ইংল্যান্ড সিরিজে চোখ রাখুন তাদের দিকে


প্রকাশিত: ০৩:৪৯ পিএম, ০৬ অক্টোবর ২০১৬

সকল জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শুক্রবার থেকে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ডের মধ্যে ময়দানি লড়াই। গত কিছুদিন ধরে ঘরের মাঠে ফেবারিট হিসেবে প্রতিপক্ষের সামনে দাঁড়াচ্ছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।

ইংলিশদের বিরুদ্ধেও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এবার মাশরাফিদের সামনে রয়েছে টানা সপ্তম সিরিজ জয়ের অপূর্ব সুযোগ। বাংলাদেশ কী পারবে এই সাফল্যর মালা গলায় পরতে? এটা না হয় সময়ের হাতেই তোলা থাক। বরং আমরা একটু দেখার চেষ্টা করি বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড সিরিজে কারা বড় নিয়ামক হয়ে উঠতে পারেন-

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ
খুব বেশি দিন হয়নি। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অসামান্য এক সেঞ্চুরি করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সেই ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ প্রথমবার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল। ৯ মার্চের সেই ইনিংসটি নিঃসন্দেহে মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারের সেরা অর্জনগুলোর একটি।

১৯৯৯ থেকে বিশ্বকাপে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু তখন পর্যন্ত যে সেঞ্চুরির নাগাল পাননি কেউই। যেটা করে দেখিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ (১০৩)। শুধু তাই, ১৩ মার্চ পরের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও সেঞ্চুরি করেন। যদিও বাংলাদেশ ম্যাচটি হেরে যায় ৩ উইকেটে।

পার্শ্ব নায়ক থেকে এখন নিয়মিতই মাহমুদুল্লাহকে দেখা যাচ্ছে প্রধান নায়কের ভুমিকায়। বিশ্বকাপে ওই সেঞ্চুরির কথা ভাবলে তার কাছ একটু বেশিই প্রত্যাশা বাংলাদেশের। আর ইংলিশদের সঙ্গে মাহমুদুল্লাহর পারফরম্যান্সও সেকথা বলে। এখন অবধি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ ম্যাচ খেলে ৪২.৩৩ গড়ে রান করেছেন ২৫৪।

তামিম ইকবাল
তামিম ইকবাল বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যান কি না এ প্রশ্ন ইতোমধ্যে উঠে গিয়েছে। আফগানিস্তান সিরিজে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৯ হাজার রান ছাড়িয়ে গেছেন। সাকিব আল হাসানকে টপকে সবচেয়ে বেশি সাতটি সেঞ্চুরির মালিকও এখন তামিম।

Mahmudullahআর মাত্র ৬৯ রান করতে পারলেই তামিম প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক অতিক্রম করবেন। তাছাড়া প্রতিপক্ষ হিসেবে ইংল্যান্ড একটু বেশিই প্রিয় তামিমের। কে না জানে ২০১০ সালে লর্ডসে সাদা পোষাকে তার ভয়ংকর সুন্দর সেঞ্চুরির কথা। পরের ম্যাচ ম্যানচেস্টারেও সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বসেন তামিম।

এ তো গেল টেস্টের কথা। রঙিন পোশাকেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেকে মেলে ধরেছেন তামিম। ৯ ম্যাচে ২৯.৪৪ গড়ে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৬৫ রান। সর্বোচ্চ ১২৫।

ইমরুল কায়েস
ভাগ্য বিড়ম্বিত এক ক্রিকেটারের নাম ইমরুল কায়েস। একটু খারাপ করলেই তাকে দলের বাইরে ফেলতে দুবার ভাবেন না নির্র্বাচকরা! এই তো আফগান সিরিজে প্রথম ম্যাচে ৩৭ রান করার পরও তাকে বসিয়ে রাখা হলো। যুক্তি হতে পারে টিম কম্বিনেশনের স্বার্থেই এমনটা করা হয়েছে; কিন্তু আপনি যদি ঘরোয়া ক্রিকেটে ইমরুলের পারফরম্যান্স দেখেন, সেখানে তার পারফরম্যান্স উর্ধ্বমুখি।

তাই তার একটু বেশি সুযোগই প্রাপ্য; কিন্তু ইমরুলের বেলায় সবসময়ই হয়েছে উল্টো। তাই তো অন্যদের চেয়ে নিজেকে অনেক বেশি প্রমাণ করতে হয় ইমরুলকে। আর সেই প্রমাণে সবসময় লেটার মার্ক নিয়ে পাসও করেছেন। এবারও করলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফতুল্লায় একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে।

অবশ্য পরিসংখ্যান বলছে ইংল্যান্ডের সঙ্গে ইমরুলের ব্যাটের হাত মন্দ নয়। ৮ ম্যাচে ৩১.৩৮ গড়ে রান করেছেন ২৫১। সেঞ্চুরি না পেলেও ইমরুলের তিনটি ফিফটি রয়েছে। সর্বোচ্চ ৭৬। ২০১১ বিশ্বকাপে চট্টগ্রামে ইংলিশ বধের মাহমুদুল্লাহ-শফিউলদের মতো ভুমিকা রেখেছিলেন ইমরুলও। ওই ম্যাচে তিনি ৬০ রানের মুল্যবান এক ইনিংস খেলেছিলেন।

ইংল্যান্ড
ক্রিস ওকস: ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে অসাধারণ পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছেন ক্রমেই বড় অলরাউন্ডার হয়ে উঠতে থাকা ক্রিস ওকস। বাংলাদেশের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারেন তিনি। বল হাতে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারেন ওকস। বাংলাদেশের বিপক্ষে এখনও পর্যন্ত একটি ম্যাচ খেলেছেন। ২০১৫ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে ওকস অপরাজিত ছিলেন ৪২ রানে। অবশ্য ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৬৪ রান দিয়ে তাকে উইকেটশূন্য থাকতে হয়েছে।

জস বাটলার
অত্যন্ত দুর্বল যুক্তিতে বাংলাদেশ সফরে আসেননি নিয়মিত ওয়ানডে অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান। যে কারণে ইংল্যান্ডের ওয়ানডে দলের নেতৃত্বের আর্মব্যান্ড পরেছেন জস বাটলার। ইংলিশদের বদলে যাওয়া ওয়ানডে দলের অন্যতম নায়কও তিনি। একেবারে ম্যাচ উইনার বলতে যা বোঝায় বাটলার তাই; কিন্তু সমস্যা হলো বাংলাদেশকে খুব বেশি পরখ করা হয়নি তার।

বাটলার একবারই বাংলাদেশকে দেখেছেন অ্যাডিলেড ওভালে। যে ম্যাচে তার দলকে হারের যন্ত্রণা সইতে হয়েছে। তাও আবার বিশ্বকাপে। ওই ম্যাচে বাটলার কিন্তু নিজের কাজ ঠিকঠাকই করে দিয়েছিলেন ৬৫ রানের ইনিংস খেলে। এবার নিশ্চয় তিনি বাংলাদেশকে সামনে পেয়ে বিশ্বকাপের জ্বালা মেটাতে চাইবেন, সেটাই তো স্বাভাবিক!

মঈন আলি
টেস্ট-ওয়ানডে দু’ধরণের ক্রিকেটেই ইংল্যান্ডের অপরিহার্য নাম মঈন আলি। টপ থেকে শুরু করে লেট মিডল অর্ডার সবখানেই ব্যাট করতে পারেন। স্পিনের হাতও নেহাৎ কম নয়। তাছাড়া বাংলাদেশের কন্ডিশন মঈনের ভালোই চেনা। সাকিব-তামিমদের সঙ্গে তিনি এখানকার ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন। ইংলিশ কাউন্টি দল উস্টারশায়ারের খেলেছিলেন সাকিব।

ওই দলে ছিলেন মঈনও। সুতরাং বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্পর্কে জ্ঞানের পরিধি তার যথেষ্টই রয়েছে। ম্যাচ বলতে এখনও পর্যন্ত একটি ম্যাচেই খেলেছেন বিশ্বকাপে। সেই ম্যাচে ব্যাট হাতে করেছিলেন ১৯ রান। ৯ ওভার বল করে ৪৪ রানের বিনিময়ে পেয়েছিলেন ১টি উইকেট।

জাগো চ্যাম্পিয়নের ১২তম সংখ্যা পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে

আইএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।