বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেও অধিনায়কত্ব হারাচ্ছেন স্যামি


প্রকাশিত: ০৬:১৬ এএম, ০৬ আগস্ট ২০১৬

ভারতের মাটিতে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর আগে শ্রীলংকার মাটিতে ২০১২ সালে প্রথমবার এ সংস্করণের বিশ্বসেরা হয় তারা। দুই আসরেই দলের অধিনায়ক ছিলেন ড্যারেন স্যামি। কিন্তু দলকে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন করার পরও নেতৃত্ব হারাতে হচ্ছে তাকে। নিজের ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এমনটা জানিয়েছেন স্যামি।

ভিডিওতে স্যামি বলেন, ‘আমি গতকাল সকালে একটি কল পেয়েছি, এটা সম্ভবত ৩০ সেকেন্ডের একটি কল। এটা ছিল নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান যিনি আমাকে বলেন তারা টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক নিয়ে পর্যালোচনা করছেন। আমি আর টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক থাকছি না। আমার পারফরম্যান্স স্কোয়াডে ঢোকার জন্য যথেষ্ট নয়।’

ছয় মিনিট দীর্ঘ আবেগপূর্ণ বার্তায় আরও বলেন, ‘এটা ঠিক আছে, আমি সব সময় বলে আসছি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট ড্যারেন স্যামি নয়। তারা ভবিষ্যতের দিকে নজর দিবেন। আমি নতুন অধিনায়ককে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। আমি এখনো জানিনা কে হচ্ছেন তাই আমি তাকে কল দিতে পারছি না। নতুন অধিনায়ক যে হচ্ছেন তার জন্য শুভকামনা, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আরও এগিয়ে নাও।’

অধিনায়ক থেকে সরিয়ে দিলেও এখনই ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছেন না স্যামি। অধিনায়কত্বের ছয় বছরের দারুণ সময়ের জন্য সতীর্থ, কোচ এবং ভক্তদের ধান্যবাদ জানান তিনি।

‘অবশ্যই আমার নেতৃতে দুটি বিশ্বকাপ (টি-টোয়েন্টি) জয় লক্ষণীয় ব্যাপার। এ সাফল্য আমার স্মৃতিতে অনেক দিন পুষে রাখবো। এটা আমার ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা নয়। আমি আমার ভক্ত, সতীর্থ এবং কোচ যাদের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডে... হ্যাঁ (দীর্ঘশ্বাস) ধন্যবাদ জানাই আমাকে ছয় বছর দলে নেতৃত্বে রাখার জন্য। কিন্তু এখন আমার অধিনায়কত্ব শেষ হয়ে এসেছে। ধন্যবাদ সবাইকে।’

স্যামি তার আবেগপূর্ণ বার্তায় আরও জানান অধিনায়কত্বের সময়ের কঠিন সময়ের কথা। খেলার মাঠকেই নিজের অফিস হিসেবে ভাবতেন তিনি।
‘আমি জানি আমি আমার হৃদয় এবং মন দিয়ে খেলেছি যখনই আমি দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলতে নেমেছি। ছয়বছর আগে আমাকে যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কত্ব করতে বলা হয়েছিল; এটা খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল যা করতে আমাকে লড়তে হয়েছে। আমি জানতাম এটা খুব কঠিন কিন্তু ভেবেছিলাম নিয়ে দেখি কি হয়। আমি চ্যালেঞ্জকে বুকে জড়িয়ে নিয়েছিলাম, আমি কাঠিন্যকে জড়িয়ে নিয়েছিলাম। খেলার মাঠই ছিল আমার অফিস যেখানে প্রতিদিন যেতাম, আমার কাজ করতাম।’

নিজের অধিনায়কত্বের ক্যারিয়ারের প্রথম কোচ থেকে শুরু করে বর্তমান কোচ এবং সকল খেলোয়াড়দের ধন্যবাদ দেন স্যামি। নিজের এবং দলের উপর বিশ্বাস ছিল বলেই দুটি বিশ্বকাপ জয় করতে পেরেছেন বলে মনে করেন তিনি।
 
‘আমি ওট্টিস গিবসনের (তৎকালীন কোচ) সঙ্গে কাজ শুরু করছিলাম। আমি তোমাকে ধন্যবাদ দিতে চাই আমার উপর বিশ্বাস রাখার জন্য এবং এখন এটা শেষ হলো ফিল সিমন্সের সঙ্গে। আমার সকল সতীর্থ যারা এতদিন আমার সঙ্গে ছিলেন, আমার অধীনে খেলেছেন, সহয়তা করা জন্য  তাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই।  আমাদের ভালো-খারাপ সময় গেছে কিন্তু আমরা বিশ্বাস হারাইনি। আমি কখনোই নিজের এবং আমার দলের উপর বিশ্বাস হারাইনি। এটাই আমি একজন একজন অধিনায়ক- চেষ্টা করেছি ইতিবাচক, কখনোই হারবনা এমন মানসিকতা দিতে। যার ফলে আমরা দুটি বিশ্বকাপ জিতেছি। আমি তোমাদের সকলকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’

২০১১ সালে স্যামি ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কত্ব নেবার পর ৪৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে ২৭ ম্যাচে জয় পেয়েছেন। কলকাতা ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর একটি দীর্ঘ আবেগপূর্ণ বার্তা দিয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে তার সেই বক্তৃতার কারণেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আরটি/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।