সারাদেশ অচল করে দেওয়ার হুমকি ব্যবসায়ীদের
রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ করা না হলে সারাদেশ অচল করে দেওয়া হুমকি দিয়েছেন তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম। শনিবার প্রতীকী অনশন কর্মসূচির সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ হুমকি দেন।
চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার প্রতিবাদে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে শনিবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশন করে তৈরি পোশাক শিল্পের সাথে জড়িত ব্যবসায়ী সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ বিটিএমইএ।
প্রতীকী অনশন শেষে আতিকুল ইসলাম বলেন, যেভাবে রাজনৈতিক সহিংসতা চলছে, মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুত সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতায় না আসে তাহলে মালিক শ্রমিক এক হয়ে সারাদেশ অচল করতে আমরা বাধ্য হবো।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের অনশনকে হালকাভাবে নিবেন না। এটা আপনাদের (রাজনীতিবিদ) কাছে একটা ম্যাসেজ। আপনারা তাড়াতাড়ি একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছান। একটা দায়িত্ব নিয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন। আমাদেরকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না। সব শ্রমিক ভাই বোনকে নিয়ে দেশকে অচল করে দিতে বাধ্য করবেন না। আমাদের ব্যবসায়িক পরিবেশ আল্লাহর অস্তে তৈরি করে দিন। যাতে বেশি ব্যবসা এদেশে আসতে পারে।
তিনি আরো বলেন, দেশকে অর্থনৈতিকভাবে বিকলাঙ্গ করে দিবেন না। এখন বিদেশি ক্রেতারা চিন্তা করছেন তারা কোন দেশে তাদের ব্যবসা সরিয়ে নিবেন তাই নিয়ে। আমরা যেখানে এগিয়ে যাবো রাজনীতিবিদরা সেখানে পেছন থেকে টেনে ধরছেন, তোমরা রফতানি কমিয়ে দাও। ৪০ দিন হয়ে গেল কারো কোনো মাথা ব্যাথা নেই। আপনারা অর্থনীতি নিয়ে একটু চিন্তা করুন। দেশকে পেট্রলবোমা থেকে উদ্ধার করুন। আর শ্রমিককে বেকার করবেন না।
এ সময় বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম অনুষ্ঠানে দুটি কমিটির ঘোষণা দেন। একটি সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে চলমান সহিংসতার বিরুদ্ধে পরবর্তী কর্মসূচির সিন্ধান্ত নেওয়ার জন্য গঠন করা হয়েছে। অন্যটি সাবেক সভাপতি আব্দুস সালম মুর্শেদীর নেতৃত্বে। তারা কারখানা মালিকদের ব্যাংক ঋণ, খেলাপি ঋণসহ ক্ষতিগ্রস্ত কারখানার আর্থিক সমস্যা নিয়ে কাজ করবেন।
এছাড়া কমিটি দু`টিতে পোশাক মালিকদের সঙ্গে অন্য ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারাও থাকবেন।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ বলেন, দেশে মানুষ যখন বোমাবাজির আতঙ্কে থাকে। সহিংসতার আশঙ্কায় ভোগে। তখন ব্যবসায়িরা ব্যবসা করতে পারেন না। আমরা মনে করেছিলাম নির্বাচনের পর দেশে শান্তিপূর্ণ ব্যবসায়িক পরিবেশ ফিরে আসবে। তবে নির্বাচনের পর তা না এসে রাজনৈতিক সহিংসতা নেমে এলো। ব্যবসায়ীরা বোমাবাজি চান না। তারা নিরাপদে ব্যবসা করতে চান।
এছাড়া অনশন অনুষ্ঠানে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্ঠা তপন চৌধুরী, সাবেক বিজিএমইএ সভাপতিদ্বয়সহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।
এসআই/আরএস