দীর্ঘ টিম মিটিং : মাশরাফি প্রেস মিটে আসলেন এক ঘণ্টা পর


প্রকাশিত: ১০:৪৪ এএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬

মোটে একটি মাত্র দিনের ব্যবধান। কিন্তু এ স্বল্প সময়েই পাল্টে গেল দৃশ্যপট। ২-০ তে পিছিয়ে হোয়াইটওয়াশের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েও মাশরাফি বাহিনীকে এতটুকু হতাশ, বিচলিত, শঙ্কিত মনে হয়নি। বরং ২৪ ঘণ্টা আগে টিম হোটেল ট্রেইল ওয়েজে টাইগারদের চোখ-মুখ ছিল স্বাভাবিক। সবাইকে চনমনে ও আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে।

কিন্তু আজ নেলসনের স্যাক্সটন ওভালে শেষ ম্যাচে হারের পর সেই দলের ছন্নছাড়া অবস্থা। যিনি সাহস, আত্মবিশ্বাস ও আস্থার প্রতীক, সেই মাশরাফি বিন মর্তুজাও কেমন যেন ফ্যাকাসে। জয়-পরাজয় কোনোটাই যার আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও শরীরী অভিব্যক্তিতে তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না, সেই টাইগার অধিনায়কও কেমন যেন বিমর্ষ। খেলা শেষে আনুষ্ঠানিক প্রেস মিটে আসলেন অনেক সময় পরে।  

যেহেতু খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণী পর্বের পর পরই সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়, তাই শুরুর সে অর্থে নির্দিষ্ট সময় নেই। তবে সাধারণত পুরস্কার বিতরণী পর্ব শেষে মিনিট ১০-১৫’র ভেতরই শুরু হয় প্রেস মিট। কিন্তু আজ নেলসনের স্যাক্সটন ওভালে বাংলাদেশের অধিনায়ক প্রেস মিটে আসলেন অন্তত ঘণ্টাখানেক পর।

Babuএটুকু শুনে হয়তো ভাবছেন, মাশরাফিকে বুঝি রাজ্যের হতাশা এসে গ্রাস করেছে। টাইগার ক্যাপ্টেন হয়তো দুঃখ-বেদনা ও যন্ত্রণায় কাতর হয়েই সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন রেকর্ড সময় দেরি করে। আসলে তা নয়। খেলা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমে এক রুদ্ধদ্বার কক্ষ সভা হয়েছে।

যেখানে কোচ, অধিনায়ক, সব সিনিয়র খেলোয়াড় কথা বলেছেন। জানা গেছে, দলের অভ্যন্তরে এমন হতাশাব্যঞ্জক ও নেতিবাচক পারফরম্যান্সে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কেন এমন হলো? গত দুই বছর টানা ভালো খেলার পর আবার হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডোবা কেন? সমস্যাটা কি? না পারার সম্ভাব্য ক্ষেত্রই বা কোথায়? এসব বের করতেই এক পারফরম্যান্স মূল্যায়ন সভা হয়েছে।

যেখানে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। হাওয়া থেকে পাওয়া খবর নয়। স্যাক্সটন ওভালে ভেসে বেড়ানো গুঞ্জনও নয়। খোদ বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি নিজের মুখে কথা। সংবাদ সম্মেলনে এসে নড়াইল এক্সপ্রেস নিজ মুখে বলে গেলেন, ‘আমাদের ড্রেসিং রুমে টিম মিটিং হয়েছে। সেখানে সবাই কথা বলেছেন। যে যার মতো করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।’

মাশরাফি অানুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানোর আগেই কিছুটা অনুমান করা যাচ্ছিল। কারণ বাংলাদেশ ড্রেসিং রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। একজন ক্রিকেটারেরও চেহারা দেখা যায়নি। মাশরাফি মিডিয়া সেশনে আসছেন না কেন? কেনই বা এতো বিলম্ব? এ প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বিসিবি মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমামও স্বদেশি সাংবাদিকদের জানান, মনে হয় ভেতরে টিম মিটিং চলছে। তাই হয়তো মাশরাফির আসতে দেরি হবে। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তা-ই।

braverdrink
 
নিউজিল্যান্ডের কাছে তিন ম্যাচ হারের পর প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার দীর্ঘ টিম মিটিং হয়েছে। এদিকে সেই টিম মিটিংই শেষ নয়। মাশরাফি যখন সংবাদ সম্মেলনে আসেন ঠিক তখন বাংলাদেশ ড্রেসিং রুমের সামনে এক টেবিলে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু একান্তে নিভৃতে কথা বলেন।
 
তাদের দুজনার কথা শেষ হলে শুরু হয় আরেক মিটিং। যেখানে হেড কোচ ও প্রধান নির্বাচক ছাড়াও পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ, এ সফরের টিম ম্যানেজার সাব্বির খান, ফিজিও মারিও ভিল্লাভারায়নসহ সব কোচিং স্টাফই অংশ নেন।
    
মাশরাফির ১৫ মিনিটের প্রেস মিট শেষে আরও অন্তত আো ঘণ্টা চলে হেড কোচ, সব সহকারী কোচ ও প্রধান নির্বাচকের যৌথ সভা। প্রত্যেকেরই গোমড়া মুখ। মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলা বহু দূরে কেউ সামনেও আসেননি। তার কোচিংকালীন সময়ে কোন সিরিজ শেষে বেশ কেতাদুরস্ত হয়েই প্রেস মিটে আসার রেকর্ড আছে তার।  

কিন্তু আজ শনিবার বাংলাদেশ থেকে এ সিরিজ কাভার করতে যাওয়া সাংবাদিকরা কোচ হাথুরুসিংহের সাথে কথা বলতে চাইলেও তিনি আসেননি। কোচদের চোখ-মুখ বলে দিচ্ছিল, কেউই ক্রিকেটারদের অ্যাপ্রোচ-অ্যাপ্লিকেশন ও পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট নন।

এআরবি/এনইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।