সাব্বিরই স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:০২ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২০১৬

বাংলাদেশের একমাত্র টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান বলা হয় সাব্বির রহমানকে। ধুম ধাড়াক্কা এ ব্যাটসম্যানের টেস্ট দলে অন্তর্ভুক্তিতে অনেকেই অবাক হয়েছেন। তবে নিজেকে বরাবরই তিন সংস্করণের ক্রিকেটার দাবী করেছিলেন সাব্বির। আর তার প্রমাণ রাখলেন চট্টগ্রামে নিজের অভিষেক টেস্টেই। তাকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। শেষ দিনে আর ৩৩ রান করতে পারলেই জয় পাবে টাইগাররা। অপরদিকে জয় পেতে মরিয়া হয়েই শেষ দুই উইকেট চায় ইংল্যান্ড।

দিনের শেষদিকে সাব্বির-তাইজুলের দারুণ প্রতিরোধে প্রথম টেস্ট পঞ্চম দিনে নিতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। তবে সোমবার সকালেই চট্টগ্রাম টেস্টের যে নিষ্পত্তি হয়ে যাচ্ছে, তা প্রায় বলেই দেওয়া যায়।

এদিন সাকিব আল হাসান আউট হওয়ার পর মাঠে নামেন সাব্বির। দলের রান তখন ১৪০। দুইশত রানের আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা বাংলাদেশের; কিন্তু তা হতে দিলেন না অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়া সাব্বির রহমান। দু’জনের গড়া ৮৭ রানের অসাধারণ এই জুটিই বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করে।

৭৬ বলে সাব্বির রহমান তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। যদিও এরপর মুশফিক, মিরাজ, রাব্বি দ্রুত বিদায় নিলে তাইজুলকে নিয়ে দলের হাল ধরেছেন সাব্বির। নবম উইকেটে তারা ইতিমধ্যে ১৫ রানের জুটি গড়ে ফেলেছেন এবং ছোট হলেও এটা দলের জন্য খুবই মূল্যবান।

এর আগে রোববার ইংল্যান্ডের ছুড়ে দেয়া ২৮৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস ৩৫ রানের জুটি গড়েন। এরপরই ইংল্যান্ডের আঘাত। মঈন আলির বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৯ রানে বিদায় নেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল।

তামিমের বিদায়ের পর মুমিনুলকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন ইমরুল কায়েস। ৪৬ রানের জুটি গড়েন এ দু’জন। তবে আদিল রশিদের বলে সুইপ করতে গিয়ে রুটের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। আউট হওয়ার আগে ৬১ বলে ৬টি চারে ৪৩ রান করেন ইমরুল।

ইমরুলের আউটের পর মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন বাংলাদেশের টেস্ট স্পেশালিস্ট মুমিনুল হক। দলের সংগ্রহ শতরান পার করার পর অল্পক্ষণই মাঠে থাকতে পারলেন এ স্পেশালিস্ট। গ্যারেথ ব্যাটির দুর্দান্ত একটি বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে যান তিনি। ফলে ব্যক্তিগত ২৭ রান করে সাজঘরে ফিরতে হলো তাকে। মুমিনুলের বিদায়ের পর গ্যারেথ ব্যাটির দ্বিতীয় শিকার হলেন মাহমুদউল্লাহ (১৭)। তাকেও এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েই বিদায় নিতে হয়।

তখনও জয়ের সমূহ সম্ভাবনা। কারণ বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান তখনও উইকেটে। তাকে নিয়ে দলের হাল ধরেন দলীয় অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। ৩২ রানের জুটি গড়েন এ দু’জন। যদিও সবাইকে হতাশ করে মঈন আলির বলে জনি বেয়ারস্টোকে ক্যাচ দেন সাকিব। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান।

১৪০ রানের মধ্যে প্রথম সারির পাঁচ উইকেট হারানোর পর শঙ্কা ছিল দু’শ রানের আগেই না আবার অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ! তবে অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম আর অভিষিক্ত সাব্বির রহমানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সে শঙ্কা কাটিয়ে জয়ের স্বপ্নই দেখছিল বাংলাদেশ।

কিন্তু টাইগারদের সে স্বপ্নে আঘাত হানেন ৩৯ বছর বয়সী বুড়ো গ্যারেথ ব্যাটি। মুশফিককে শর্ট লেগে গ্যারি ব্যালান্সের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি।

তবে আউট হওয়ার আগে সাব্বিরকে সঙ্গে নিয়ে ৮৭ রানের দারুণ এক জুটি গড়েছেন মুশফিক। শুরু থেকেই দেখে-শুনে সুস্থির ব্যাটিং করছিলেন মুশফিক। ১২৪ বল মোকাবেলা করে ৩টি চারে ৩৯ রান করেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক।
এরপর বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজও। স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন তিনি। মিরাজ আউট হলে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করে মাঠে নামানো হয় কামরুল ইসলাম রাব্বিকে। যদিও দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউট হন তিনি। ব্রডের করা বল তার পায়ে লেগে ব্যাল্যান্স ক্যাচ ধরলে তাতে আঙ্গুল তুলে দেন আম্পায়ার। ফলে শুন্য রানে বিদায় নেন রাব্বি। টেস্টে ক্রিকেটে ৪২তম খেলোয়াড় হিসেবে দুই ইনিংসে ডাক মারলেন তিনি।

চতুর্থ দিন সকালে আগের দিনের আট উইকেটে ২২৮ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই সাকিবের বলে দ্রুত এক রান নিতে গিয়ে রান আউট হন স্টুয়ার্ট ব্রড (১০)। মেহেদী হাসান মিরাজের দারুণ থ্রোতে বাকি কাজটুকু করেন মুশফিক। আর দ্বিতীয় নতুন বলে গ্যারেথ ব্যাটিকে (৩) এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলে ইংল্যান্ডকে ২৪০ রানেই গুটিয়ে দেন তাইজুল ইসলাম। আর এতে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৮৬।

আরটি/আইএইচএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।