সৌম্যকে এখন ঘরোয়া ক্রিকেটে পাঠিয়ে দেয়া উচিত


প্রকাশিত: ০৪:০১ পিএম, ০৩ জানুয়ারি ২০১৭

বছরের শুরুটাই হলো হার দিয়ে। আসলে ওয়ানডে খারাপ করার কারণে এই দলটার ওপর একটা প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে ব্যাটসম্যানদের ওপর। কিছু ব্যাটসম্যান রান পাচ্ছেন সত্য; কিন্তু ধারাবাহিকতা নেই তাদের। শুরুতে দ্রুত তিনটা উইকেট পড়ে যাওয়াতে আমরা ব্যাকফুটে চলে যাই। যদি আরও ১৫-২০ রান বেশি করতে পারতাম, তাহলে অবশ্যই ভালো একটা পর্যায়ে যেতে পারতাম।

নিউজিল্যান্ডের বোলিংটাও বেশ ভালো হয়েছে। যেহেতু ওরা সেন্সর বোলিং করেছে সেহেতু ওরা জানে যে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা কোথায়। এ কারণে দেখেছি তারা অধিকাংশ বলই শর্ট বল করেছে। কারণ তারা জানে, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা এতটা স্বাচ্ছন্দ্য না শর্ট বলে। এগুলো দিয়েই তারা আমাদের ব্যাটসম্যানদের বিপদে ফেলে দিয়েছে।

ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতাগুলো খুঁজে খুঁজেই তারা প্ল্যান করে খেলতে নেমেছে। আমাদের চেয়ে তাদের প্ল্যানিং নিঃসন্দেহে অনেক ভালো। প্রশ্ন উঠেছে, আমরা কেন পারছি না এই দুর্বলতাগুলো ঢাকতে। এ ক্ষেত্রে আমি বলবো, নিউজিল্যান্ডে অনেক কিছুই আমাদের প্রতিপক্ষ। কন্ডিশন, উইকেটেও একটা ব্যাপার আছে। আমরা যে ধরনের উইকেটে সাধারণত খেলে থাকি, সে উইকেটের বিপক্ষে খেলতে হচ্ছে। ওদের ফিল্ডিং দুর্দান্ত। যার কারণে আমাদের রানও অনেক কম হচ্ছে। এরপর ওরা বোলিংটাও করছে পরিকল্পনা অনুযায়ী। আমাদের প্রতি ওভারে হয়তো দু’তিনটা বল ভালো হচ্ছে। আবার একটা দুইটা লেগ স্ট্যাম্পে পড়ছে। কিংবা হাফভলি দিয়ে দিচ্ছে।

আর ১৪১ রান কিন্তু এই উইকেট কিংবা এই মাঠে এতবড় স্কোর না। এই মাঠে এর চেয়েও অনেক বেশি রান ওঠে। টি-টোয়েন্টিতে জিততে হলে এসব মাঠে আগে ব্যাটিং করে অনেক বেশি রান তুলতে হবে। আমাদের টপ অর্ডার রান তুলতে পারেনি। এখানে বিশেষ করে আমি সৌম্যর কথা বলবো। টিম ম্যানেজমেন্ট তার প্রতি অনেক বেশি আস্থা দেখিয়ে ফেলেছে; কিন্তু সে আস্থার প্রতিদান দিতে পারছে না সে।

এর কারণ আমার মনে হয়, সৌম্য নিজেই ভেঙে পড়েছে। তার এখন উচিৎ হবে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে রানে ফেরা। এখন তাকে তার নিজের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিৎ। তাকে পাঠিয়ে দেয়া প্রয়োজন ঘরোয়া ক্রিকেটে। এখানে খেলে খেলে রান করতে পারলেই কেবল তার আত্মবিশ্বাস ফিরবে। আমি নিজে মনে করি, সে ঘরোয়া ক্রিকেটটা খেললে খুব ভালো করবে। জাতীয় লিগ খেললে, হয়তো বা সেখানে রান করে, নাসিরের মত ফর্মে ফিরতে পারবে। সে যে লেভেলেই রান করুক না কেন, ব্যাটসম্যানরা রান পেলেই তাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়।

মাহমুদউল্লাহর কথা আজ বিশেষভাবে বলতেই হয়। আগেরদিনই বলেছিলাম, টি-টোয়েন্টি পেয়ে হয়তো সে নিজেকে ফেরাতে পারবে। সেটাই করেছে। সে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে, অফ ফর্ম নয়, কয়েকটা ম্যাচ খারাপ খেলেছে এই যা। তার সঙ্গে যদি আজ আর দু’একটা ব্যাটসম্যান রান করতে পারতো, জুটি গড়তে পারতো তাহলে আমাদের স্কোরটা আরও অনেক বড় হতো।

মাহমুদউল্লাহ তো বিপিএলেও চমৎকার খেলেছে। দারুণ ব্যাট করেছে। ইনশাআল্লাহ দ্বিতীয় ম্যাচটায় আরও ভালো খেলতে পারবে সে। আমি নিজেও দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিটা মাঠে বসে দেখার আশা করছি।
 
বাংলাদেশের বোলিং নিয়ে যদি বলি, তাহলে বলতে হয়, আজ আমরা ভালো বল করিনি। সাকিবও নিজেকে খুব একটা মেলে ধরতে পারছে না। বোলিংয়ে বাংলাদেশের মূল শক্তি হচ্ছে তো মোস্তাফিজ আর সাকিব। ওরা দু’জনই অসাধারণ বোলার। এ দুইজন বোলারকে নিয়ে ওরা সম্ভবত খুব ভালোভাবে স্টাডি করেছে। মোস্তাফিজের বিপক্ষে কীভাবে ব্যাটিং করতে হয় এটা ওরা জানে।

প্রশ্ন উঠেছে সাকিবকে দিয়ে কেন উইলিয়ামসনের বিপক্ষে বোলিং ওপেন করানো হতো। আমার মনে হয়, এটা কোন সমস্যা নয়। এটাকে খারাপ সিদ্ধান্তও বলবো না। সবই ঠিক আছে। উইলিয়ামসন প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান। তার বিপক্ষে প্রতিষ্ঠিত বোলার দিয়ে শুরু করা হয়েছে। যদি সাকিব ব্রেক থ্রু এনে দিতে পারতো, তাহলে তো ম্যাচের চিত্র ভিন্নও হতে পারতো।

সাকিব নেইল ব্রুমের যে ক্যাচটা ধরেছিল, আমার কাছে ওটা ছিল খুবই চমৎকার। আমাদের দলে সত্যি বিশ্বমানের কিছু ক্রিকেটার রয়েছে। সমস্যা হচ্ছে তারা একসঙ্গে জ্বলে উঠতে পারছে না। আবার কোনো ম্যাচে জিততে হলে, সিনিয়রদের সঙ্গে সঙ্গে জুনিয়রদেরও ভালো করতে হবে। সবাই জ্বলে উঠতে পারছে না এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য। আশা করছি পরের ম্যাচে আমরা কাম ব্যাক করতে পারবো এবং সর্বশেষ টেস্ট সিরিজটা ভালো হবে আমাদের।

আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।