মাশরাফির আরেকটি নতুন চ্যালেঞ্জ


প্রকাশিত: ০৪:১৪ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে, সমান সংখ্যাক টি-টোয়েন্টি এবং দুই টেস্টের সিরিজটি মাঠে গড়াচ্ছে সোমবার। ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশ সময় ভোর চারটায় শুরু হচ্ছে ব্ল্যাক-ক্যাপসদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটি। যে ম্যাচটিতে থাকছে বক্সিং ডের রোমাঞ্চও।

এর আগে নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের তিনটি সফর নিয়ে আশাবাদী হওয়ার মত পারফরম্যান্স নেই। সেখানকার ভিন্ন কন্ডিশন উপমহাদেশের যে কোন দলের জন্যই বাড়তি চ্যালেঞ্জ হয়ে থাকে সব সময়।

কিন্তু এই বাংলাদেশ তো বদলে যাওয়া একটি দল। ২০১৫ অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ থেকেই যারা নিজেদেও সোনালি সময় পার করছে। ঘরের মাঠে একাধারে পাকিস্তান-ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকাকে নাস্তানাবুদ করার পর গত অক্টোবরে ইংল্যান্ডকেও মাশরাফি-মুশফিকরা দিয়েছে লজ্জা উপহার। এই সময়ে বাংলাদেশ অন্তত ওয়ানডেতে নিজেদের নতুন শক্তি হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে। তবে ক্রাইস্টচার্চে কাল থেকে নতুন এক মিশনেই নামতে হবে মাশরাফি বিন মর্তুজাদের।

২০১৫ বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ কেবল ঘরের মাঠেই সিরিজ খেলে এসেছে। এই নিউজ্যান্ড সফর তাই টাইগারদের জন্য এক অর্থে নতুন শুরু। সেই সঙ্গে বিদেশের মাটিতে সামর্থ্য প্রমাণের চ্যালেঞ্জও। তো নিউজিল্যান্ডে কেমন করবে মাশরাফি বিন মর্তুজার রঙ্গিন পোশাকের দল?

ঠিক এই যায়গাটায় একজন অধিনায়ক মাশরাফির সামনে নতুন এক চ্যালেঞ্জই বলতে হবে। ২০১৪ সালে যখন ঘোর অমানিশায় ঘুরপাক খাচ্ছিল বাংলাদেশ, ঠিক তখনই মাশরাফির হাতে তুলে দেওয়া হয় রঙ্গিণ পোশাকের বাংলাদেশ দলকে। এরপর থেকেই বদলে যাওয়া এক দলের নাম বাংলাদেশ।

তবে কঠোর সমালোচকরাও গত দুই বছরে মনে করিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশের আসল চ্যালেঞ্জ দেশের বাইরে। কাল ক্রাইস্টচার্চেই মাশরাফিদের সেই চ্যালেঞ্জের শুরু। আগামী কিছু দিন দেশের বাইছে বেশ কিছু সিরিজে ব্যাস্ত থাকবে টাইগাররা। রয়েছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও। এই সিরিজ গুলোতে ভালো করতে পারলে বিশ্ব ক্রিকেট, সঙ্গে সেই সব সমালোচকদের ভিন্ন বার্তাই দেয়া হবে টাইগারদের। তারচেয়ে বড় কথা ক্রিকেটের বড় শক্তি হওয়ার পথ আরও সমুন্নত হবে বাংলাদেশের।
braverdrink
অধিনায়ক মাশরাফির জাদুকরি পরশে যেমন অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ থেকে বদলে যাওয়া, এবার নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে বিদেশেও কি ভালো শুরু হতে পাওে না সাকিব-তামিমরা? পারলে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ের ধারণ করা নাম ‘মাশরাফি’ আরও বড় উচ্চতাতেই ওঠে যাবেন।

আগের তিনটি নিউজিল্যান্ড সফরে (দ্বি-পাক্ষিক) তিনজন ভিন্ন ভিন্ন অধিনায়ক ছিলেন বাংলাদেশের নেতৃত্বে। ২০০১ সালে শুধু দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের অধিনায়ক ছিলেন খালেদ মাসুদ পাইলট। ২০০৭-০৮ সফরে আশরাফুলের নেতৃত্বে তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলে টাইগাররা।

২০১০ সালে ১ টেস্ট, ৩ ওয়ানডে ও ১ টি-টোয়েন্টির সিরিজে অধিনায়ক ছিলেন সাকিব আল হাসান। এবার টাইগারদের চতুর্থ নিউজিল্যান্ড সফরটা শুরু হচ্ছে ওয়ানডে-টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাশরাফির নেতৃত্বে (টেস্টে নেতৃত্ব দেবেন মুশফিকুর রহীম)। অর্থাৎ চার সিরিজেই ভিন্ন ভিন্ন অধিনায়ক।

২০০৯ সালে সব ধরনের ক্রিকেটের নেতৃত্ব পেলেও ইনজুরির কারণে ধারাবাহিকভাবে অধিনায়কত্ব করতে পারেননি মাশরাফি বিন মর্তুজা। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্টেই ইনজুরি দীর্ঘ সময়ের জন্য মাঠের বাইরে চলে যেতে বাধ্য করে মাশরাফিকে।

২০১৪ সালে ওয়ানডে-টি-টোয়েন্টির নেতৃত্বে পূনর্বহালের আগেও একবার অধিনায়কত্ব ফিরে পেয়েছিলেন মাশরাফি; কিন্তু সেবারও বাধা হয়ে দাড়ায় ইনজুরি। বিভিন্ন মেয়াদে মোট ৩৪ ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাশরাফি। ২৩ জয়ের বিপরিতে হার ১১টিতে। মাশরাফির নেতৃত্বে ২৩ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের জয় ৯টি, হার ১১টি। পরিত্যাক্ত হয় অন্য ম্যাচটি।

বাংলাদেশের প্রথম নিউজিল্যান্ড সফরের দলের সদস্যদের মধ্যে একমাত্র মাশরাফিই রয়েছেন এই দলটিতে। ২০১০ সালের সফরে না থাকলেও ছিলেন ২০০৭-০৮ সালের সফরেও। সবকিছু মিলিয়ে সবার আলাদা নজরই থাকবে একজন অধিনায়ক মাশরাফির দিকে।

আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।