টি-টোয়েন্টিতেও হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ


প্রকাশিত: ০৫:১৫ এএম, ০৮ জানুয়ারি ২০১৭

ঘরের মাঠে দারুণ সাফল্য পাবার পর প্রায় আড়াই বছর পর দেশের বাইরে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড উড়ে এসেছিল বাংলাদেশ। তবে দেশের মাটিতে প্রাপ্ত সাফল্যের ধারা ধরে রাখতে পারেনি দলটি। শুরুতেই ওয়ানডেতে বিদ্ধস্ত হয় টাইগাররা।  এবার টি-টোয়েন্টিতেও বিদ্ধস্ত হয়েছে তারা। শেষ ম্যাচে ২৭ রানের বড় ব্যবধানে হেরে হোয়াইটওয়াশ হলো মাশরাফিবাহিনী।

Babuরোববার নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো করেছিল বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার দলকে ৪৪ রানের সংগ্রহ এনে দেন। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে সাব্বির রহমানের সঙ্গে ৩৮ রানের জুটি গড়েন সৌম্য। তবে দলীয় ৮২ রানে সৌম্যর বিদায়ের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। ফলে ১৬৭ রানেই থামে টাইগারদের ইনিংস।

বাংলাদেশের ইনিংসের পঞ্চম ওভারে চতুর্থ বলে বিদায় নেন তামিম। এগিয়ে এসে পুল করতে গেলে টপ এজে লেগে হাওয়ায় ভাসানো বল মিডউইকেটে দাঁড়ানো গ্র্যান্ডহোম কয়েক পা এগিয়ে সহজেই তালুবন্দি হন। এরপর নবম ওভারে ইশ সোধির বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে কানায় লেগে আকাশে উঠে গেলে বোলারের হাতে তালুবন্দি হয়েই ফিরে আসেন সৌম্য। তবে আউট হওয়ার আগে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪২ রানের ইনিংস খেলেন সৌম্য। ২৮ বলে ৬টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি।

সৌম্যর বিদায়ের পর বেশি সময় উইকেটে থাকতে পারেননি সাব্বির। ব্যক্তিগত ১৮ রানে কেন উইলিয়ামসনের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান টাইগারদের টি-টোয়েন্টি স্পেশালিষ্ট এই ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশ দলের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন প্রথম ম্যাচের হাফসেঞ্চুরিয়ান মাহমুদউল্লাহ। ইশ সোধির বলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান তিনি।

এরপর ১৯তম ওভারে দলীয় ১৫০ রানে সান্টনারের বলে আউট হন মোসাদ্দেক। ফলে কার্যত শেষ হয়ে বাংলাদেশের জয়ের আশা। এরপর শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাকিব আউট হওয়ার আগে ৪১ রানের ইনিংস খেলেন সাকিব। ৩৪ বলে ৪টি চারের সাহায্যে এ রান কেবল দলের জয়ের ব্যবধানই কমিয়েছে।

এর আগে মাউন্ট মুঙ্গানাইয়ের বে ওভালে টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানায় বাংলাদেশ। ৩৪ রানের ওপেনিং জুটি নিয়ে ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভালোই করে তারা। মোস্তাফিজের অনুপস্থিতিতে মাশরাফির সঙ্গে বোলিংয়ের সূচনা করেন রুবেল হোসেন। আর নিজের দ্বিতীয় ওভারে জোড়া আঘাত করে কিউইদের কোণঠাসা করে দেন এ পেসার।

জেমস নিশাম ও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান কলিন মানরোকে ফেরান রুবেল। নিশামকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলার পর মানরোকে সৌম্যর তালুবন্দি করেন তিনি। এর দুই ওভার পর কিউই শিবিরে আঘাত হানেন অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন। টম ব্রুসকে ইমরুল কায়েসের ক্যাচ পরিণত করে বাংলাদেশকে দারুণভাবে ম্যাচে আনেন এ তরুণ।

তবে বাংলাদেশের সাফল্য গাঁথা এ পর্যন্তই। এরপরই দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় নিউজিল্যান্ড। কোরি অ্যান্ডারসনকে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। যদিও এর জন্য তারা ধন্যবাদ দিতেই পারেন বাংলাদেশের দুই সেরা ক্রিকেটার সাকিব ও তামিমকে। চতুর্থ উইকেটে এ দুই ব্যাটসম্যানের ১২৪ রানের দারুণ জুটিতে উল্টো বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দেয় তারা।

এদিন কিউই অধিনায়ক সৌভাগ্যবান হলেও ঠিক তার উল্টোটাই ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। কারণ তার ওভারেই দুই দুইবার জীবন পেয়েছেন কিউই অধিনায়ক। ১৫তম ওভারে সাকিব সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেওয়ার পর ১৮তম ওভারে আরও সহজ ক্যাচ ছাড়েন তামিম। শেষ দিকে উইলিয়ামসনকে থামান রুবেল হোসেন। ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই তাকে বোল্ড করেন ফর্মে থাকা এ পেসার। তবে আউট হবার আগে নিজের কাজটি করে গেছেন অধিনায়ক। ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ৫৭ বলে ৬০ রান করেন তিনি। ৬টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি।

braverdrink

তবে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯২ রানের ইনিংস খেলেন এন্ডারসন। শুরু থেকেই ঝড় তোলা এ ব্যাটসম্যান এ রান করতে বল খেলেন মাত্র ৪০টি। এদিন টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০টি ছক্কা মারার রেকর্ড করেন তিনি। পাশাপাশি ২টি চারও হাঁকান এ ব্যাটসম্যান। ফলে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৪ রানের পাহাড়ই গড়ে কিউইরা।

আরটি/এমআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।