রুপালি পর্দায় নিজেকে প্রমাণ করতে চাই: আলভী
তিনি অপেক্ষায় ছিলেন, কখন সুযোগ আসবে নিজেকে প্রমাণ করার। মেধা ও সৌন্দর্য্যের প্রতিযোগিতা শুধু মেয়েদের নিয়েই হয়। কিন্তু তিনি যে ছেলে। ছেলেদের নিয়ে এরকম কোনো প্রতিযোগিতা ছিল না যেখানে নিজেকে প্রমাণ করা যায়। এই নিয়ে ছেলেটির মনে খানিকটা আফসোসও ছিল বুঝি। মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছা যে তার আশৈশব। খুব ছোটবেলা থেকেই দুই সালমান- সালমান শাহ্ ও সালমান খানের অভিনয়ের দারুণ ভক্ত তিনি। চেষ্টা করতেন সবসময় তাদেরকে অনুসরণ করতে।
নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগটা ঠিক মিলছিলো না যেন। ২০১৩ সালের কথা। হঠাৎ একদিন পত্রিকার পাতা খুলে চোখ পড়লো একটি বিজ্ঞাপনের ওপর। যেখানে লেখা ছিলো- `যদি পুরুষ হও, ফেস করো`! এই সুযোগ কি আর হাতছাড়া করা যায়! ছেলেটি তখন তখনই নাম-ধাম নিবন্ধন করালেন। এটি ছিলো ইমামী ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম চ্যানেল আই প্রেজেন্ট- হ্যান্ডসাম দ্য আল্টিমেট ম্যান। ও হ্যাঁ, যার কথা এতক্ষণ বলছিলাম তার নাম যাহের আলভী। কী ঘটেছিলো তারপর? যাহের আলভীর স্বপ্ন কতটুকু পূরণ হয়েছে, কতটুকুই বা অধরা এই নিয়েই তিনি মুখোমুখি হয়েছেন জাগোনিউজের। তাকে নিয়ে লিখেছেন হাবীবাহ্ নাসরীন-
আলভী দ্য আল্টিমেট ম্যান
আমাদের দেশের অধিকাংশ ছেলেরাই হ্যান্ডসাম। এটা যে আমার মনগড়া কথা নয় তা হ্যান্ডসাম দ্য আল্টিমেট ম্যান -এর রেজিস্ট্রেশনের তালিকার দিকে তাকালেই বোঝা যাবে। সারাদেশ থেকে সেবার ১,৪৭,০০০ ছেলে এই প্রতিযোগিতার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন! আর তার মধ্যে যাহের আলভীও একজন। তিনি রেজিস্ট্রশেন করেছিলেন ঢাকা বিভাগ থেকে। প্রথম দিন অডিশন দিতে গিয়ে একটু যেন নার্ভাস মনে হচ্ছিলো নিজেকে। চারদিকে এত এত হ্যান্ডসাম ছেলে, একটু তো নার্ভাস লাগবেই! তারপরই তার মনে পড়ে গেল- যদি পুরুষ হও, ফেস করো! আর তিনি তো ফেস করতেই এসেছেন। তাহলে আর ভয় কী! ভয়কে জয় করতে পেরেছিলেন বলেই একে একে অসংখ্য ধাপ পেরিয়ে উঠে এলেন সেরা সাতে।
১,৪৭,০০০ জন থেকে সেরা সাত! কেমন ছিলো তখনকার অনুভূতি? এটা আসলে আমার স্বপ্নপূরণের একটা মাধ্যম ছিলো। সেরা সাতে আসতে পেরে নিজেকে সত্যিই সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছিলো। `এটা আসলে আমার স্বপ্নপূরণের একটা মাধ্যম ছিলো। সেরা সাতে আসতে পেরে নিজেকে সত্যিই সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছিলো। আর আমার আত্মবিশ্বাসও বেড়ে গিয়েছিলো শতগুণ` বিনয়ী হাসি হেসে জানালেন আলভী। আত্মবিশ্বাসের প্রতিদান তিনি পেয়েছিলেন। তিনমাস গ্রুমিংয়ের পর যখন চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষনা হলো আলভী তখন হ্যান্ডসাম দ্য আল্টিমেট ম্যান -এর সেকেন্ড রানারআপ! ব্যস, খুলে গেলো তার স্বপ্নের দরজা। তারপরের গল্প শুধুই ছুটে চলার।
স্বপ্নের ভুবনে
২০১৩ সালেই অভিনয়ে নাম লেখান যাহের আলভী। শাহেদ শরীফ খানের `অসমাপ্ত কাহন` ছিলো তার অভিনীত প্রথম নাটক। প্রথম নাটকেই কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তার বিপরীতে ছিলেন লাক্সতারকা রাখী। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত অভিনয় করেছেন ২৫টির মতো নাটকে। মডেলিংয়েও তিনি সমান দক্ষ। বিজ্ঞাপন করেছেন ৪টি। ধারাবাহিক নাটকের সংখ্যা ১০টির মতো। অসমাপ্ত কাহন, দিনগুলি, এই শহরে, অন্তরে তার ডাক পাঠাবো, কান্ডারী, ভন্ডবাবা, যাদুর বাক্স, লোভ, চারকন্যার গল্প, অঘটনঘটনপটিয়সী`র মতো জনপ্রিয় নাটক জমা হয়েছে তার অভিনয়ের ঝুলিতে। এখন তার লক্ষ্য একটাই- রুপালি পর্দা। সেই লক্ষ্যেই নিজেকে তৈরি করছেন। এবং আবারো সুযোগ পেলে নিজেকে প্রমাণ করার অপেক্ষায় আছেন এই আল্টিমেট ম্যান।
এবং ভালোবাসা
অভিনয় করতে এসে প্রচুর মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছেন। কাজের ক্ষেত্রেও সিনিয়র সহকর্মীদের সহযোগিতা পাচ্ছেন প্রচুর। পেয়েছেন পরিবারের সমর্থনও। তবে নিজের প্রতি নিজের সমর্থনটা ছিলো সবচেয়ে বেশি। তিনি জানেন যে, তিনি পারবেন! প্রচন্ড বন্ধুবৎসল এই মানুষটির সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে। আর তাইতো যত ব্যস্ততাই থাকুক, আড্ডার জন্য সময় খরচ করতে একটুও কৃপণতা করেন না তিনি। বন্ধু, ভক্ত এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা ঘিরে আছেন তার চারপাশে।
এক নজরে যাহের আলভী
পুরো নাম: যাহের আলভী।
ডাক নাম: আলভী।
উচ্চতা: ৫`-১০"।
জন্মতারিখ: ২২ ফেব্রুয়ারি।
প্রিয় অভিনয়শিল্পী: আবুল হায়াত, তারিক আনাম খান, মাহফুজ আহমেদ, মোশাররফ করিম, জয়া আহসান, বাঁধন।
প্রিয় রং: সাদা।
প্রিয় মানুষ: নানাভাই আবু যাহের চৌধুরী।
প্রিয় জায়গা: খাগড়াছড়ি, সুন্দরবন, বান্দরবন।
শখ: আড্ডা, ভ্রমণ। দেশের বাইরে ভারত, থাইল্যান্ড ভ্রমণ করেছেন।
প্রিয় খাবার: মিষ্টি এবং ঝালজাতীয় যেকোনো খাবার। মায়ের হাতের পুডিং।
এইচএন/এমএস