জাতীয় দলে ফিরতে উন্মুখ রুবেল


প্রকাশিত: ১১:১৬ এএম, ২৯ জুন ২০১৬

আবার খোশ মেজাজে রুবেল হোসেন। এ স্পিড স্টারের আনন্দ আর ধরে না। ঠোঁটের কোনে জমে থাকা স্মিত হাসিটা আবার ফিরে এসেছে। মনের খুশিতে আপনজনের সাথে বাগেরহাটে ঈদের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।

অথচ মাঝে কয়েক মাস হাসি হারিয়ে গিয়েছিল তার। গত বছরের প্রথম থেকে কঠিন বিপদ চারদিক থেকে গ্রাস করেছিল। সপ্তাহ খানেক আগেও কোন না কোন সমস্যার আবর্তে আটকা ছিলেন বাগেরহাটের রুবেল।  

‘বিপদ কখনো একা আসে না’- গত বছরের প্রথম থেকে এ প্রবাদ হঠাৎ সত্য হয়ে দেখা দিয়েছিল তার জীবনে। প্রথমে ‘হ্যাপি’ বিতর্কে জড়িয়ে জেলে যাওয়া। তারপর ইনজুরিতে মাঠের বাইরে ছিটকে পড়ে ঘরের মাঠে দুটি সিরিজ মিস করা। এরপর নিজের গাফিলতিতে বোর্ডের বেতনভুক্ত ক্রিকেটারের খাতা থেকে নাম কাটা যাওয়া।  

অবশেষে ১৯ জুন আবার ভাগ্য খোলা। বেতন কাঠামোয় ফিরে আসা। বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদ সভায় আবার রুবেলকে বেতন কাঠামোয় নিয়ে আসে। তার আগে ইনজুরি কাটিয়ে প্রিমিয়ার লিগে অংশ নেয়া- সব মিলে খারাপ সময় কাটিয়ে আবার সুসময়ে ফেরা।

তাই তো মুখে এমন সংলাপ, ‘স্রষ্টার কৃপায় মেঘ কেটে গেছে। মনে হয় এখন আবার সব আগের মতই হবে।’ এখানেই শেষ নয়, বিসিবিকে ধন্যবাদ জানাতে ভুল হয়নি। ‘আমাকে আবার জাতীয় পুলে রাখা এবং বেতন কাঠামোয় নেয়ার জন্য বোর্ডকে ধন্যবাদ জানাই।’

জাগো নিউজের সাথে মুঠোফোন কথোপকথনে পরিষ্কার হলো, এখন আরেকটা আশা পুরণের অপেক্ষা। জাতীয় দলে এক সময়ের নিয়মিত জায়গাটা আবার নিশ্চিত করার চিন্তায় উন্মুখ। তাই তো মুখে একথা, ‘এখন জাতীয় দলে ঢোকা ও টিকে থাকা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। আগের যে কোন সময়ের চেয়ে চ্যালেঞ্জিং। তবে আমি আশাবাদী। আবার মূল দলে জায়গা করে নিতে পারবো। লাল সবুজ জার্সি গায়ে মাঠে নামতে পারলে সামর্থ্যরে প্রমাণটা নতুন করে দিতে চাই। অপেক্ষা কেবল সুযোগের।’

জানেন ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব ভাল খেলা ছাড়া আবার জাতীয় দলে ফেরা কঠিন। তাই তো এবারের প্রিমিয়ার লিগে ১৫ খেলায় ১৯ উইকেট প্রাপ্তিতে ততটা খুশি নন তিনি। তার নিজের অনুভব, ‘আসলে এবারের প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম ব্যাংকের হয়ে খারাপ বোলিং করিনি; কিন্তু চিন্তা অন্য জায়গায়। উইকেট পেয়েছি তুলনামূলক কম; ১৫ খেলায় শিকার ১৯টি। উইকেট কম পেলে সবার চোখেও পড়ে কম। তাই একটু চিন্তিত।’

তার চেয়ে বেশি উইকেট আছে কয়েকজনেরই। তবে একটা মানসিক তৃপ্তি আছে। ‘আমার বোলিংয়ের ইকোনমি খেয়াল করলে দেখবেন। ওভারপিছু রান দিয়েছি বেশ কম। সেটাই অন্যরকম সন্তুষ্টি।’

আবার দলে ফিরতে মুখিয়ে থাকা রুবেলের উপলব্ধি, ‘আমি যেমনই পারফম করি না কেন, জাতীয় দলে ফিরবো কি ফিরবো না, তা নির্বাচকরাই ভাল বলতে পারবেন। আমি শুধু প্রাণপণ খেটে নিজেকে মেলে ধরতে পারি। তবে সে পারফরম্যান্সকে নিয়ামক ধরে নির্বাচকরা আমাকে যোগ্য মনে করতে পারেন, নাও পারেন। আমি চেষ্টা করছি। কোন টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ পেলে নিজেকে উজাড় করে চেষ্টা করবো।’

জাতীয় দলে ফেরার তাড়ার কথা জানিয়ে রুবেল বলেন, ‘জাতীয় দলে ফেরার তাড়াও প্রচুর। আস্থা-আত্মবিশ্বাসও আছে যথেষ্ট। আমার বিশ্বাস, আবার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চড়াতে পারবো। এখন নির্বাচকরা যোগ্য মনে করলেই হয়।’

ইংল্যান্ডের সাথে অক্টোবরে হোম সিরিজের আগে সেপ্টেম্বরে দীর্ঘ পরিসরের আসর বিসিএল খেলতে মুখিয়ে রুবেল। জানেন, সেখানে ভাল করার ওপরই নির্ভর করছে ইংল্যান্ডের সাথে খেলা না খেলা।

তাই মুখে এমন কথা, ‘আমি জানি জাতীয় দলে ফিরতে হলে লড়াই করেই ফিরতে হবে। তাই তো ঘরোয়া ক্রিকেটের যে কোন আসরে ভাল খেলতে চাই। নিজেকে উজার করে চেষ্টা করবো।’

এআরবি/আইএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।