‘দল হিসেবে পারফরম করতে পারলে সাফল্য আসবেই’


প্রকাশিত: ১২:২৬ পিএম, ০৪ জানুয়ারি ২০১৭

‘ভাই আমরা সেই ওয়েলিংটন থেকে এসেছি প্রিয় ক্রিকেটারদের খেলা দেখতে। একটা জয়ের আশায় উন্মুখ হয়ে আছি। তা কি দেখতে পাব না?’

উপরের আবেগমাখা কথাগুলো প্রবাসী বাঙালি মোহাম্মদ মহসিনের। মঙ্গলবার নেপিয়ারের এক তুর্কি রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে দেখা হয়েছিল তার সঙ্গে। ভদ্রলোক নিউজিল্যান্ড থাকেন প্রায় এক যুগ হয়ে গেলো। ওয়েলিংটন থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে এসেছেন স্ত্রী ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে। মাশরাফি-সাকিবদের একটি জয় দেখার আশায়।

Babuশুধু ওই এক ভদ্রলোকের কথা বলা কেন, কাল নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে প্রিয় লাল সবুজ পতাকা হাতে এসেছিলেন আরও কিছু প্রবাসী বাঙালি। যাদের কেউ কেউ অকল্যান্ড থেকেও দেশ মাতৃকার টানে সপরিবারে মাঠে এসেছিলেন।

টাইগারদের উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করতে প্রিয় জাতীয় পতাকা সঙ্গে আনতেও ভুল হয়নি কারো; কিন্তু সে পতাকা উঁচিয়ে ধরে উচ্ছ্বাস বা উল্লাস করার সুযোগ মেলেনি। উল্টো ফিরে গেলেন এক বুক হতাশা নিয়ে।

প্রবাসি বাঙালিরা উল্লাসে মেতে ওঠার সুযোগ পাবেন কি করে? নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেই ঘোর বিপাকে মাশরাফির দল। বোর্ডে ৩০ রান যোগ হতেই চার নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান আউট।

সেই যে পিছনের পায়ে চলে যাওয়া, সেখান থেকে আসলে সামনে আগানোও কঠিন। তারপরও মাহমুদউল্লাহর হাত ধরে শেষ পর্যন্ত ১৪০ এর ঘরে পা রাখা। সাকিব ও মোস্তাফিজ শুরুতে ব্ল্যাক ক্যাপসদের ওপর আঘাত হানলে একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়; কিন্তু কিউই বধে যে আরও ধারালো বোলিং আর টাইট ফিল্ডিং প্রয়োজন!
 
তা আর হলো কই? ফিল্ডিং ব্যাক আপ তো ভালো হয়নি, ক্যাচিংও ছিল যাচ্ছেতাই। কিউইরা যার হাত ধরে ১২ বল আগে জয়ের বন্দরে, সেই কেন উইলিয়ামসন চল্লিশের ঘরে গিয়ে একটা সুযোগ দিয়েছিলেন; কিন্তু সাকিবের বলে ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়ানো সৌম্য সরকার অপ্রয়োজনে বাউন্ডারি সীমানা থেকে আট ১০ গজ সামনে থাকায় সেই ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি। সৌম্য সেই ক্যাচ নিতে পারলে হয়ত ব্ল্যাক ক্যাপসরা আরও চাপে পড়তো। কে জানে তখন অন্য কিছুও হতে পারতো।

যা হোক নিজেদের ব্যর্থতা ও অদক্ষতার কারণে তা হয়নি। যতই সুযোগ তৈরি হোক না কেন, কঠিন বাস্তবতা হচ্ছে এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া সম্ভব হয়নি। মোদ্দা কথা, কিউইদের হারানোর মতো অবস্থা তৈরি করা সম্ভব হয়নি।

কোনো এক বিশেষ অংশে হয়তো প্রাধান্য ছিল; কিন্তু সেটা সাময়িক। আবার একটা সময় গিয়ে সে সম্ভাবনা কর্পুরের মতো উড়েও গেছে। এই যে ওয়ানডে সিরিজ থেকে কোনো না কোনো সময়ে হঠাৎ পারফরম্যান্স ভালো হচ্ছে, সেই সুবাদে প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করে সম্ভাবনার প্রদীপও জ্বলছে। আবার দপ করে তা নিভেও যাচ্ছে। কাজের কাজ কিন্তু হচ্ছে না।

এই যে বার বার না হওয়া, তাতে জন্ম নিয়েছে, একটি বড় প্রশ্ন- ‘আচ্ছা! নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ব্লাক ক্যাপসদের হারানোর সামর্থ্য কি আছে টাইগারদের? না কি হঠাৎ আলোকচ্ছটা জ্বলে উঠে আবার দপ করেই নিভে যাবে? এমন প্রশ্ন এখন অনেকের মনেই।

braverdrink

সত্যিই কি নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কিউইদের হারানোর সামর্থ্য আছে মাশরাফি বাহিনীর? আজ নেপিয়ার থেকে মাউন্ট মঙ্গানুই আসার আগে দেশের সাংবাদিকদের সামনে ঠিক এই প্রশ্নের সম্মুখীন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

আচ্ছা আপনার কি মনে হয় নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কিউইদের আদৌ হারানো সম্ভব? আপনাদের কি সত্যিই সে সুযোগ ও সামর্থ্য আছে? মাহমুদউল্লাহর আত্মবিশ্বাসী জবাব, অবশ্যই সুযোগ আছে। আমরা বিশ্বাস করি, ব্ল্যাক ক্যাপসদের হারানোর সামর্থ্য আছে আমাদেও এমনকি শক্তিও আছে। ছোট ছোট কিছু ভুল-ত্রুটি আর ফাঁকফোকর থেকে যাচ্ছে, সেগুলো কাটিয়ে উঠতে পারলেই আমরা জিততে পারবো বলে বিশ্বাস করি।’

মাহমুদউল্লাহ আরও একটা কথা বলেছেন। তাতে পরিষ্কার ফুটে উঠেছে, টিম পারফরম্যান্সের আশায় পুরো দল। তাই তো মাহমুদউল্লাহর শেষ কথা, আসলে সবার আগে দরকার টিম পারফরম্যান্স। কোন ডিপার্টমেন্ট বা কেউ একা ভালো খেললে চলবে না। প্রথম ও শেষ কথা হলো, পুরো দলকে এক সঙ্গে ভালো খেলতে হবে। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে টিম পারফরম্যান্স হতে হবে। যদি আমরা টিম হিসেবে পারফরম করতে পারি তাহলেই জিতব। এ মুহূর্তে একটাই লক্ষ্য, তাহলো দল হিসেবে পারফরম করা। আমার বিশ্বাস দল হিসেবে পারফরম করতে পারলে সাফল্য ধরা দেবেই।’

এআরবি/আইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।