ইংলিশদের বাংলাদেশে নিরাপদ ভাবছেন হ্যালসল


প্রকাশিত: ০২:০০ পিএম, ০৭ আগস্ট ২০১৬

পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলার জন্য এবং মাস খানেক থাকার জন্য বাংলাদেশ কতটা নিরাপদ? সেপ্টেম্বরের শেষ দিন ঢাকা এসে পৌঁছানোর আগে নিশ্চয়ই তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে ইসিবি।

বাংলাদেশের সামগ্রিক অবস্থা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা সন্তোষজনক, তা পাখির চোখে পরখ করতে চলতি মাসের মাঝামাঝি ইংল্যান্ড থেকে একটি নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক দলও ঢাকায় আসবে।

ওই পর্যবেক্ষক দল ইতিবাচক রিপোর্ট দিলেই কেবল ইংলিশ ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর হবে, অন্যথায় নয়। তারা স্বশরীরে এসে তিনটি বিষয়ই খুঁটিয়ে দেখবে। সবার আগে দেখবে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি কতটা সন্তোষজনক। দ্বিতীয় রাজধানী ঢাকা এবং দ্বিতীয় ভেন্যু চট্টগ্রাম আসলে কতটা নিরাপদ।

সবশেষে তাদের চোখ থাকবে পুরো ইংল্যান্ড দলের সফর ও সিরিজ চলাকালীন একদম বিমানবন্দরে অবতরণ করা থেকে শুরু করে হোটেলে যাওয়া, সে হোটেলের ভিতর, বাইরে মাঠে যাওয়া-আসার পথে কেমন নিরাপত্তা বেষ্টনি তৈরি করা থাকবে? সেটা কতটা নিশ্ছিদ্র?

সব সন্তোষজনক হলেই কেবল ইতিবাচক রিপোর্ট জমা পড়বে ইসিবি কিংবা ইংল্যান্ডের পররাষ্ট্র এবং স্বরাষ্ট্র দপ্তরে। তার আগে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের সফর হবে, এমন কথাও যেমন শতভাগ নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই, আবার সফর হবে না- সেটাও বলার কোনো অবকাশ নেই।

তবে ইংলিশদের বাংলাদেশ সফর নিয়ে আশাবাদী হবার একটি ইঙ্গিত মিলেছে। বাংলাদেশ জাতীয় দলের ইংলিশ ফিল্ডিং কোচ রিচার্ড হ্যালসল ঢাকা তথা বাংলাদেশকে নিরাপদ ভাবছেন। তার মানে ইংল্যান্ড বাংলাদেশ সফরে আসবে। তাই তো মুখে এমন আশার বাণী, ‘আমি শঙ্কিত হবার কিছু দেখছি না। কারণ বাংলাদেশ এখন বেশ শান্ত ও নিরাপদ।’

গুলশান ট্র্যাজেডি ও শোলাকিয়ার জঙ্গি আক্রমণের পর প্রায় মাস খানেক বাংলাদেশের সামগ্রিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে শুক্রবার ঢাকায় পা রাখেন হ্যালসল। এরপর আজ (রোববার) জাতীয় দলের ট্রেনিং সেশন শেষে শেরেবাংলার মিডিয়া লাউঞ্জে স্থানীয় প্রচার মাধ্যমের কাছে এমন ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াই ব্যক্ত করেছেন তিনি।

অনেক কথার ভিড়ে হ্যালসল দুটি বিষয় চিহ্নিত করেছেন, যা বাংলাদেশের শতভাগ পক্ষেই যায়। সবার জানা, নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে অসি যুবদল অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকলেও গত বছর বিশ্ব যুব ক্রিকেটে (অনূর্ধ্ব-১৯) ইংল্যান্ড যুব দল ঠিকই খেলে গেছে।

সেই বিষয়টাকে উল্লেখ করে হ্যালসল বলেন, ‘ আমি আশাবাদী ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর বহাল থাকবে। কারণ ইংল্যান্ড বিশ্বের সব জায়গায় খেলতে প্রত্যয়ী। ইংলিশ যুব দল গত বছর খেলে গেছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশে আসার পর সব কিছু দেখে, শুনে ও বুঝে নিজেকে অনেকটাই নিরাপদ ভাবছেন হ্যালসল।

এ ইংলিশ ফিল্ডিং কোচের আরও একটি ইতিবাচক দিক অনুভবে আছে। তার মনে হচ্ছে, জঙ্গি হামলার বিষয়ে একটা জাতীয় সচেতনতা তৈরী হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, ‘বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ, অনেক সৎ এবং জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে সোচ্চার।’

তারপরও পেশাদার হ্যালসল কথা বলেছেন মেপে মেপে। ‘বাংলাদেশে কোন নিরাপত্তা শঙ্কা নেই। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল আসতেই পারে’- এমন কথা কিন্তু বলেননি। একজন ইংলিশ হিসেবে তার চলে আসা আর ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরে আসা যে এক বিষয় নয়, তা সোজা সাপটাই বলে দিয়েছেন তিনি।

এ সম্পর্কে তার ব্যাখ্যা, ‘এখন আসলে অনেক দেশেই নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা আছে। আমি বাংলাদেশে কোচিং করাই। কোচিং আমার পেশা। আমার আসার সঙ্গে ইংল্যান্ড দলের সফরকে মেলানো ঠিক হবে না। তারা অনেক ভেবে চিন্তে ও হিসেব কষে আসবে। সবার আগে তারা নিরাপত্তার অবস্থা খুঁটিয়ে দেখবে। যদি দেখে তাদের ক্রিকেটাররা নিরাপদ এবং কোনরকম হুমকি ও শঙ্কা নেই, তাহলে নির্ঘাত চলে আসবে।’

তবে এখন বাংলাদেশ নিরাপদ। এ কথা জানিয়ে হ্যালসল শেষ করেন এভাবে, ‘এখন আমার কাছে বাংলাদেশে থাকা নিরাপদ মনে হচ্ছে। তবে এটা তাদের (ইসিবি) ব্যাপার। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশে আসা সত্যিই নিরাপদ কি না? অবশ্যই পুরো দলের আসা সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার। আমি সত্যিই আশাবাদি ইংলিশরা আসবে। আমাদের কিছু আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা দরকার।’  

আইএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।