পাওনার জন্য বিসিবির দ্বারে ঘুরছেন নাফীসরা
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে প্রাপ্য পারিশ্রমিক না পাওয়ায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দ্বারস্থ হয়েছেন ব্রাদার্স ইউনিয়নের ক্রিকেটাররা। লিগ শেষ হওয়ার পর ছয় সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পাওনা বুঝে না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই বিসিবির দ্বারস্থ হলেন তারা। মঙ্গলবার শাহরিয়ার নাফীস, ইমরুল কায়েস, নাফিস ইকবাল, সঞ্জিত সাহা, নাবিল সামাদসহ বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার একত্রিত হয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে দেখাও করেছেন।
এর আগে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন এক রকম হুমকি দিয়েই জানিয়েছিলেন, সঠিক সময়ে ক্রিকেটারদের পাওনা পরিশোধ করতে। পাওনা পরিশোধে ছয় সপ্তাহের একটি নিয়মও তৈরী করে দিয়েছিল টুর্নামেন্ট কমিটি; কিন্তু সে সময় পেরিয়ে গেলেও বিসিবিকে কোন তোয়াক্কাই করছে না ক্লাবগুলো।
লিগ শেষ হয়েছে গত ২২ জুন। তবে সুপার লিগে উঠতে ব্যর্থ হওয়ায় ব্রাদার্সের লিগ শেষ হয় ৯ জুন। নিয়ম অনুযায়ী লিগের শুরুতে চুক্তির ৩০ শতাংশ পেয়েছেন ক্রিকেটাররা। তবে এরপর বাকি দুই কিস্তির একটিও পায়নি তারা। ফলে এখনও মোট অর্থের ৭০ শতাংশ পাওনা রয়েছে ক্লাবটির ক্রিকেটারদের।
টাকা না পেয়ে হতাশ ব্রাদার্সের ক্রিকেটার শাহরিয়ার নাফীস বলেন, ‘আমরা ৩০ভাগ পারিশ্রমিক পেয়েছি; কিন্তু এই সময়ে শতভাগ হয়ে যাওয়ার কথা। অথচ এখনও পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপের টাকা পাইনি। তৃতীয় ধাপের তো প্রশ্নই আসে না। যেহেতু ৭০ভাগ বাকি এবং শতভাগ বকেয়া দেওয়ার ডেটলাইন শেষ, তাই এই ব্যাপারটাই আমরা সবাই এক সঙ্গে বিসিবির কাছে তুলে ধরেছি।’
আগেই বিসিবি জানিয়েছিল ক্লাবগুলো পাওনা পরিশোধ না করলে তা করে দেবে তারা। ঈদ-উল ফিতরের আগে সিসিএস এবং কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমীর খেলোয়াড়দের বকেয়া পরিশোধ করেছে বিসিবি। তাই এবার নাফীসরা আশা করছেন তাদের বকেয়ার ব্যপারে এগিয়ে আসবে বিসিবি। প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজনও আশ্বাস দিলেন তাদের।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের রুটি-রুজির মূল উৎস এ প্রিমিয়ার লিগই। জাতীয় দলে চুক্তির বাইরের খেলোয়াড়দের সংসার খরচ আসে এ লিগ খেলেই। তাই পাওনা টাকা না পেলে নিজেদের সংসার চালানো হিমশিম হয়ে যাবে বলে মনে করেন নাফীস। এমনকি এতে করে ভবিষ্যতে ক্রিকেটে আসতে নবীনরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন বলেও মনে করেন তিনি।
‘আমরা সবাই এক হয়ে ব্যাপারটা সিইওকে জানালাম। আমরা আবেদর করেছি, যেন এ ব্যাপারটা খুব ভালোভাবে দেখা হয়। কারণ হিসাব করে দেখলে, ২০১৪ সালের আগস্টে প্রিমিয়ার লিগে হয়েছে। এরপর এবার দু্ই বছর পর হয়েছে। আমাদের বাংলাদেশের ৯০ ভাগ খেলোয়াড়ের কিন্তু মূল আয়ের উৎস প্রিমিয়ার লিগ। এই প্রিমিয়ার লিগে যদি পাওনা ঠিকমতো আদায় না হয় তাহলে খেলোয়াড়দের ক্রিকেট খেলাটাই কষ্ট হয়ে যাবে।’
বিসিবির বেঁধে দেওয়া সময় পার হয়ে গেলেও খেলোয়াড়দের সঙ্গে কোন যোগাযোগই রাখেনি ব্রাদার্স কর্তৃপক্ষ। রোজার সময়ে শেষ তারা আশ্বাস দিলেও তা রাখেনি। এমনকি এরপর যোগাযোগ করার কোন সুযোগই পাচ্ছেন না নাফীসরা, ‘এই মুহূর্তে আসলে ক্লাব কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে কোনো কথাই পাওয়া যাচ্ছে না। রোজার ঈদের আগে তারা একটা আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, পদক্ষেপ নেবে; কিন্তু রোজার ঈদের অনেক দিন হয়ে গেলো। অথচ এখন পর্যন্ত ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো ধরণের আশ্বাস বা গঠণমূলক কোনো আলোচনা করা হয়নি। এই মুহূর্তে তাদের সাথে যেগাযোগ করেও কোনো কিছু পাওয়া যাচ্ছে না।’
উল্লেখ্য, বকেয়া পাওনার দাবিতে এর আগে বিসিবিতে একই অভিযোগ জানিয়েছিলেন ভিক্টোরিয়ার ক্রিকেটাররাও। তাদেরকেও পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছে বিসিবি।
আরটি/আইএইচএস/এবিএস