আশার আলো জ্বালছে হ্যামিল্টনের সেই ম্যাচ


প্রকাশিত: ০২:৩৯ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬

একদিনের সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ঘরের মাঠে ব্ল্যাক-ক্যাপসরা সব সময়ই ভালো দল। কঠিন প্রতিপক্ষ। হারানো কঠিন। সেটা সেই রিচার্ড হ্যাডলি, মার্টিন ক্রো, মার্ক গ্রেটব্যাচ, এন্ড্রু জোন্স, ক্রিস হ্যারিস, ইয়ান স্মিথ ও গেভিন লারসেনদের সময় থেকেই।
 
সাম্প্রতিক সময়ও সাফল্যের সে ধারা বহাল আছে। দেশের মাটিতে গত চার বছরে কোনো ওয়ানডে সিরিজ হারেনি নিউজিল্যান্ড। এ সময়ের মধ্যে মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারত, মিসবাহ-উল-হকের পাকিস্তান আর মাহেলা-সাঙ্গাকারা-ম্যাথুসের শ্রীলঙ্কাও নিউজিল্যান্ডে গিয়ে হালে পানি পায়নি।
 
ইতিহাস জানাচ্ছে, বিদেশি দল হিসেবে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে শেষ ওয়ানডে সিরিজ বিজয়ের রেকর্ডটি ২০১১ সালে পাকিস্তানের। তারপর নিজেদের মাটিতে কিউইদের জয় রথ থামেনি। সেই দলের সাথে টাইগারদের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
 
আগের দিনকাল থাকলে হয়তো শীতে না কাপলেও বাংলাদেশ সমর্থকরা উইলিয়ামসন বাহিনীর ভয়ে কম্পমান থাকতেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো একদিনের সীমিত ওভারের ক্রিকেটে মাশরাফির দল এখন আর আগের জায়গায় নেই। সেই ডর-ভয়ের দিন শেষ হয়েছে আগেই।
 
দেশে-বিদেশে অনুকূল-প্রতিকূল সব জায়গায় তামিম, ইমরুল, সৌম্য, মুশফিক, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ ও মোস্তাফিজরা মাথা তুলে দাঁড়াতে শিখেছেন। বীরের মতো লড়তেও পারেন। কাজেই পরিসংখ্যান একটু চিন্তার কারণ হলেও টিম নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে বাংলাদেশ ভক্তদের মনে কোনো দুশ্চিন্তাই বাসা বাঁধতে পারেনি। ডর-ভয়ের প্রশ্নই ওঠে না।
 
নিউজিল্যান্ডের সাথে ঘরের মাঠে যে বাংলাদেশের সাফল্যও আকাশছোঁয়া। দেশের মাটিতে গত দুই ওয়ানডে সিরিজে  নিউজিল্যান্ডকে ধবলধোলাই করার রেকর্ড আছে টাইগারদের। প্রথমটি ২০১০ সালে। পরেরবার ২০১৩ সালে। এই দুই সিরিজে ৪+৩ = ৭ ওয়ানডেতে টাইগারদের শৌর্য-বীর্যের কাছে নাকাল হয়েছে কিউইরা।

braverdrink
 
শুধু ঘরের মাঠে কেন? নিউজিল্যান্ডের মাটিতেও নিকট অতীতেও ভালো খেলার রেকর্ড আছে মাশরাফি বাহিনীর। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। এই তো গত বছর বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের মাটিতেই কিউইদের ভীত কাঁপিয়ে দিয়ে এসেছিল মাশরাফির দল।

জিততে না পারলেও টাইগারদের বুক চিতানো লড়াইয়ের স্মৃতি এখনো ভক্ত-সমর্থকদের মনে জ্বল জ্বল করছে।  
২০১৫  সালের ১৩ মার্চ হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম বাহিনীর বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দুর্দান্ত শতক (১২৩ বলে ১২৮), সৌম্য সরকারের প্রত্যয়ী অর্ধশতক (৫৮ বলে ৫১) আর সাব্বির রহমান রুম্মনের ঝড়ো উইলোবাজিতে (২৩ বলে ৪০*) ২৮৮ রানের বড়সড় স্কোর গড়ে অল্পের জন্য জয়ের নাগাল মেলেনি। ৭ বল আগে তিন উইকেটের ঘাম ঝড়ানো জয়ে কিউইরা শেষ হাসি হাসে।

একটি জানা তথ্য বলে রাখা ভালো, বিশ্বকাপের ওই ম্যাচে কিন্তু মাশরাফি খেলেননি। তাকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছিল। নিয়মিত অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। অতিবড় সাকিব-ভক্তও মানতে চান সে ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার সাকিব বিশ্বকাপের ঐ খেলায় অধিনায়ক হিসেবে ততটা দুরদর্শিতার ছাপ রাখতে পারেননি। বোলার ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
 
২১ মাস পর আবার ব্ল্যাক-ক্যাপস ও টাইগারদের মোকাবিলা। তাই এখন আর কিউইদের ভয় পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। বিশ্বকাপের ম্যাচটি আশা জাগাচ্ছে। সমর্থকরা আশার জাল বুনছেন- হ্যামিল্টনের সেই উজ্জীবিত ও সাহসী ব্যাটিংটা যদি হতো। তাহলে হয়তো কিছু একটা ঘটেও যেতে পারে। সে ম্যাচে বোলিং তেমন ভালো হয়নি। এবার নিশ্চয়ই মাশরাফি বিন মর্তুজার গতিশীল নেতৃত্বে বোলিংটা হবে অন্যরকম।

এনইউ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।