জয়াবর্ধনের শেষ টেস্টের জন্য প্রস্তুত পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা


প্রকাশিত: ০৪:৪৮ এএম, ০৫ আগস্ট ২০১৪

পাকিস্তানের বিপক্ষে বুধবার শুরু হতে যাওয়া ষষ্ঠ টেস্ট সিরিজে জয়ের মধ্য দিয়েই সাবেক অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনেকে বিদায় জানানোর আশা করছে স্বাগতিক শ্রীলংকা।

১৯৯৭ সালে অভিষেক হওয়ার পর এ পর্যন্ত ১৪৭ টেস্টে ১১,৭১ রান করে সর্বকালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারিদের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে থাকা অভিজ্ঞ এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান এ সিরিজের পরই লংগার ভার্সন থেকে বিদায় নেবেন।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় টি-২০ বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের পরই সংক্ষিপ্ততম ভার্সন থেকে অবসর ঘোষণা করা ৩৭ বছর বয়সী জয়াবর্ধনে এখনো আগামী বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার আশা করছেন।

তবে তার অসাধারণ টেস্ট ক্যারিয়ারের জন্যই বেশি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে ৩৪ সেঞ্চুরিসহ তার গড় রান ৫০.০৯। ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ক্যারিয়ার সেরা ৩৭৪ রানের একটি ইনিংস রয়েছে মাহেলার।

ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং দীর্ঘদিনের সতীর্থ খেলোয়াড় কুমার সাঙ্গাকারার ১১,৬৬৫ রানের চেয়ে ৬ রান এগিয়ে থেকে শ্রীলংকার শীর্ষ ব্যাটসম্যান হিসেবে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু করবেন জয়াবর্ধনে।

প্রায় সকলের কাছেই আবেগঘন এক বিদায়ের কথা চিন্তা করে শ্রীলংকার ক্রিকেট কর্মকর্তারা দু’টি ম্যাচই জয়াবর্ধনের প্রিয় মাঠ কলম্বোর গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম এবং সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাবে (এসএসসি) আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

গল স্টেডিয়ামে ২২ টেস্টে জয়াবর্ধনের মোট রান ২২৯৭ এবং এসএসসিতে ২৬ ম্যাচে মোট রান ২৮৬৩। তাই সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট পিসারা স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা থাকলেও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সঙ্গে আলোচনা করে এ ম্যাচ এসএসসিতে আয়োজনের ব্যবস্থা করেছে শ্রীলংকা ক্রিকেট। নির্দিষ্ট কোনো ভেন্যুতে কোনো ব্যাটসম্যান হিসেবে এসএসসিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও জয়াবর্ধনের।

জয়াবর্ধনের বিদায়ে ‘তার শূন্য স্থান পূরণ করা’ কঠিন হবে বলে বলে স্বীকার করে শ্রীলংকা অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ আশা করছেন লক্ষ্য পূরণ এ বিদায় অনুষ্ঠান মোটেই তার দলের দৃষ্টি অন্যত্র সরাতে পারবে না।

তিনি বলেন, ‘তার (জয়াবর্ধনে) এবং শ্রীলংকা ক্রিকেটের ভবিষ্যত উভয় কারণেই আমাদের এ সিরিজ জয় করা দরকার। বিষয়টি আমাদের সামনে একদম পরিষ্কার।’

বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ ওয়ানডে টুর্নামেন্ট এবং টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের পর ইংল্যান্ড সফরে টেস্ট সিরিজ জয়ের মাধ্যমে এবছর টি শুরু করেছিল শ্রীলংকা।কিন্তু গত মাসে নিজ মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১-০তে টেস্ট সিরিজ হেরে জয়ের রেকর্ড বাধাগ্রস্ত হয় দলটির।

নতুন অধিনায়ক হাশিম আমলার নেতৃত্বে গল টেস্টে ১৫৩ রানে জয়ের পর এসএসসিতে দারুণভাবে ম্যাচ ড্র করে অস্ট্রেলিয়াকে পেছনে ফেলে আবারো টেস্টের শীর্ষস্থান দখল করে প্রোটিয়াসরা।

র্যাং কিংয়ের ষষ্ঠ স্থানে থাকা লংকানরা ২০০৯ সাল থেকে পাঁচটি টেস্ট সিরিজে দুইবার হারিয়েছে বর্তমানে তৃতীয় স্থানে থাকা পাকিস্তানকে। পাকিস্তানের কাছে হেরেছে মাত্র একটিতে এবং গত জানুয়ারি মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটিসহ দুই সিরিজে ড্র করে লংকানরা।

আইসিসি’র এফটিপিতে না থাকলেও মূলত পাকিস্তানের অনুরোধেই দুই টেস্টের এ সিরিজ আয়োজন করা হয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০১২ সালে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করার পর প্রথম সিরিজ জয়ের আশা করা পাকিস্তান পুনরায় দলের প্রধান কোচ হিসেবে ওয়াকার ইউনিসকে এবং জিম্বাবুয়ের গ্রান্ট ফ্লাওয়ারকে ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।

সিরিজে স্পিনারদেরই প্রাধান্য থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে পাকিস্তান দলে রয়েছে বিশ্বসেরা স্পিনার সাঈদ আজমল। তার সঙ্গে রয়েছেন আব্দুর রেহমান। আর স্বাগতিকরা নির্ভর করবে রঙ্গনা হেরাথ ও দিলরুয়ান পেরেরার উপর।

পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক বলেন, ‘সাধারণত শ্রীলংকায় স্পিনাররা বড় ভূমিকা পালন করে থাকে এবং এবারও তার ব্যতিক্রম হবে বলে আমি মনে করি না।’
‘জয় পাওয়ার উপকরণ আমাদের আছে । তবে আমাদের সেরাটা দিতে হবে।’

১৮ আগস্ট টেস্ট সিরিজ শেষ হওয়ার পর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে দল দু’টি।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।