ক্যাপ্টেন মাশরাফিই নায়ক


প্রকাশিত: ০৭:৪৯ পিএম, ০৯ অক্টোবর ২০১৬

অসাধারণ খেলেছে বাংলাদেশ। এই জয়টির খুব প্রয়োজন ছিল। প্রথম ম্যাচে যেভাবে হেরে গিয়েছিলাম, তাতে অনেকেই, বিশেষ করে সাধারণ দর্শকরা খুব হতাশ হয়ে পড়েছিল। তাদের বিশ্বাস ফেরানো হোক কিংবা বাংলাদেশ যে সত্যি সত্যি বড় দল হয়ে উঠছে- সেটা প্রমাণ করার জন্য হলেও এই জয়টা অনেক বেশি প্রয়োজন ছিল।

ইংল্যান্ড অনেক পেশাদার একটি দল। তাদের বিপক্ষেই নিজেদের প্রমাণ করার সেরা সুযোগ। প্রথম ম্যাচে কিছু ভুলের কারণে পারিনি আমরা। দ্বিতীয় ম্যাচে এসে সেই ভুলগুরো করলো না আর টিম বাংলাদেশ। ব্যাটে-বলে, নেতৃত্বে- অসাধারণ অলরাউন্ডার মাশরাফি। তার চমৎকার পারফরম্যান্সেই অসাধারণ এই জয়টি এলো বাংলাদেশের।

আগেই বলেছিলাম, ইংল্যান্ডের মত দলের বিপক্ষে জিততে হলে তিনটি ডিপার্টমেন্টেই ভালো করতে হবে বাংলাদেশকে। আজ সেই কাজটাই করে দেখিয়েছে ক্রিকেটাররা। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো না  হলেও মাহমুদউল্লাহ সুপার ব্যাটিং করেছে। তার সঙ্গে মুশফিক কিছু রান করেছে। তরুণ ব্যাটসম্যান হিসেবে মোসাদ্দেক তো সত্যিই নজর কেড়েছে। এরপর তো মাশরাফি ঝড়। তার ২৯ বলে ৪৪ রানের ইনিংসটি না হলে বাংলাদেশের রান ২০০’ও পার হতো না।

এক সময় তো মনে হচ্ছিল বড় জোর ১৭০ কিংবা ১৮০ রান হবে বাংলাদেশের; কিন্তু নাসিরকে নিয়ে মাশরাফি পুরো দৃশ্যপট পাল্টে দিল। দু’জনের ৬৯ রানের ওই জুটিটিই বাংলাদেশের জন্য জয়ের ভিত তৈরী করে দিয়েছিল। নাসিরও অসাধারণ ব্যাট করেছে। ওই মুহূর্তে তাকে সঙ্গী হিসেবে না পেলে মাশরাফিও এভাবে জ্বলে উঠতে পারতো না। ২৭ বলে সে অপরাজিত ২৭ রানের ইনিংসটি না খেললে বাংলাদেশের রান অনেক আগে থেমে যেতো। বিশেষ করে স্লগ ওভারে যে দুর্বলতা ছিল, সেটা নাসিরই যেন কাটিয়ে দিয়েছে।

উইকেটটা ছিল খুবই স্লো। প্রথম ম্যাচের মত নয়। এই উইকেটে ২৩৮ রান অনেক চ্যালেঞ্জিং। বাংলাদেশ যখন এই রানটা করে ফেললো, তখনই বিশ্বাস জন্ম নিয়েছিল, শুরুতে যদি একটু চেপে ধরা যায়, তাহলে আমরাই জিতবো। সে কাজটিই মাশরাফি করে দিল। কী অসাধারণ বোলিং! সাকিবকে দিয়ে বোলিং ওপেন করানো এবং নিজে অসাধারণ পারফরম্যান্স করে শুরুতেই ম্যাচ থেকে ইংল্যান্ডকে ছিটকে দিয়েছে মাশরাফি।

মাশরাফি-সাকিবের ওই চাপটাই আর সামলে উঠতে পারেনি ইংল্যান্ড। আর নাসির তো বল হাতেও ছিল খুবই চমৎকার। ১০ ওভারে ১টি মেডেনসহ ২৯ রান দিয়ে ১ উইকেট। দুর্দান্ত ফিল্ডিং- সব মিলিয়ে নাসির ছিল অসাধারণ পারফরমার। তাকে খেলানোর জন্য মানুষের মধ্য থেকে যে দাবি উঠেছিল, টিম ম্যানেজমেন্ট সে দাবির প্রতি সম্মান রেখে হয়তো তাকে দলে নিয়েছে; কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তার ওপর যে প্রচণ্ড চাপ, তাতে এমন পারফরম্যান্সের জন্য মানকিভাবে নিজেকে তৈরী করা- রীতিমত অবিশ্বাস্য। নাসির সে চাপ জয় করে নিতে পেরেছে। ব্যাট এবং বল হাতে সমানভাবেই মাশরাফির পর সেরা পারফরমার সে। নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে নাসির।

মাশরাফি-সাকিবের চাপ সামলে  ইংল্যান্ড ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল ঠিক, তবে আমার কাছে কখনও মনে হয়নি বাংলাদেশ ম্যাচ হেরে যেতে পারে। অনেকে বাটলার আর ব্যারেস্টর জুটি দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিল; কিন্তু আমি বলবো, ইংল্যান্ড তো চরম একটি পেশাদার দল। চারটি উইকেট পড়ে যাওয়ার পর তাদের কাছ থেকে এমন একটি জুটি তো অবশ্যই আশা করা যায়। কারণ, তারা শেষ বলটি পর্যন্তও হেরে যেতে চায় না।

braverdrink

এর প্রমাণ আজকের ম্যাচেই। শেষ উইকেট জুটিতে আদিল রশিক আর জ্যাক বাল আবারও চেষ্টা করেছিলেন ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়ার। ওই সময়ও আমি ভয় পাইনি। কারণ, বোলারদের প্রতি বিশ্বাস, তারা অবশ্যই এই উইকেটটির পতন ঘটাতে পারবে। শেষ পর্যন্ত দুই ফিনিশার মিলে ম্যাচটা শেষ করলেন। মাশরাফির বলে শেষ উইকেট জ্যাক বালের ক্যাচ ধরলেন নাসির। এমন পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারলে নিশ্চিত সিরিজ জিতবো আমরাই।

আইএইচএস/এএম

বিষয়: মোহাম্মদ-আশরাফুল

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।