ক্রীড়াঙ্গনেও ইসরাইল-ফিলিস্তিনি যুদ্ধ


প্রকাশিত: ১০:২৬ এএম, ২৬ জুলাই ২০১৪

রাজনৈতিক সংঘর্ষের কালো ছায়ায় প্রভাব পড়েছে খেলার মাঠেও। ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক সংঘর্ষে ক্রীড়াঙ্গনেও জন্ম নিয়েছে বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা। ম্যাচ চলাকালে ফুটবল মাঠে প্রবেশ করে ইসারাইলী ফুটবলারদের মারধর করা কিংবা সাবেক সতীর্থের সঙ্গে ইসারাইল ফুটবল অধিনায়কের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পাশাপাশি কমনওয়েলথ গেমসের মতো আসরে ফিলিস্তিনের পক্ষে মালয়েশিয়ান এক সাইক্লিস্টের কৌশলী প্রচারণা, এ নিয়ে আয়োজকদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া-এমন সব ঘটনার জন্ম নিতে শুরু করেছে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে।

চলতি সপ্তাহে অস্ট্রিয়ার মাটিতে ফরাসি ক্লাব লিলির বিপক্ষে প্রীতি ফুটবল খেলতে নেমেছিল ইসরাইলী ক্লাব মাক্কাবি হাইফা। ম্যাচের শেষ দিকে উপস্থিত দর্শকদের একাংশের আকস্মিক হামলার মুখে পড়েছেন মাক্কাবির ফুটবলাররা। ম্যাচ শুরু আগে ইসরাইল বিরোধী স্লোগান সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মাঠে হাজির হয়েছিলেন এই সব দর্শকরা। ম্যাচের শেষ দিকে আকস্মিক মাঠে ঢুকে পড়েছেন তারা। মাঠে প্রবেশ করে মাক্কাবির ফুটবলারদের ওপর শারীরিক হামলা চালিয়েছে তরুস্ক ভিত্তিক এই দর্শকরা। তাদের কিল-ঘুষি-ফ্লায়িং কিকে কিছু সময়ের জন্য মাঠে লুটিয়ে পড়েছেন ইসরাইলী ফুটবলাররা। অবশ্য আকস্মিক হামলার বিমূঢ়তা কাটিয়ে ইসরাইলি ফুটবলাররাও এক সময় দর্শকদের সঙ্গে শারীরিক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন। বাধ্য হয়ে ম্যাচ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে রেফা্রিকে। উপস্থিত নিরাপত্তাকর্মীদের সাহায্যে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে মাক্কাবির সব ফুটবলারকদের।

এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট টুইটারে সাবেক সতীর্থ জো বার্টনের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েছেন মাক্বাবি এবং ইসরাইল জাতীয় দলের অধিনায়ক জশি বিনাইয়ন। ইংলিশ ক্লাব কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সে খেলেন ইংলিশ ফুটবল বার্টন। মাক্কাবিতে যোগ দেওয়ার আগে এই ক্লাবেই খেলেছেন বিনাইয়ন, যিনি এক সময় লিভারপুল ও চেলসির মতো ক্লাবেও খেলেছেন। অস্ট্রিয়ার মাটিতে যা ঘটেছে এর জন্য ইসরাইলকেই দায়ী করেছেন বার্টন। বলছেন, ‘নিরীহ শিশুদের হত্যা করে ইসরাইলিরা ঘৃণ্য কাজই করছে। ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজ মাটিতে উচ্ছেদ করার কোনো অধিকার নেই ইসরাইলের।’

জো বার্টনের এই মন্তব্য পছন্দ হয়নি ইসারইল অধিনায়ক বিনাইয়নের। টুইটারে তাই বার্টনকে স্টুপিড বা গর্দভ বলে সম্বোধন করেছেন তিনি। এরপর টুইটার মেসেজের মাধ্যমেই তর্কাতর্কি চলেছে দুই ফুটবলারের মধ্যে।

এদিকে স্কটল্যান্ডে চলমান কমনওয়েলথ গেমসে ঢুকে পড়েছে ইসরাইল-ফিলিস্তিনি ইস্যু। ‘সেভ গাজা’ বা ‘গাজাকে রক্ষা কর’ কথাটি গ্লাভসে লিখে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন মালয়েশিয়ার এক পুরুষ সাইক্লিস্ট। যা ক্ষুব্ধ করেছে আয়োজকদের। শুক্রবার আযোজকরা এই সাইক্লিস্টকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে আরেকবার ‘সেভ গাজা’ গ্লাভসটি হাতে উঠলে কমনওয়েলথ গেমস থেকে বহিষ্কার করা হবে তাকে। অবশ্য আজিজুল্লাসনি অ্যাওয়াং নামের এই মালয়েশিয়ান দাবি করেছেন, ‘কোন রাজনৈতিক কারণে নয়, মানবিক বিচারেই এই গ্লাভস হাতে পড়েছিলাম আমি।’

এদিকে বিশ্ব ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা সভাপতি সেপ ব্লাটার বলেছেন, ফিলিস্তিনির ওপর ইসরাইলের সামরিক আক্রমণে ব্যক্তিগতভাবে তিনি নিজেও দুঃখিত। বিশেষ করে ইসরাইলি হামলায় ফিলিস্তিনি ফুটবল সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তির মৃত্যুতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন ফিফা সভাপতি।

ইসারাইল-ফিলিস্তিনি ইস্যুতে চাপ বাড়ছে ইউরোপিয়ান ফুটবল ফেডারেশন’র (উয়েফা) সভাপতি মিশেল প্লাতিনির ওপর। আগামী বছর উয়েফা অনুর্ধ্ব-২১ ফুটবলের আয়োজক হওয়ার কথা ইসরাইলের। কিন্তু আয়োজকের তালিকা থেকে ইসরাইলকে বাদ দেওয়ার জোড় দাবি উঠেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই দাবি উঠেছে মুসলিম ফুটবল খেলুড়ে দেশগুলোর পক্ষ থেকেই।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।