ভুল সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে হলো চিটাগাংকে!


প্রকাশিত: ০৩:২৩ পিএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬

শেষ পর্যন্ত লড়াই হয় ২২ গজে ব্যাট-বলের। তবে তার আগে লক্ষ্য নির্ধারণ ও কার্যকর কৌশল অবলম্বনও মাঠের লড়াই জয়ে রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা। কখনো কখনো একাদশ সাজানো তথা টীম কম্বিনেশনটা লাগসই ও কার্যকর হবার ওপরও সাফল্য নির্ভর করে।

আজকের এলিমিনেটর পর্বে রাজশাহী কিংস ও চিটাগাং ভাইকিংস খেলায়ও ঘটল তেমনই এক ঘটনা। যেখানে ফর্ম ও পারফরম্যান্সহীন পেসার মোহাম্মদ সামিকে বাদ দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেসার কেসরিক উইলিয়ামসের অন্তর্ভূক্তি ড্যারেন সামির রাজশাহীর জয় ত্বরান্বিত করেছে।

অন্যদিকে  ইনফর্ম ও কার্যকর বোলার ইমরান খান জুনিয়রকে বাইরে রেখে বাড়তি ব্যাটসম্যান হিসেবে ডোয়াইন স্মিথকে খেলানোর চড়া মাশুল দিতে হলো তামিম ইকবালের চিটাগাং ভাইকিংসকে।

হারের পর চিটাগাং ভাইকিংস অধিনায়ক তামিম ইকবাল অকপটে স্বীকার করলেন, ‘আমার মনে হয় আমরা ভুল করেছি। আমরা ওকে (ইমরান খান জুনিয়রকে) খেলাতে পারতাম। যদিও এটা দলের সিদ্ধান্ত। তারপরও মাঠে ইমরান খান জুনিয়রকে মিস করেছি। বার বার মনে হয়েছে তাকে খেলানো যেত।’

প্রসঙ্গতঃ এবারের বিপিএলে চিটাগাং ভাইকিংসের অন্যতম সফল বোলার ইমরান খান জুুনিয়র। চিটাগাং ভাইকিংসের এ পাকিস্তানি পেসার ৯ খেলায় ১১ উইকেট শিকারি। চার খেলায় যার আছে দুটি করে উইকেট।   

ব্যাটিং লাইনআপ সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী করতে সেই স্ট্রাইক বোলারকে বাইরে রেখে আজ নক আউট ম্যাচে বিদেশি কোটায় ক্রিস গেইল, শোয়েব মালিক, মোহাম্মদ নবির সাথে চার নম্বর বিদেশি হিসেবে খেলানো হলো টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ডোয়াইন স্মিথকে। বার্বাডোজের এ ওপেনার কিছুই করতে পারেননি। ফিরে গেছেন একটি অশ্বডিম্ব উপহার দিয়ে।

ব্যাটসম্যান ডোয়াইন স্মিথ কিছু করতে না পারায় স্কোরলাইন ছোট হয়েছে; কিন্তু ১৪২ রানের ছোট্ট স্কোর নিয়েও জেতার অবস্থায় ছিল চিটাগাং ভাইকিংস।

৯৪ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল রাজশাহী কিংস। ১৫ ওভার শেষে স্যামি বাহিনীর স্কোর ছিল ৭ উইকেটে ১০০। হাতে তিন উইকেট থাকা অবস্থায় রাজশাহীর শেষ ৩০ বলে যখন ৪৩ রান দরকার, তার আগে দুই বাঁ-হাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক (৪ ওভারে ১৭ রানে ১উইকেট) ও সাকলাইন সজিবের (৪ ওভারে ২/২৪) কোটা শেষ। বাধ্য হয়ে দুই পেসার শুভাশিষ ও তাসকিন আহমেদের সরণাপন্ন হতে হয় চিটাগাং ভাইকিংস তামিম ইকবালকে; কিন্তু তারা কিছুই করতে পারেননি।

এর মধ্যে ১৬ নম্বর ওভারে পেসার শুভাশিষ ১৬ রান দিলে খেলা রাজশাহীর দিকে ঝুঁকে পড়ে। ওই জায়গায় ইমরান খানের অনুপস্থিতি হাঁড়ে হাঁড়ে টের পেয়েই খেলা শেষে তাকে মিস করার কথা স্বীকার করেন তামিম।

অন্যদিকে ঠিক বিপরীত কাজটি করেছে রাজশাহী। ৯ খেলায় মোটে ৫ উইকেট শিকারি মোহাম্মদ সামির বদলে সুচতুর ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক সারোয়ার ইমরান ও অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি মিলে তার বদলে বেছে নেন ওয়েষ্ট ইন্ডিয়ান ফাস্ট বোলার কেসরিক উইলিয়ামসকে। এই পেসারই বাজিমাৎ কওে দিলেন।

তার ৪ ওভারের বিধ্বংসী স্পেলে উবে যায় চিটাগাং কিংসের বড় স্কোর গড়ার স্বপ্ন। মাত্র ১১ রানে ৪ উইকেট দখল করেন উইলিয়ামস। খেলা শেষে রাজশাহী অধিনায়ক বলেন, অভিজ্ঞ মোহাম্মদ সামিকে বাদ দিয়ে তরুণ উইলিয়ামসকে খেলানো সহজ ছিল না। তারপরও আমরা অভিজ্ঞতার চেয়ে তারুণ্যের ওপর ভর করেছি। আর তাতে সফলও হয়েছি।’

বোলিং শুরু করে উইলিয়ামস নিজের দ্বিতীয় ওভারে আঘাত হানেন। তার বলে ফিরে যান চিটাগাং ওপেনার ডোয়াইন স্মিথ। ১৭ নম্বর ওভারে বোলিংয়ে এসে চিটাগাং ভাইকিংস অধিনায়ক তামিম ইকবালকে ফিরিয়ে দেন কেসরিক উইলিয়ামসকে। এরপর শেষ ওভারে রাজ্জাক ও তাসকিনকে সাজঘরে ফেরত পাঠান এ ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেসার।

তাতেই ১৪২ রানে থামে চিটাগাং। নয় ম্যাচ খেলে ৫ উইকেট পাওয়া মোহাম্মদ সামির চেয়ে কেসরিক উইলিয়ামস বেশি কার্যকর হবেন- এমন ভেবেই তাকে খেলানো। আর তাতেই সাফল্যের নাগাল পেলো রাজশাহী।

বরিশাল বুলসের সাথে প্রথম খেলায় উইকেটশূন্য (৪ ওভারে ৩৭ রান) উইলিয়ামস ৭২ ঘন্টা আগে ৩ ডিসেম্বর এই চট্টগ্রামের সাথে ৪ ওভারে মাত্র ১১ রানে দুই উইকেট দখল করেন। তার করা ম্যাচের প্রথম বলে তামিম ফিরে যান শূন্য রানে। আজ সেই চিটাগাং কিংসের বিপক্ষে বোলিং ওপেন করে ৪ উইকেট শিকার কওে নিলেন সেন্ট ভিনসেন্টের ২৬ বছর ৩২৪ দিন বয়সী এ পেসার।  

প্রসঙ্গতঃ বিপিএল খেলতে আসার আগে ৩০ অক্টোবর কলম্বোর খেতারামা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কান ‘এ’ দলের বিপক্ষে একদিনের ম্যাচ খেলেন উইলিয়ামস। তাতে ৭৪ রানে দুই উইকেট দখল করেন। তারও আগে, ২৭ সেপ্টেম্বর ওয়েস্টইন্ডিজ মূল দলের হয়ে পাকিস্তানের সাথে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৫ রানে পান দুই উইকেট।  

এআরবি/আইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।