বিরাট এক বোঝা নেমে গেলো : সানি


প্রকাশিত: ১২:৩৩ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

৯ মার্চ অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের দায়ে অভিযুক্ত হন তাসকিন আহমেদ এবং আরাফাত সানি। এরপর থেকেই তাদের দুনিয়া অন্ধকার। এক বুক আশা নিয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন চেন্নাইয়ে। সেখান থেকে যে রিপোর্ট এলো তাতে করে দু’জনেরই পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাওয়ার কথা। আশা-পাশের দুনিয়া হয়ে গিয়েছিল অপরিচিত। অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল চারপাশ।

এরপর অবশ্য হাল না ছেড়ে তাসকিন-সানি নেমে পড়েন অ্যকাশন শোধরানোর কাজে। টানা আট মাস কঠোর পরিশ্রমের পর অবশেষে আইসিসি অনুমোধিত ব্রিসবেন ন্যাশনাল ক্রিকেট সেন্টারে পরীক্ষা দিয়ে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেলেন তারা দু’জনই।

‘বোলিং অ্যাকশন বৈধ’- এটা শোনার পর যেন আরাফাত সানির কাঁধের ওপর থেকে বিশাল একটি বোঝা নেমে গেলো। তিনি নিজেই জাগো নিউজকে বলেন, ‘খুব টেনশনে ছিলাম। কী হয় না হয়- এ চিন্তায় ঘুম পর্যন্ত হারাম হয়ে গিয়েছিল। অবশেষে সুসংবাদটা শোনার পর মনে হচ্ছে কাঁধের ওপর থেকে বিশাল একটি পাথর নেমে গেলো।’

জাগো নিউজের সঙ্গে কথোপকথনের শুরুতেই তাসকিন বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, সু সংবাদটিই পেলাম। বোলিং অ্যাকশন অবৈধ ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই যেন কাঁধের ওপর বিরাট এক বোঝা বসে ছিল। কী হবে না হবে তা নিয়ে খুবই চিন্তিত ছিলাম। অ্যাকশন পরীক্ষা দিয়ে আসার পর চিন্তা আরও বেড়ে যায়। আবার অিরতে পারবো কি পারবো না- তা নিয়ে। টেনশন কাজ করছিল, এবারের পরীক্ষায় হবে কি না- এটা নিয়েও। তবে এখন আমার বিশ্বাস, অ্যাকশন নিয়ে গত কিছুদিন ধরে যে কঠোর কঠোর পরিশ্রম করে গেছি, এখন তার ফল পেলাম।’  

বৈধতার সার্টিফিকেট তো পেয়ে গেলেন। এখন কী করবেন আরাফাত সানি? কারন আফগানিস্তান এবং ইংল্যান্ড সিরিজের ওয়ানডে দলের জন্য গঠিত ২০ জনের পুলে নেই তিনি। এ কারণে, ডান হাতি এই অফব্রেক বোলারের এখন একটাই লক্ষ্য, জাতীয় ক্রিকেট লিগ। এখানেই নিজের পরিবর্তিত বোলিং অ্যাকশনকে আরও ঝালিয়ে নিতে চান আরাফাত।

এমনকি ২০ জনের পুলে নিজের নাম না দেখেও খুব বেশি মন খারাপ হয়নি তার। কারণ সানির সব মনযোগই ছিল কেবল অ্যাকশন পরীক্ষায় পাশ করার দিকে।

জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তান সিরিজ নিয়ে মাথা ঘামানোর চাইতে আমার কাছে পরীক্ষায় পাশ করাটাই ছিল সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সে দিকেই বেশি মনোযোগি ছিলাম। আমার টোটাল ফোকাসটাই ছিলো পাস করা। আল্লাহর কাছে তৃতজ্ঞতা যে, আমি এ পরীক্ষায় পাশ করে আসতে পেরেছি। বিরাট বোঝা হালকা হয়েছে।’

এনসিলকেই যে লক্ষ্য বানিয়েছেন সেটা জানিয়ে আরাফাত সানি বলেন, ‘এখন আমার লক্ষ্য জাতীয় ক্রিকেট লিগ। এই লিগের দিকেই সব মনযোগ দিতে চাই। যদিও হোম সিরিজ বলে যে কোন সময় ডাক পেতে পারি; কিন্তু এসব নিয়ে এখন আর মাথা ঘামাচ্ছি না। এনসিএলেল দিকেই তাকিয়ে আছি। এখানে দীর্ঘ সময় বোলিং করতে পারলে, রানআপ এবং অ্যাকশনে যে পরিবর্তন এসেছে সেটাকে আরও ঝালিয়ে নিতে পারবো।’

কী কী পরিবর্তন এনেছেন আরাফাত সানি? সে ব্যাখ্যাও জাগো নিউজের কাছে দিয়েছেন তিনি। সানি বলেন, ‘আগে আমার রানআপ বলতে ছিল, হেঁটে হেঁটে ডেলিভারি দিতাম। এখন এটা পরিবর্তন করেছি। নতুন রানআপ হচ্ছে, বোলিং মার্ক থেকে খানিকটা দৌড়ে ডেলিভারি দিই। আমার ব্যাকফুট ল্যান্ডিংটা ছিল প্যারালাল। এখনও সেটাই আছে।’

নতুন অ্যাকশনে বোলিংয়ে ধার কমে গেছে কি না? জানতে চাইলে সানি বলেণ=ন, ‘না সেরকম হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আগে আমার বলটা স্কিড (বল উইকেটে পড়েই দ্রুতগতির হয়ে যেতো) করতো। এখন স্কিড করবে না। তবে, অ্যাকশন পরিবর্তনের কারণে উল্টা বাড়তি টার্ন পাচ্ছি। এখন মনে হচ্ছে, এই বাড়তি টার্নটা আমার জন্য আরও উপকারি হবে। প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানকে আরও বিভ্রান্ত করতে পারবো।’

এআরবি/আইএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।