ধারাবাহিক সাফল্যের কারণেই তিন পেসার ফর্মুলা!


প্রকাশিত: ০৬:৪৩ এএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সবাই নন। তবে কারো কারো ধারণা ছিল, আফগানিস্তানের সঙ্গে স্পিন নির্ভর বোলিং কৌশল আঁটবে বাংলাদেশ। এর পক্ষে যুক্তি ছিল, আফগানরা ফ্রি স্ট্রোক খেলতে পছন্দ করে। বল ব্যাটে আসলে তাদের শট খেলতে আরও সহজ হবে। বল একটু ধীরে আসলে আর পিচ পড়ে নীচু হলে তাদের ইচ্ছেমত আক্রমণাত্মক উইলোবাজি করা কঠিন হবে। তাই শেরে বাংলায় আসগার স্ট্যানিকজাইয়ের দলকে ঘায়েল করতে বুঝি স্লো ও লো ট্র্যাকে খেলা হবে। আর এক ঝাঁক স্পিনার নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ।

কিন্তু সে ধারণা ভুল প্রমাণ হতে যাচ্ছে। যতদূর জানা গেছে খেলা হবে তুলনামূলক স্পোর্টিং পিচে। যেখানে বল পিচ পড়ে স্লো হবে না। নিচুও হবে না। একটা ভালো গতি ও চমৎকার বাউন্সে ব্যাটে আসবে। সে কারণেই বোলিং আক্রমণটা হবে পেসার কেন্দ্রিক।

আর অল্প কয়েক ঘন্টা পর আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে যে তিন ম্যাচের সিরিজ শুরু হতে যাচ্ছে, তার প্রথমটিতে দুই বাঁহাতি স্পেশালিষ্ট স্পিনার সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলামের পাশাপাশি প্রায় নিয়মিত হাত ঘোরানো অফস্পিনার মাহমুদউল্লাহ থাকবেন। সঙ্গে পেস বোলার থাকছেন তিনজন।

ধারণা করা হচ্ছে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় টিম মিটিংয়ে চূড়ান্ত হয়েছে এ সিদ্ধান্ত। আসলে তা নয়। গত বছর বাংলাদেশ যে টানা চার সিরিজ জিতেছে, তার সবগুলোর সঙ্গে মিল রেখেই আসলে একাদশ সাজানো হয়েছে। ঐ চার সিরিজে গড়পড়তা তিন পেসার খেলানো হয়েছে। শুধু ভারতের সাথে চার পেস বোলার (মাশরাফি, মোস্তাফিজ, রুবেল ও তাসকিন) ব্যবহার করা হয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে তিন ম্যাচ সিরিজের সবকটায় তিন পেসারে দল সাজানো হয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে দুই পেসার নিয়ে খাবি খাবার পর তিন পেসার নিয়ে মাঠে নেমেই ধরা দেয় সাফল্য। আর ২০১৫ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের সাথে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও খেলেছেন তিন পেসার। সব সিরিজেই পেসারদের সাফল্য চোখে পড়ার মত।   

সেই গত বছর পাকিস্তানের সাথে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ থেকে শুরু। তারপর ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং সব শেষ জিম্বাবুয়ের সাথে টানা চার সিরিজে পেসারদের দাপট সুস্পষ্ট।  এই চার সিরিজের ১২ ম্যাচে বাংলাদেশের বোলাররা মোট ১০৩ উইকেটের পতন ঘটিয়েছেন। যার ৫১ ভাগ উইকেট পেয়েছেন পেসাররা।  

একটা ছোট পরিসংখ্যান দেখুন:
পাকিস্তানের সাথে প্রথম ওয়ানডেতে ১০ উইকেটের ৪ টি পতন ঘটিয়েছেন পেসাররা ( তাসকিন ৩, রুবেল ১)। আজহার আলী বাহিনীর বিরুদ্ধে দ্বিতীয় খেলায় ৬ উইকেটের দুটি জমা পড়েছে পেসারদের ঝুলিতে (মাশরাফি ও রুবেল একটি করে)। তিন নম্বর ম্যাচে অলআউট হওয়া পাকিস্তানিদের ৪ জন সাজঘরে ফেরেন পেসাররে বলে ( মাশরাফি ও রুবেল সমান দুটি করে)।

ভারতের সাথে ঐতিহাসিক সাফল্যের মিশনের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন পেসাররা। তিন ম্যাচে ভারতের পতন ঘটা ২৬ উইকেটের প্রায় ৮৫ ভাগ উইকেট পেসারদের। মাশরাফি, মোস্তাফিজ, রুবেল ও তাসকিন মিলে পতন ঘটিয়েছেন ২১ উইকেটের। এর মধ্যে অবশ্য মোস্তাফিজ একাই পেয়েছেন ১৩ উইকেট (৫+৬+২)।

দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে তিন ম্যাচের সিরিজের সাফল্যর অন্যতম রুপকারও ঐ পেসাররাই। তিন খেলায় প্রোটিয়াদের ২১ উইকেটের পতন ঘটে। যার ১২ টি ভাগ করে নেন তিন পেসার মোস্তাফিজ (৫টি)  মাশরাফি (৩) ও রুবেল (৪) ।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় মানেই স্পিনারদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া এটাই জানা ছিল। সে ধারণা ভুল প্রমান হয়েছে সর্বশেষ সিরিজে। তিন ম্যাচে ১৬ উইকেটের পতন ঘটিয়েছেন তিন পেসার মাশরাফি (৪) মোস্তাফিজ (৮) ও আল আমিন (৪)। এই রকম কার্যকর বোলিং দক্ষতার পর আবার স্পিন নির্ভরতার প্রশ্নই ওঠে না।

তাই আফগানদের সঙ্গেও পেস বোলিং শক্তি নিয়ে মাঠে নামার চিন্তা। দেখা যাক ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্ব মানের ব্যাটিং শক্তির ভীত কাপিয়ে দেয়া মাশরাফি, তাসকিন, শফিউল ও রুবেলরা ( যে কোন তিনজন খেলবেন) আফগানদের বিরুদ্ধে কি করেন?

এআরবি/এমআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।