‘চাইলেই পাওয়া যাবে না ফিফার টাকা’


প্রকাশিত: ০২:৫৩ পিএম, ০৪ নভেম্বর ২০১৬

এ দেশের  ফুটবলটা অজানা নয় তার। ২০ বছর আগে বাবা অটো ফিস্টার যখন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ ছিলেন মাইক ফিস্টার তখন টগবগে এক যুবক। বাংলাদেশ বয়েজ ক্লাবের হয়ে খেলেছেন প্রথম বিভাগ লিগে।

বাংলাদেশের ফুটবলকে কাছ থেকে দেখা সেই মাইক ফিস্টার এখন ফিফার সিনিয়র উন্নয়ন কর্মকর্তা। কাকতলীয়ভাবে তার হাতেই অনেকটা নির্ভর করছে বাংলাদেশ ফুটবলের ভাগ্য। ফিফার ৪ সদস্যের যে প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ সফরে এসেছে সে দলের নেতৃত্বও দিচ্ছেন তিনি। প্রতিনিধি দলের একজন ফিফার টেকিনিক্যাল অফিসার ভিনসেন্ট সুব্রামানিয়াম ফিরে গেছেন। মাইকসহ বাকি ৩জন ফিরে যাবেন আগামীকাল (শনিবার)।

যাওয়ার আগে আজ(শুক্রবার) আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে তাদের এ সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মিডিয়ার সামনে।

ফুটবলের উন্নয়নের অন্যতম শর্ত তৃণমুল থেকে শুরু করা। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ তা জানে। জানে ফিফা ও এএফসিও। যেন জানতেন না শুধু বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কর্মকর্তারা। তাই তো ফিফা কর্মকর্তাদের এসে এখন বাফুফেকে বলতে হচ্ছে- তোমরা তৃণমূলে যাও। তৃণমূলে না গেলে আর ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট না করলে কোনো দেশের ফুটবল উন্নয়নই সম্ভব না। সেটা বেশ ভালো করেই বাফুফে কর্মকর্তাদের কানে ঢুকিয়ে দিয়ে যাচ্ছে ফিফা প্রতিনিধি দল।

সংবাদ সম্মেলনে মাইক ফিস্টার বলেছেন, ‘আপনি যখন তৃণমূল থেকে শুরু করবেন না, ইয়ুথ ডেভেলপমেন্টে যাবেন না, তখন আপনার দেশের ফুটবল বিপদজনক অবস্থানে চলে যাবে। বাংলাদেশের ফুটবল এখন সে অবস্থানেই রয়েছে। জাতীয় দলের সাম্প্রতিক ফলটা সতর্ক সংকেত। এখনই সজাগ হতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলছি, ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ জিতেছে জার্মানি; কিন্তু তার ১০ বছর আগে ইউরো কাপের চূড়ান্ত পর্বেই উঠতে পারেনি তারা। সেটা ছিল আমাদের জেগে ওঠার সঙ্কেত।’

সংবাদ সম্মেলনে মাইক ফিস্টারকে বেশি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে, বাংলাদেশ ফুটবল উন্নয়নে এখন কী পদক্ষেপ নিচ্ছে ফিফা তা নিয়ে। তাদের এই বাংলাদেশ সফর ফিফার ফরোয়ার্ড কর্মসূচির অংশ হিসেবে। বাৎসরিক ৫ লাখ ডলারের বাইরে সদস্য দেশগুলোর জন্য প্রকল্পভিত্তিক অনুদান প্রদানের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতেই তাদের পাঠিয়েছে ফিফা। কারণ, এখন থেকে প্রকল্পের চুলচেরা বিশ্লেষণ না করে কোনো অনুদান দেবে না বিশ্ব ফুটবলের শাসক সংস্থা।

তারা বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা করে সেটা জমা দিতে বলেছে বাফুফেকে।  প্রকল্পগুলো কি রকম হতে পারে সে গাইডলাইনও দিয়েছে। কারণ, প্রয়োজনের বাইরে কোনো অর্থ দেবে না তারা। এমন প্রকল্প তৈরি করা উচিত নয়, যার কোনো বাস্তবতা নেই। মাইক ফিস্টার পরিস্কার বলেছেন, ‘ফিফা কোনো ব্যাংক নয়। চাইলেই টাকা পাওয়া যাবে না।’

বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন বলেছেন, আমরা কয়েকটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিকল্পনা তৈরির কথা বলেছি। এর মধ্যে ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৬ ও ১৮ এবং নারী অনুর্ধ্ব-১৬ দলের আবাসিক প্রশিক্ষণ, ট্রেনিং সেন্টার ও একটি জিম তৈরি করে দেয়া। এর বাইরে দেশব্যাপি বয়সভিত্তিক দুটি টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য সহযোগিতাও চেয়েছে বাফুফে।

তবে এর বাইরেও অনেক খাতে অর্থ বরাদ্দের জন্য ফিফাকে অনুরোধ করেছে বাফুফে। যার অনেক প্রকল্পকে উচ্চাভিলাষী হিসেবে উল্লেখ করেছেন ফিফা কর্মকর্তারা।

নতুন এ প্রকল্পের অধীনে ৩ বছরে সাড়ে ৭ লাখ ডলার পাওয়ার হাতছানি বাংলাদেশের। তবে তা পেতে প্রথম দুই বছরের প্রকল্পগুলো সঠিক বাস্তবায়ন দেখবে ফিফা। তারা পর্যবেক্ষণ করবে- ফিফার অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার হয় কি না।

আরআই/আইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।