এমন নয়। বাতাস যেদিকে টানবে, সেদিকে সুইং করানো সহজ। সে চেষ্টাই থাকবে।`  

এআরবি/এমআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।