সাব্বিরের আরেকটু বেশি স্ট্রাইক নেয়া উচিৎ ছিল


প্রকাশিত: ১১:১৯ এএম, ২৪ অক্টোবর ২০১৬

কী বলবো বুঝতে পারছি না। এভাবে আবারও একেবারে তীরে এসে তরী ডুবে যাবে, ভাবতেই পারছি না। অনেকবারই তো এমন ঘটনা ঘটেছে। এবার ভাবলাম, হয়তো পারবে বাংলাদেশ; কিন্তু পারলো না। শেষ মুহূর্তে এসে হেরে গেলো। পরাজয় সব সময়ই কষ্টের।

আমি মাঠে না থাকি, ক্রিকেটার হিসেবে, এক সময় জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে এই কষ্টটা আমাকেও খুব বেশি ছুঁয়ে যায়। ভাবতে থাকি, কেন এমন হলো! নানা হিসাব মেলানোর চেষ্টা করি। ‘ইস’ ‘যদি’- এমনও নানা সমীকরণ সামনে এসে দাঁড়ায়। জিততে তো পারতাম আমরাও; কিন্তু দিন শেষে তো থাকলাম পরাজিত দলে। এটাই সবচেয়ে বড় কষ্টের, এত কাছে এসে এভাবে হেরে যাবো!

তবুও বলবো আমরা দুর্দান্ত একটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছি। আমার চোখে দেখা অন্যতম সেরা একটি টেস্ট। বাংলাদেশ হেরে যাক; কিন্তু ম্যাচটাতে যেভাবে তারা খেলেছে, যেভাবে চতুর্থ দিন পর্যন্তও আমরা প্রভাব বিস্তার করেছি, ইংল্যান্ডের ২০ উইকেট নিয়ে নিয়েছি, আমাদের ব্যাটসম্যানরা ভালো খেলেছে- তাতে আমি মনে করি, সত্যিই দারুণ একটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছি আমরা।

শেষ মুহূর্তে জয়ের অবস্থা থেকে এভাবে হেরে যাওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক। তবে আমার মনে হয় সাব্বিরকে আরেকটু সতর্ক হওয়া প্রয়োজন ছিল। কারণ, শেষ মুহূর্তে বেন স্টোকস আর স্টুয়ার্ট ব্রড রিভার্স সুইং করাচ্ছিলেন বলকে। সেখানে প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান হিসেবে সাব্বিরেরই সবচেয়ে বেশি বল মোকাবেলা করা উচিৎ ছিল।

স্টুয়ার্ট ব্রডের ওই ওভারটির শেষ বল থেকে সিঙ্গেল রানটা না নিয়ে যদি তাইজুল নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে থেকে যেত, সাব্বির যদি স্টোকসকে মোকাবেলা করতো কিংবা সিঙ্গেলগুলো না নিয়ে সাব্বিরই যদি সবচেয়ে বেশি বল মোকাবেলা করে উইকেট কামড়ে থাকতো, তাহলে হয়তো আমরাই জিততে পারতাম।

ব্রডের ওভারের শেষ বল থেকে তাইজুল সিঙ্গেল রানটা নেয়াতেই যত সমস্যা হয়েছে। সাব্বিরকে অপরপ্রান্তে একা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হয়েছে তার দুই সতীর্থের আউট হওয়া। ভাগ্যও সহায় হলো না আমাদের। দুই উইকেটেই রিভিউ গেছে ইংল্যান্ডের পক্ষে। অনেক সময় জিততে হলে ভাগ্যেরও সহায়তা লাগে। সেটা আমরা পাইনি।

braverdrink

মুলতানে এভাবে হেরেছিলাম। শেষ মুহূর্তে ১ উইকেটে পরাজয়। ফতুল্লায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিততে জিততে হেরে গেলাম। এরপর চট্টগ্রামেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি নিশ্চিত জয়ের ম্যাচেও হেরে গেলাম। টেস্ট ক্রিকেটে আমাদের বয়স ১৬ বছর। এই ১৬ বছরে এত কাছাকাছি গিয়েও এমন ম্যাচগুলো যদি না হারতাম, তাহলে আমাদের ক্রিকেট আরও অনেক উন্নত হতো। কারণ, বড় দলগুলোর বিপক্ষে দু-একটি জয় চিন্তা-ভাবনা এবং মানসিকতাতেও অনেক পরিবর্তন এনে দেয়। ফলে ক্রিকেটও এগিয়ে যেত অনেক।

কিন্তু দুর্ভাগ্য, অনেক কাছে এসেও আমরা এভাবে হেরে যাই। জয়ের ম্যাচগুলো জিততে পারি না। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই এক সিরিজেই দু’বার এমন হলো। ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও শেষ মুহূর্তে এসে আমরা জিততে জিততে হেরে গেলাম। যে কারণে সিরিজটাও জিততে পারলাম না। এই টেস্টেও একই ঘটনা। জিততে জিততে হেরে গেলাম।

চট্টগ্রামে যদি জিততে পারতাম, তাহলে নিশ্চিত টেস্ট সিরিজটা আর হারতে হতো না। ইংল্যান্ডের মত শক্তিশালী একটি দলের বিপক্ষে এক টেস্ট জিতে এগিয়ে থাকা, ঢাকায় যদি কোনোমতে ড্র করা যায়, তাহলে সিরিজটাই জিতে জেতাম আমরা। ঢাকায় ড্র করা না যাক, হারলেও তো সিরিজটা ড্র হতো। ইংল্যান্ডের মত বড় দলের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করা চাট্টিখানি কথা নয়। একটা সুবর্ণ সুযোগ হারিয়ে ফেললাম আমরা।

কী আর করা! সবই ভাগ্যের ব্যাপার। আশা করবো, ঢাকা টেস্টে চট্টগ্রাম টেস্টের ভুলগুলো আর পুনরাবৃত্তি করবে না বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।

আইএইচএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।