সর্বশেষ ম্যাচে ৩০২ রান করেও হেরেছিল ইংল্যান্ড


প্রকাশিত: ০২:৩১ পিএম, ০৭ অক্টোবর ২০১৬

ইংলিশদের রান পাহাড় ৩০৯ দেখে ভড়কে গেছেন? নিশ্চয়ই মনে রাজ্যের দুশ্চিন্তা এসে বাসা বেঁধেছে? টাইগাররা কি এই রানের পাহাড় টপকাতে পারবে? ভক্ত-সমর্থকদের মনে রাজ্যের চিন্তা।

‘ক্রিকেটে শেষ বলে কিছু নেই। অসম্ভব শব্দটির অস্তিত্বও নেই’- কেউ কেউ হয়ত এই ভেবে আশার জাল বুনছেন। মাঠে শেষ অবধি যাই ঘটুক বাংলাদেশ ভক্ত ও সমর্থকদের আশবাদী হবার মত তথ্য উপাত্বও কিন্তু আছে।

পরিসংখ্যান দিচ্ছে আশার আলো। ইতিহাস ও পরিসংখ্যান জানান দিচ্ছে, বাংলাদেশে আসার আগে ইংল্যান্ড ঘরের মাঠে যে শেষ ওয়ানডে খেলেছে, তাতে ৩০০‘র বেশি রান করেও হেরেছে।

খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। মাত্র ৩২ দিন আগে, ৪ সেপ্টেম্বর কার্ডিফে ৩০২ রানের বড় সড় স্কোর গড়েও পাকিস্তানের কাছে ৪ উইকেটে হেরেছে ইংলিশরা। অথচ পাঁচ ম্যাচের ঐ সিরিজেই নটিংহ্যামে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৪৪৪ রানের হিমালায় সমান রেকর্ড স্কোর গড়ে হই চই ফেলে দিয়েছিল ইয়ন মরগ্যানের দল। সেটা ছিল সিরিজের তিন নম্বর ম্যাচ।

আলেক্স হেলস (১৭১), জো রুট (৮৬ বলে ৮৫), বাটলার (৫১ বলে ৯০) এবং মরগ্যানের (২৭ বলে ৫৭) ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৪০০ পেরিয়ে যায় ইংল্যান্ড।

মাঝে এক ম্যাচ বিরতি। তারপর ৫ দিন পর ৩০০ করেও হেরে যাওয়া। সবচেয়ে বড় কথা, ইংল্যান্ড যে দলের সাথে ৩০০‘র ঘরে পৌছেও পারেনি, সেই পাকিস্তানকে ১৮ মাস আগে তিন ম্যাচের সিরিজে তুলোধুনো করে ছেড়েছে বাংলাদেশ।

৩০০ রানের বেশি পুজি নিয়েও সেই হারের কথা নিশ্চয়ই ইংলিশদের মন থেকে মুছে যায়নি। তাদের সাহস ও উদ্যমের সেটা নিশ্চয়ই একটু হলেও কাটা হয়ে আছে।

আর মাশরাফির দল সেই ম্যাচের চালচিত্রর কথা ভেবে হতে পারে অনুপ্রাণিত হতে পারে। হতে পারে আশাবাদীও। যে পাকিস্তান আমাদের সাথে পাত্তাই পায়নি, তারা যদি ইংলিশদের মাটিতে ৩০০ রানের টার্গেট তাড়া করে জিততে পারে, তাহলে আমরা কেন পারবো না- এমন  ভেবে এগুলে জয় ধরা দিতেও পারে।  

কাজেই আশাবাদি হওয়াই যায়। আফগানিস্তানের সাথে তিন ম্যাচের সিরিজে পারফরমেন্স প্রত্যাশার মাত্রাকে ছুঁতে না পারলেও ইতিহাস সাক্ষী দিচ্ছে, সেই ২০১৪ সালের নভেম্বর থেকে ঘরের মাঠে দারূন সচল বাংলাদেশের জয়রথ।

পুরনো প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েকে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ দিয়ে শুরু। তারপর একে একে পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, আবার জিম্বাবুয়ে এবং সবশেষে আফগানিস্তান- টানা ছয়-ছয়টি সিরিজে শেষ হাসি টাইগারদের।

এই সাফল্যের মিশনে একবার, দু’বার নয়, তিন তিনবার ৩০০‘র ঘরে পা রেখেছে মাশরাফির দল। ভাববেন না, সেগুলো জিম্বাবুয়েরমত দূর্বল বোলিংয়ের বিপক্ষে। তিনবারের দুবার ভারতের বিরুদ্ধে। আর একবার পাকিস্তানের বিপক্ষে আছে ঐ কৃতিত্ব।

গত দেড় বছরে প্রথমবার তিনশো রান আসে পাকিস্তানের বিপক্ষে। গত বছর ১৭ এপ্রিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শেরে বাংলায় ৩২৯ রান করে ৭৯ রানের বড় জয়ে মাঠ ছাড়ে মাশরাফির দল। তারপর ১৮ জুন হোম অব ক্রিকেটে ভারতের সাথে ৩০৭ রান করে ৭৯ রানের ব্যবধানে জয়।

২৪ জুন সেই শেরেবালায় ভারতের বিরুদ্ধে ৩১৭ রানের পিছু ধেয়ে আর শেষ রক্ষা হয়নি। ৭৭ রানে হার থেকেছে সঙ্গী।

ইতিহাস আরও একটি তথ্য দিচ্ছে, গত দুই বছরের বেশি সময়ে শেরে বাংলায় ৩০০ প্লাস স্কোর গড়ে একটি দলই হেরেছে। সেটা স্বাগতিক বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের ৪ মার্চ শেরে বাংলায় পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে ৩২৬ রানের বড় সড় স্কোর গড়েও আফ্রিদী তান্ডবে আর শেষ হাসি হাসা সম্ভব হয়নি। ৩  উইকেটে হেরেই মাঠ ছাড়তে হয়।

ওই পরাজয়ে একটা ইতিবাচক বার্তাও আছে। তা হলো, শেরে বাংলায় ৩০০ রানের বেশি টার্গেটও টপকানো সম্ভব। এটাই হতে পারে মাশরাফি বাহিনীর বড় অনুপ্রেরণা।

আমরা দুই বছর আগে একই মাঠে পাকিস্তানের সাথে ৩২৬ করেও পারিনি। তার মানে এই মাঠে ৩০০ রানের বেশি স্কোর তাড়া করা যায়- কোনরকম বাড়তি চাপ না নিয়ে এক বুক সাহস আর উদ্যম নিয়ে খেললে হতেও পারে অসাধ্য সাধন।

এআরবি/আইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।