১৭৪ কিলোমিটার গতিতে বল করলেন ওয়াইজ!


প্রকাশিত: ০২:০২ পিএম, ২০ নভেম্বর ২০১৬

ক্রিকেট বিশ্বে সবচেয়ে বেশি গতির বোলার কে? অধিকাংশই বলবেন, পাকিস্তানি স্পিডস্টার শোয়েব আখতারের নাম। কেউ কেউ ব্রেট লির নামও উচ্চারণ করবেন। একটা সময় ছিল শোয়েব আখতার আর ব্রেট লি’র মধ্যে প্রতিযোগিতা চলতো, কে কত গতিতে বল করতে পারে। অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি জেফ থমসনের রেকর্ড ভেঙে ১৬০ কিংবা তারও বেশি কিলোমিটারে বল করে এই অসি এবং পাকিস্তানি গতির পাল্লা দিতেন।

তবে এখন আর শোয়েব আখতার কিংবা ব্রেট লি নয়, আপনাকে সবচেয়ে গতিময় বোলার হিসেবে উচ্চারণ করতে হবে ডেভিড ওয়াইজের নাম। কী অবাক হলেন? অনেকে তো ডেভিড ওয়াইজের নামও শোনেননি। আরে ওই যে, কাউন্টিতে সাসেক্সের হয়ে শুরুতে মোস্তাফিজের পরিবর্তে খেলেছিলেন, সেই দক্ষিণ আফ্রিকান ডেভিড ওয়াইজ। তিনিই কি না বোলিং করেছেন ১৭৩.৯ কিলোমিটার (১০৮ মাইল) গতিতে।

চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা! এও কি সম্ভব? কেউ হয়তো সর্বোচ্চ গতি ১৬০ কিংবা তার আশপাশে তুলতে পারেন; কিন্তু বলা নেই কওয়া নেই। এমনকি কারও সম্পর্কে কোনো আলোচনাও নেই, হঠাৎ কেউ বলে বসলো ১৭৩ কিংবা ১৭৪ কিলোমিটার গতিতে বল করেছেন। তা কী বিশ্বাস করা যায়! কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে যে ডেভিড ওয়াইজ ১৭৩.৯ কিলোমিটার গতিতে বল করে হইচই ফেলে দিয়েছেন!

এবার আসুন সবার বিস্ময় ভেঙে দেয়া যাক। টিভি স্ক্রিনে ১৭৩.৯  দেখা গেলেও, সেটা ছিলো উল্টো। মূলত ১৩৭ কিলোমিটার গতির বলটিকে টিভিতে উল্টে দেখাচ্ছিল ১৭৩ কিলোমিটার গতির বল। এতেই ঘটে গেলো যত বিপত্তি।

ঘটনাটা ২০১৬-১৭ মৌসুমের সিএসএ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে। নাইটস ও টাইটান্সের মধ্যকার ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপর্যয়ে পড়ে নাইটসরা। দলীয় ১০ রানেই তারা হারিয়ে ফেলে দুই উইকেট। এরপর ওয়ান ম্যান শো প্রদর্শন করেন নাইটস অধিনায়ক ‘কিলার মিলার’ খ্যাত  ডেভিড  মিলার। ১২০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। আর তাতে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৫ রানের পুঁজি সংগ্রহ করে নাইটসরা।  

অথচ এই ম্যাচে মিলারের অবিশ্বাস্য ১২০ রানের টর্নেডো ইনিংস ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসেন ডেভিড ওয়াইজ। তিনি নাকি ১৭৩.৯ কিলোমিটার গতিতে (প্রায় ১০৮ মাইল) বল করেছেন! ওই বলটি করার পর টিভি স্ক্রিনে এমনটাই দেখাচ্ছিল।

যদিও ঘটনাটি ঘটেছে একটি ভুলের কারণে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে টিভিতে এমনটা দেখা যাচ্ছিল। টিভিতে চোখ রেখে তো সবার চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। কারণ প্রোটিয়া এই অলরাউন্ডার ঘণ্টায় সাধারণত ১৩০ কিলোমিটারের আশে-পাশে গতিতে বল করে থাকেন। এবার তিনি করলেন ১৩৭.৯ কিলোমিটার গতিতে। যা টিভি স্ক্রিনে উল্টো হয়ে দেখা যাচ্ছিল, ১৭৩.৯ কিলোমিটার!

এ নিয়ে ধারাভাষ্যকার থেকে শুরু করে দর্শক- এ ঘটনায় সবাই যেন মেতে ওঠেন দারুণ মজায়। বাদ যাবেন কেন ডেভিড ওয়াইজ নিজেও? নিজেকে এখন আর মিডিয়াম পেসার নয়, ফাস্ট বোলার ভাবতে শুরু করছেন তিনি। মজা করেই অফিসিয়াল টুইটার পেজে লিখেছেন, ‘যখন এমনটা হয়েই গেল। সুতরাং অফিসিয়ালি আমাকে ফাস্ট বোলারের স্বীকৃতি দেয়া হোক! এটা করতে হলে অবশ্য দীর্ঘ সময় আমাকে কাটাতে হবে ব্যায়ামাগারে!’

তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান্ত্রিক বিভ্রাটের কারণে  বলের গতি বাড়িয়ে দেয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। কয়েক মাস আগেই ভুল করে মরনে মর্কেলের একটি বলের গতি মাপা হয়েছিল ১৭৩.৯ কিলোমিটার, যা হবে মূলত ১৩৭.৯ কিলোমিটার।

এনইউ/আইএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।