শেখ জামালকেও রুখে দিল রহমতগঞ্জ
জেপি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে একের পর এক জায়ান্ট বধ করেই যাচ্ছে যেন রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। চট্টগ্রাম পর্বে নিজেদের বেশ ভালোভাবেই মেলে ধরেছে তারা। মোহামেডান, শেখ রাসেলের পর এবার তারা রুখে দিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকেও। ১-১ গোলে সমতা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হল দুইবারের চ্যাম্পিয়ন শেখ জামালকে। রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক মাসুমের দৃঢ়তার কাছে পরাস্ত হলো টপ ফেভারিট শেখ জামাল।
শেখ জামালের পয়েন্ট ভাগকরে নেয়ার মধ্য দিয়ে প্রত্যাশা পূর্ণ হল রহমতগঞ্জের কোচ কামাল বাবুর। লিগের প্রথম পর্বের খেলায় তিন পয়েন্ট পাওয়ার আশা নিয়ে চট্টগ্রাম এসছিলেন তিনি দল নিয়ে। সে প্রত্যাশা ছাড়িয়ে ৩ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে চট্টলা ছাড়ছেন তিনি।
তবে এখানে একটু ওলট-পালট হয়েছে । খেলা শেষে রহমতগঞ্জের কোচ কামাল বাবু জানালেন, ‘মোহামেডান অথবা শেখ জামালকে হারিয়ে পূর্ন তিন পয়েন্ট পাওয়ার প্রত্যাশা ছিল। আর শেখ রাসেল থেকে ১ পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে চেয়েছিলাম; কিন্তু হয়েছে উল্টোটা। মোহামেডান ও শেখ জামালের সাথে ড্র করলেও শেখ রাসেলকে হারিয়ে পেলেন পূর্ণ তিন পয়েন্ট।’
চলতি মৌসুমের প্রথম দেখাতেই রহমতগঞ্জ ড্র করলো শেখ জামালের সাথে। গত মৌসুমে দু’দল মুখোমুখি হয়েছিল তিনবার। এর মধ্যে এক জয় ও দুই ড্র নিয়ে মৌসুম শেষ করেছিলেন কামাল বাবুর রহমতগঞ্জ।
খেলা শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিজ দলের মূল গোলরক্ষক আল আমীনের পরিবর্তে খেলা মাসুমের বেশ প্রসংশা করলেন তিনি। জানালেন, বিদেশি খেলোয়াড় ছাড়াই বর্তমান টিম নিয়ে আরো ভাল করতে পারবে তার দল।
তৃতীয় রাউন্ডে এসেও প্রথম রাউন্ডের পূনরাবৃত্তি (ড্র)। রহমতগঞ্জ-শেখ জামালের পয়েন্ট ভাগাভাগির কারণে দু’দলের ভাগ্যেই লেখা হলো ৫ পয়েন্ট করে (এক জয়, দুই ড্র)। তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে শেখ জামালই।
চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে কর্দমাক্ত মাঠে খেলার শুরুর দ্বিতীয় মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো গত আসরের শিরোপাধারীরা। শেখ জামালের ফরোয়ার্ড এমেকার থ্রু পাস থেকে সতীর্থ ফরোয়ার্ড ছোট বক্সের ভেতরে ওয়েডসনের নেয়া শটটি রহমতগঞ্জের ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে কর্ণার হয়ে যায়।
৯ মিনিটে রহমতগঞ্জের মিডফিল্ডার সোহেল রানা ডান প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে থ্রু পাস বাড়ালে বিদেশি ফরোয়ার্ড জোনাপিও জোরালো শটটি ক্রসবার উঁচিয়ে বাইরে চলে যায়। ২৯ মিনিটে এসে এগিয়ে যায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। ডানপ্রান্ত থেকে এনামুলের থ্রু পাস ফরোয়ার্ড ওয়েডসন বক্সের ভেতরে ঢুকে শট নিলে বল রহমতগঞ্জের জালে আশ্রয় নেয় (১-০)।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে শেখ জামালের এমেকা একটি সহজ সুযোগ নষ্টের পর ম্যাচে গোল পরিশোধে বেশ চাপ প্রয়োগ করতে থাকে রহমতগঞ্জ। শেখ জামালের রক্ষণভাগ তছনছ করে দেয় তুর্য-জোনাপিওরা।
একটার পর একটা আক্রমণের ধারাবাহিকতায় সফলও হয় রহমতগঞ্জ। ৫৮ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে মিডফিল্ডার ফয়সাল আহমেদের ক্রস থেকে ছোট বক্সে বল ফাঁকায় পেয়ে যায় বিদেশি ফরোয়ার্ড জোনাপিও। তার নেয়া শটটিই দলকে সমতায় ফেরায় (১-১)।
সমতাসূচক গোলের পরও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখে রহমতগঞ্জ। ৭৩ মিনিটে এগিয়ে যেতো পারতো দলটি। ডানপ্রান্ত থেকে রহমতগঞ্জে তুর্য’র থ্রু পাস থেকে জোনাপিও’র নেয়া শটটি গোলবারে প্রবেশের মুহূর্তে লিংকন তা ক্লিয়ার করলে হার এড়ায় শেখ জামাল।
এরপর আরও একবার বিদেশি মিডফিল্ডার ল্যান্ডিংয়ের থ্রু পাস সতীর্থ রাকিবের শট কিপার ঠেকিয়ে দিলে ফিরতি বলে এমেকার আবারো শট রহমতগঞ্জের এলিটা বেনজামিন ক্লিয়ার করেন।
জীবন মুছা/আইএইচএস/এবিএস