সেট হওয়ার পর লম্বা ইনিংস খেলার পরামর্শ সাকিবের

স্পোর্টস ডেস্ক
স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৪ পিএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৭

ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ কেন পারেনি? কোনো কোনো সময় নিউজিল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে থেকে, কিউইদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেও শেষ পর্যন্ত সাফল্যের হাসি হাসতে পারেনি মাশরাফির দল।

কেন ? যদি একটি কারণ চিহ্নিত করতে হয়, তবে যে কেউ এক বাক্যে বলে উঠবেন- কেন ব্যাটিং ব্যর্থতা। হ্যাঁ সর্বাংশে সত্য। ব্যাটসম্যানরা জ্বলে উঠতে পারেননি। বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান রান খরায় ভুগেছেন। আর দু’একজন যাও রান করেছেন, তারাও একটা পর্যায় পর্যন্ত গিয়ে থেমে গেছেন। বেশি দুর যেতে পারেননি। এক কথায় দীর্ঘ ইনিংস হয়নি।

খেলার দৈর্ঘ্য যত ছোটই হোক না কেন, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ওপরের দিকে অন্তত এক দু’জন  লম্বা ইনিংস খেলতে না পারলে স্কোর লাইন দীর্ঘ করা কঠিন। এ কারণে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের প্রধান চালিকাশক্তি সাকিব আল হাসান বলেই দিয়েছেন, স্কোয়ার অফ দ্য উইকেটে আয়তনে ছোট নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে কম রান করে কোনভাবেই পার পাওয়া যাবে না। তাই ব্যাটসম্যানদের রান করার জোর তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

১৯৫২ সালে  নির্মিত এ স্টেডিয়ামের টেস্ট অভিষেক ১৯৭৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি। পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে টেস্ট দিয়েই ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে যাত্রার শুরু ম্যাকলিন ওভালের।

Babuএর ৪ বছর পর ওয়ানডে ভেন্যু হিসেবে অভিষেক হয়েছে এই মাঠটির। ১৯৮৩ সালের ১৯ মার্চ এই মাঠে প্রথম ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিতব্য ম্যাচটি দিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভেন্যু হিসেবে অভিষেক হচ্ছে ম্যাকলিন পার্কের।

মুলতঃ এটি রাগবি খেলার মাঠ। বলার অপেক্ষা রাখে না নিউজিল্যান্ড রাগবির বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল। দেশটির এক নম্বর খেলাও রাগবি। এই ম্যাকলিন পার্কে শীতকালে রাগবি হয়। আর গ্রীষ্মে হয় ক্রিকেট।

খুব স্বাভাবিকভাবেই দৈর্ঘ্যটা ঠিক থাকলেও রাগবি স্টেডিয়াম বলেই পাশে কম। সে সঙ্গে আউটফিল্ডও যথেষ্ট ফাস্ট। তাই ভাবা হচ্ছে এ মাঠে রান হবে। এ কারনেই সাকিবের সাবধান বাণী, ছোট-খাট স্কোর গড়ে কিংবা রান খরায় ভুগে জেতার কোনই সম্ভাবনা নেই।

নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে ব্যাটসম্যানদের ভাল খেলার জোর তাগিদ দিয়ে বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেন, ‘এখানে মাঠ ছোট, বিশেষকরে পাশাপাশি সীমানা অনেক কম। আগে ব্যাট করলে বড়-সড় স্কোর গড়া ছাড়া পথ নেই। আর পরে ব্যাট করলেও বড় রান তাড়ার সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।’

বাংলাদেশ আজ অনুশীলন করে নেলসন পার্কে। সাকিব যখন স্বদেশি প্রচার মাধ্যমের সাথে কথা বলছিলেন, তখনো মূল উইকেট দেখতে পারেননি তারা। এমনকি দেখার সুযোগও ছিল না। কারণ তখন বৃষ্টিতে উইকেট ছিল ঘন কভারে ঢাকা।

braverdrink

উইকেট দেখতে না পারলেও সাকিবের বিশ্বাস, ম্যাকলিন ওভালের উইকেট হবে ব্যাটিং বান্ধব। রান উঠবে। তাই তার মুখে এমন কথা, ‘যদিও উইকেট এখনও দেখিনি, তারপরও অনুমান করতে পারি আগে ব্যাট করলে অন্তত ১৮০-১৯০ রান করতে হবে। যদিও উইকেট পুরোপুরি আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করবে। তবে এখানে যে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হচ্ছে, সেখানকার ম্যাচগুলোতে এরকম রানই হচ্ছে। এখানকার টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আমরা দেখেছি বেশকিছু। অনেক রান হচ্ছে, দু’শ রানও অনায়াসে তাড়া করে ফেলছে কেউ কেউ।’

উইকটের ওপর থেকে দৃষ্টি ও মনোযোগ সরানোর পরামর্শ দিতে গিয়ে সাকিব বলেন, ‘সত্যি বলতে, যে সব উইকেটে ওয়ানডে সিরিজ হয়েছে, সে উইকেটগুলোও খুব ভালো ছিল। আমরা হয়ত পারিনি। এখানেও ভালো উইকেট হবে ব্যাটিংয়ের জন্য।’

সাকিবের মূল পরামর্শ ও সাবধান বাণী- ‘কোনো ভাবেই সেট হয়ে সাজ ঘরে ফেরা যাবে না।’ সহযোগীদের এমন তাগিদ দিয়ে সাকিবের হুশিয়ারি, ‘যে বা যারাই রান করবে, সেট হবে- তাদের মূল কাজ হবে লম্বা ইনিংস সাজানো। মাথায় রাখতে হবে, সেট হয়ে গেলে লম্বা সময় উইকেটে কাটাতেই হবে। দীর্ঘ ইনিংস খেলতেই হবে। কোনভাবেই সেট হয়ে উইকেট দিয়ে আসলে চলবে না।’

সাকিবের এ পরামর্শ তার সহযোগিদের কানে গেলেই চলে। ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটিং ক্লিক না করার মূল কারণই ছিল এটা। বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান অংশ নিয়েছেন ব্যর্থতার মিছিলে। আর হাতে গোনা দু’একজন রান করেছেন, তারাও হয়ত চল্লিশ না পঞ্চাশের ঘরে গিয়ে আউট হয়েছেন।

প্রথম ম্যাচে সাকিব নিজে পঞ্চাশের ঘরে আউট হয়েছেন। শেষ খেলায় ইমরুল চল্লিশের ঘরে আর তামিমও হাফ সেঞ্চুরির পর সাজ ঘরে ফিরে এসেছেন। কেউ লম্বা ইনিংস খেলতে না পারায় বড় জুুটিও তৈরি হয়নি। দেখা যাক মঙ্গলবার নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে কি হয়!

এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।