ড্রতেই শেষ বার্সা-অ্যাটলেটিকো মিনি ক্ল্যাসিকো


প্রকাশিত: ০৩:৫৭ এএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বিখ্যাত এমএসএনের ত্রিফলা। আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন লুইস এনরিকে। যে আক্রমণের তোড়ে শুরুতে এগিয়েও গিয়েছিল বার্সেলোনা; কিন্তু যে ম্যাচটিকে অন্য এল ক্ল্যাসিকো কিংবা মিনি এল ক্ল্যাসিকো নামে আখ্যায়িত করা হচ্ছিল, তা কী এত সহজেই শেষ হওয়ার ম্যাচ!

হলোও না সেভাবে। নিজেদের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে ইভান র্যাকিটিকের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর অ্যাঞ্জেল কোরিয়ার গোলটি ঠেকাতে ব্যর্থ হলেন পিকে-মাচেরানোরা। ফলে ম্যাচটি শেষ হলো শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলের ড্রতেই। মৌসুমের শুরুতেই একটি হার এবং একটি ড্রয়ে বেশ পিছিয়ে পড়লো লা লিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা। আবার এই ম্যাচে বার্সার সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো, ইনজুরির কারণে মেসিকে হারিয়ে।

দিয়েগো সিমিওনের অধীনে গত কয়েকবছর দুর্দান্ত সাফল্য পেলেও, একবার লা লিগা জয় এবং দু’বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠলেও ন্যু ক্যাম্পে গত ১০ বছর কোন জয় নেই অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের। সেই জয়ের খরা কাটানোর লক্ষ্যেই ন্যু ক্যাম্প সফর করতে এসেছিল লা রোজি ব্লাঙ্কোজরা। কিন্তু হেরে না গেলেও পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই শেষ পর্যন্ত ক্যাম্প ন্যু থেকে ফিরেছে অ্যাটলেটিকো।

তবে জয় না পেলেও অ্যাটলেটিকোকে এই ড্রয়ের জন্য কৃতিত্ব দেয়ায়ই যায়। কারণ, মেসি-নেইমার-সুয়ারেজকে দিয়ে সাজানো বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আক্রমণভাগকে ঠেকানোই ছিল তাদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ কারণে দিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা শুরু থেকেই রক্ষণ কৌশল অবলম্বন করেই খেলতে শুরু করে। ‘পার্ক ডি বাস’ টাইপের রক্ষণের বিপক্ষে কিন্তু বার্সেলোনা শুরু থেকেই ছিল বেশ আক্রমণাত্মক।

বার্সার এই আক্রমণের সয়লাব কিন্তু ৪১ মিনিট পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছিল অ্যাটলেটিকো। মেসি-ইনিয়েস্তা-নেইমার-সুয়ারেজ-বুস্কেটসদের সম্মিলিত আক্রমণের ফল ৪১তম মিনিটে গিয়ে ঘরে তোলে বার্সা। এ সময় আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার নিখুঁত একটি ক্রস থেকে বল পেয়ে দারুন হেড করেন ইভান র্যাকিটিস। এই হেডটিই শেষ পর্যন্ত গিয়ে জড়িয়ে যায় অ্যাটলেটিকোর জালে।

তবে অ্যাটলেটিকো যে শুধুই রক্ষণভাগ সামলে বার্সার আক্রমণ ঠেকিয়ে গেছে তা নয়। সিমিওনের শিষ্যরা সুযোগ বুঝে বেশ কয়েকবার আক্রমণেও উঠেছিল। তারওপর ৪১তম মিনিটে গোল হজম করে সেটি পরিশোধে বেশ মরিয়া হয়ে ওঠে অ্যাটলেটিকো। যদিও প্রথমার্ধে কোন গোলের দেখা পায়নি তারা।

বিরতির পর শুরু থেকেই আক্রমণে অ্যাটলেটিকো। ৪৬তম মিনিটেই দারুণ সুযোগ তৈরী করে নেয় তারা। তবে বার্সা গোলরক্ষক টের স্টেগানকে ফাঁকি দিতে পারেননি অ্যাটলেটিকোর আন্তোনিও গ্রিজম্যান।

৫৯তম মিনিটে গিয়ে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি খেলো স্বাগতিক বার্সা। এ সময় চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন দলটির আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি। তার মাঠ ছাড়ার দুই মিনিটের মধ্যেই বার্সেলোনার জালে বল পাঠিয়ে সমতায় ফেরে অ্যাটলেটিকো।

জেরার্ড পিকের দুই পায়ের ফাঁক গলে আসা বল পেয়ে যায় মাত্র এক মিনিট আগে মাঠে নামা অ্যাঞ্জেল কোরিয়া। দ্রুত এগিয়ে গিয়ে গড়ানো শটে বার্সার জালে বল জড়িয়ে দেন এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। পোস্টে লেগে বল জড়ায় জালে। ফেরানোর চেষ্টাও করতে পারেননি টের স্টেগান।

এরপর নেইমার দু’বার দারুণ দুটি শট নিয়েছিলেন অ্যাটলেটিকোর পোস্ট লক্ষ্য করে; কিন্তু অ্যাটলেটিকো গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক দারুণ ক্ষিপ্রতায় ঠেকিয়ে দেন সেই দুটি শট। আরেকবার নেইমারের ফ্রি কিক থেকে ভেসে আসা বলে জেরার্ড পিকে হেড করলেও সেটা জাল খুঁজে পায়নি। ৮৮ মিনিটে দিয়েগো গোডিনের ফ্রি কিক কোনমতে কর্ণারের বিনিময়ে রক্ষা করেন বার্সা গোল রক্ষক টের স্টেগান।

এই ড্রয়ে ৫ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে তিন নম্বরে নেমে গেছে বার্সেলোনা। ৯ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে রয়েছে অ্যাটলেটিকো। একই দিন ঘরের মাঠে ভিয়ারিয়ালের সঙ্গে ড্র করা রিয়াল মাদ্রিদ ১৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই রইল। ১১ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে উঠেছে সেভিয়া।

আইএইচএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।