সূচিতেই কিন্তু নিউজিল্যান্ড আমাদেরকে একটা কৌশলি মার দিয়েছে


প্রকাশিত: ০১:৪০ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬

এটা সিরিজের শেষ ওয়ানডে ম্যাচ। এখানে দুটি ব্যাপার জড়িত। এর আগের কলামেও লিখেছিলাম। একটা হচ্ছে, এই ম্যাচে জিতলে আমরা যে আত্মবিশ্বাস পাবো, সেই আত্মবিশ্বাস পরবর্তী যে দুটি ফরম্যাট আছে, টি-টোয়েন্টি এবং টেস্ট, এই দুটি ফরম্যাটে আমাদের কাজে লাগবে। দ্বিতীয় যে বিষয়, সেটা হলো- ইতিমধ্যেই আমরা তো সিরিজ হেরে গিয়েছি। এখন শেষ এই ম্যাচটা জিততে পারলে সিরিজের ব্যবধান হবে ২-১। এই ব্যবধানটা দেখতে একটু সুন্দর লাগবে। যদি ৩-০ হয়ে যায় সিরিজ, তখন সেটা দেখতে সুন্দর লাগবে না।

আমাদের আরেকটা বড় ব্যাপার হবে, আগের দুই ম্যাচে আমাদের যে বড় ভুলগুলো করেছি, সেগুলো শোধরানোর একটা বড় সুযোগ পাবো।

নিউজিল্যান্ড কিন্তু তাদের যে পুরনো ক্ষত বা ঘা আছে, আমাদের মাঠে এসে যে দু`বার হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল, সেটার প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করবে। আর নিউজিল্যান্ড এমন একটা দল যারা কখনও, শেষ পর্যন্ত ছাড়ে না। এ জন্য এই ম্যাচটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আমার কাছে মনে হচ্ছে, গত ম্যাচে যে পরিবর্তনগুলো ছিল, সোহানোর পরিবর্তনটা ছিল অটোমেটিক। রুবেলকে আমরা খেলাতে পারতাম। শুভাসিশকে দলে নেয়া হয়েছে। দলে নেয়ার আগে মনে হয়েছে, যে তাকে কেন নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এক ম্যাচ খেলে সে নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছে, জাতীয় দলে খেলার উপর্যুক্ত।

আমার কাছে মনে হয়, তানবিরের জায়গাটায় মিরাজকে খেলানো যেতে পারতো। আমাদের কাছে দুটো অপশন আছে। একটা হচ্ছে রুবেল এবং আরেকটা মিরাজ। যদি আমরা স্পিনার নিই, তাহলে অবশ্যই যেন মিরাজকে নিই। আর যদি পেসার খেলাই, তাহলে অবশ্যই রুবেলকে নেয়া উচিৎ।

তবে, কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি, শেষ ম্যাচে মোস্তাফিজকে খেলানো হচ্ছে। তাকে কী তানবিরের জায়গায় না কি  শুভাসিশের জায়গায় খেলানো হবে, সেটা আমি নিশ্চিত না। শুনেছি, শুভাশিসের জায়গায় মোস্তাফিজকে খেলানো হবে। যদি তাকে খেলানোই হয়, তাহলে যেন সম্পূর্ণ ফিট অবস্থায় খেলানো হয়।

আগেই লিখেছি, দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে গেছে টি-টোয়েন্টি মানসিকতার কারণে; কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে ওয়ানডে ক্রিকেট হলো ৫০ + ৫০ ওভারের। এ ধরনের ম্যাচে উচিৎ হলো সিঙ্গেলস এবং ডাবল রান বেশি নেয়া। এগুলোর দিকেই সবচেয়ে বেশি মনযোগ দেয়া উচিৎ।

ব্যাটিংয়ে আমাদের এখনও পর্যন্ত টপ অর্ডারে কেউ লম্বা কোনো ইনিংস খেলতে পারেনি। কোনো ম্যাচেই পারেনি। এখন আমাদের সামনে শেষ ম্যাচেই সুযোগ। এই ম্যাচে যদি জিততে চাই, তাহলে আমাদের বোলিং তো সত্যিই চমৎকার। এই বোলিংকে সহেযোগিতা করার জন্য আমাদের ব্যাটিংটা আরও শক্তিশালী হওয়া উচিৎ। শক্তিশালী বলতে, আমাদের টপ অর্ডারে যারা আছে, এক, দুই, তিন, চার- এই জায়গায় একটা লম্বা ইনিংস খেলতে হবে।

প্রথমে আমি বলবো, আমাদের যে বোলিং আছে, আমার বিশ্বাস আমরা জিততে পারবো। ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশের একটা ভালো স্বভাব। বাংলাদেশ এর আগেও বহুবার প্রমাণ করেছে, আমরা বাংলাদেশের সাপোর্টার হিসেবে, বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুরাগী হিসেবে, আশা করবো যে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। সেই সামর্থ্য বাংলাদেশের আছে।

বোলিংয়ে মোস্তাফিজ যদি ফেরে, সে সত্যি ডেঞ্জারাস বোলার। সে যদি ফিট থাকে এবং তাকে যদি মাশরাফি সঠিকভাবে চারটি স্পেল কিংবা তিনটি স্পেলে ব্যবহার করতে পারে, তাহলে আমাদের ভালো একটা ফল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আমি এখনও আশাবাদী যে মিরাজকে নেয়া হবে। তাকে কেন এখনও নেয়া হয়নি সে কারণটা এখনও আমি জানি না। তাকে নেয়া উচিৎ।

আগেও বলেছি, সিরিজ তো ইতিমধ্যেই হেরে গেছি। সেখানে যদি আমাদের সিরিজ ২-১ হয়, তাহলে পরের দুটা ফরম্যাটে টি-টোয়েন্টি এবং টেস্ট ম্যাচ, এ দুটোতে কাজে লাগবে।

একটা একটা বিষয় খুব গুরুত্বপূূর্ণ, যখন আমরা দ্বি-পাক্ষিক সিরিজের ফরম্যাট তৈরি করছিলাম, তখন আমাদের এই ব্যাপারটায় একটু মনযোগী হওয়া উচিৎ ছিল। নিউজিল্যান্ড কিন্তু কৌশলে প্রথমে ওয়ানডে, এরপর টি-টোয়েন্টি এবং সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ রেখেছে।

braverdrink

আমাদের উচিৎ ছিল প্রথমেই টি-টোয়েন্টি খেলা। এরপর ওয়ানডে এবং সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ খেলা। তাহলে একটা ধারাবাহিকতা থাকতে পারতো। সেটা আমাদের ক্রিকেট অপারেশন্সের বড় একটা ভুল ছিল যে, যখন দ্বি-পাক্ষিকের সূচি তৈরি করা হচ্ছে, তখন এই সূচিতে রাজি হওয়া উচিৎ হয়নি।

এ ধরনের সূচি কিন্তু কোথাও করা হয় না। প্রথমে ওয়ানডে, এরপর টি-টোয়েন্টি এরপর টেস্ট। এ ধরনের কোথাও হয় না। আমাদেরকে যেন একটু বোকা পেয়ে যেভাবে বলেছে আমরা সেভাবে রাজি হয়ে গিয়েছি। ক্রিকেট অপারেশন্সকে এ ব্যাপারে আরেকটু সজাগ হওয়া উচিৎ ছিল।

নিউজিল্যান্ডের ঘরের মাঠে খেলা। হোম দল হিসেবে তারা যে সুবিধাটা পাবে, সেটা তারা পুরোপুরি নেবে। যে কোনো সময় যে কোন পরিস্থিতিতে দল পরিবর্তন করতে পারে। অ্যাওয়ে দলগুলো সেটা পারে না। এ কারণে প্রথমে তারা আমাদেরকে ওয়ানডে এরপর টি-টোয়েন্টি খেলালো। সর্বশেষ তারা আমাদেরকে ধাক্কাটা দেবে টেস্ট ম্যাচে।

আমাদের সবচেয়ে বড় উচিৎ কাজ ছিল টি-টোয়েন্টিটা শেষে খেলা। এই সূচিতে আমাদের কোনোভাবেই রাজি হওয়া উচিৎ হয়নি। টি-টোয়েন্টি হচ্ছে যে কোন দলের খেলা। দু`তিন ওভারেই এই ম্যাচটা শেষ হয়ে যায়।

আইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।