‘সাকিব-তামিমের মত আরেকজন দায়িত্বশীল ক্রিকেটার প্রয়োজন’


প্রকাশিত: ০২:২৬ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০১৬

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আশরাফুলের সেই সেঞ্চুরির কথা যারা জানেন, তাদের নিশ্চয় মনে আছে- শেষ ওভারে গিলেস্পিকে দুর্দান্ত এক ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন বাংলাদেশের এক মারদাঙ্গা ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের পতাকা মাথায় পেঁচিয়ে মাঠে নামার মত দুরন্ত সাহস দেখাতেন তিনি। মিডল অর্ডার এই ব্যাটসম্যানের নাম আফতাব আহমেদ।

কার্ডিফে সেই ঐতিহাসিক জয়ে আশরাফুলের করা অসাধারণ সেঞ্চুরির চেয়ে কোনো অংশে কম ছিলো না আফতাবের সেই ছক্কার গুরুত্ব। বাংলাদেশ দলের বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের আবিষ্কার ছিলেন আফতাব। জাতীয় দলে এসেছিলেন অনেক সম্ভাবনা নিয়ে; কিন্তু অল্পতেই হারিয়ে যান চট্টগ্রামের এ তারকা। যদিও এখন তিনি নিজেই বয়সভিত্তিক ক্রিকেটার আবিষ্কারের সঙ্গেই যুক্ত। আজ তার জন্মদিন।

আফতাব যখন ক্রিকেট খেলতেন, তখন তাকে ছাড়া আশরাফুল আর মাশরাফির দিকে তাকিয়ে থাকতো বাংলাদেশ; কিন্তু সে বাংলাদেশ আজ অনেক বদলে গেছে। আফতাবের ভাষায়, ‘এখন তো বাংলাদেশ অনেক ভালো অবস্থানে আছে এবং আরও ভালো অবস্থানে যাবে ইনশাল্লাহ। দোয়া করি এমন একটা জায়গায় যাক যেটা একেবারে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।’

Aftab

বাংলাদেশ দলের ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল দেখছেন আফতাব। তবে সাকিব-তামিমের মত আরও একজন দায়িত্বশীল ক্রিকেটার চান তিনি, ‘ভবিষ্যৎ ইশাল্লাহ ভালোই হবে আশা করছি। সাকিব-তামিমের মত যদি আরেকটা খেলোয়াড় তৈরি করে যেতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ দলের আর কোন সমস্যা হবে না ইনশাল্লাহ।’

বর্তমানে আফতাব নিজের এলাকা চট্টগ্রামে একটি একাডেমী চালাচ্ছেন। সাগরিকায় এখন ক্রিকেটার তৈরির কাজেই নেমেছেন তিনি। এক সময় তার এলাকা থেকে উঠে এসেছেন আকরাম, নান্নু, নাফিস, তামিমের মত ক্রিকেটাররা। সেখানে বর্তমান জাতীয় দলে চট্টগ্রামের প্রতিনিধি নতুন কেউ নেই। এ নিয়ে কিছুটা আক্ষেপ ঝরে পড়লো তার কণ্ঠ থেকে।

‘এখন চিটাগাংয়ের মাত্র দুজন ক্রিকেটার বিপিএলে খেলতেছে। এছাড়া আর কেউকে দেখছি না। ভবিষ্যতে আদৌ কোনো খেলোয়াড় আসবে কি না তা আল্লাহই ভালো জানেন। আমাদের এখানকার সুবিধা আসলে খুবই কম। চিটাগাং থেকে ভবিষ্যৎ আমি দেখছি বলে মনে হচ্ছে না।’

Aftab

নিজের একাডেমী থেকে ভবিষ্যৎ তারকা বের করতে পারবেন কি না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে আফতাবের। তিনি বলেন, ‘আমি তো একবছর কাজ করছি একাডেমী দিয়ে। আসলে বুঝতে পারছি না, আরেকটা খেলোয়াড় কেন বের হচ্ছে না। আর ব্যাঙের ছাতার মত একাডেমী হচ্ছে। অথচ খেলার জায়গা নাই, মাঠের অভাব। সব মিলিয়ে আমি ভবিষ্যৎ খুব একটা ভালো দেখছি না।’

চট্টগ্রামে পরিশ্রমী ক্রিকেটার না থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে মনে করেন আফতাব, ‘আমাদের এখানকার কিছু খেলোয়াড় আছে যারা মৌসুমি খেলোয়াড়। ক্রিকেট মৌসুম যখন কাছে আসে, তার ১৫/২০ দিন আগে মাঠে আসে। এমন কিছু ক্রিকেটার আছে; কিন্তু ক্রিকেট খেলতে চাইলে আপনাকে কঠিন পরিশ্রম করতে হবে। রাজশাহী থেকে অনেক খেলোয়াড় উঠে আসছে, কারণ তারা অনেক পরিশ্রমী। এই জিনিস আমাদের চট্টগ্রামে চোখে পড়ছে না।’

উল্লেখ্য, ভারতের নিষিদ্ধ লিগ আইসিএল অংশগ্রহণ করতে গিয়েই জাতীয় দল থেকে হারিয়ে যান তিনি। এরপর ফিরে আসলেও আর সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি আফতাব। সবশেষে মাত্র ২৯ বছর বয়সে অনেকটা অভিমান নিয়েই ক্রিকেট ছেড়ে দেন একসময়ের ড্যাশিং এ ব্যাটসম্যান।

আরটি/আইএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।