ইতিহাস বদলালো না আর্জেন্টিনার


প্রকাশিত: ০৩:৫৭ এএম, ২৭ জুন ২০১৬

টানা তৃতীয় ফাইনালে উঠে ইতিহাস বদলানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েই মাঠে নেমে ছিলেন মেসি। কিন্তু আবারো ব্যর্থ বিশ্বসেরা এই ফুটবলার। টাইব্রকারে আবারো ৪-২ গোলে হেরে টানা তৃতীয় বারের মত ফাইনালে থেকে শিরোপা বঞ্চিত হল আর্জেন্টিনা।

২০১৪ বিশ্বকাপে ফাইনালের পর মারাকানার পোডিয়ামে যখন সোনালি রংয়ের ট্রফিটার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন মেসি, তখন বড়ই অসহায় মনে হচ্ছিল তাকে। আহা! এত কাছে, তবু এত দুরে। সেরা ফুটবলারের পুরস্কার, গোল্ডেন বলটা জিতেও তিনি ট্র্যাজিক হিরো। বিশ্বকাপটার এত কাছে এসেও তার ছোঁয়া পাওয়া হলো না গ্রহের সেরা ফুটবলারটির।

পরের বছর যেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। কোপা আমেরিকার ফাইনালে পৌঁছে গেলো মেসিদের আর্জেন্টিনা। চিলির সান্তিয়াগোয় এস্টাডিও ন্যাসিওনেলের পোডিয়ামে এক বছর আগের দৃশ্যেরই যেন অবতারনা হলো। টাইব্রেকারে চিলির কাছে হেরে শিরোপার পাশ দিয়ে হেঁটে আসলেন মেসি-আগুয়েরোরা; কিন্তু সোনার হরিণটার ছোঁয়া আর পেলো না আলবিসেলেস্তারা।

আগের দুই বছরের ইতিহাস বদলানো মিশন নিয়ে কোপার শতবর্ষের এই আসরে দুর্দান্ত শুরু করে মেসি-হিগুয়েনরা। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে ফাইনালে তোলেন মেসি। কিন্তু ফাইনালে আবারো ব্যর্থ। মেসি এতটা হতাশ করবেন কোটি কোটি ভক্ত-সমর্থককে, সেটা কে ভেবেছিল! পুরো ম্যাচেই বোতলবন্দী হয়ে ছিলেন- এটা ঠিক। তবে তার মাপের ফুটবলারের একটি মুভমেন্টই পাল্টে দিতে পারে ম্যাচের চেহারা। এই আত্মবিশ্বাস ছিল মেসি ভক্তকুলের।

messi

কিন্তু কোথায় সেই মুভমেন্ট? মার্কোস রোহোকে লাল কার্ড দেয়ার কারণে মেসিকে নেমে যেতে হলো আরও নীচে। দু’একবার বল নিয়ে বেরোনোর চেষ্টা করেছেন ঠিক, তবে সেটা চিলির ডিফেন্ডারদের কড়া মার্কিংয়ের কারণে পারেননি।

একটি শট নিয়েছিলেন। বাম পায়ের ট্রেডমার্ক শট। চলে গেলো পোস্টেও অনেক বাইরে দিয়ে। পুরো ম্যাচে মেসির অন টার্গেট শট বলতে ওটাই। ফ্রি কিক পেয়েছিলেন কয়েকটা। কিন্তু ম্যাজিকাল ফ্রি কিকের শট নিতে যেভাবে পরিচিত মেসি, সেটার দেখা পাওয়া গেলো না একবারও।

নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হওয়ার পর খেলা গড়ালো অতিরিক্ত সময়ে। মেসি বের হতে পারলেন না গোলে একটি শট নিতে। এরপর টাইব্রেকার। শুরুতেই শট নিতে আসেন চিলির মিডফিল্ডার আরতুরো ভিদাল। তার শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দিলেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো।

উল্লাসে ফেটে পড়লো পুরো আর্জেন্টিনা। বাংলাদেশি সমর্থকরাও কম যায় না। গগনবিধারি চিৎকারে প্রকম্পিত করে তুলেছিল আশপাশের পরিবেশ। কিন্তু এই উল্লাসের আড়ালেই যে চূড়ান্ত দুঃখটা লুকিয়ে রয়েছে, তা কে জানতো? আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম শটটি নিতে এলেন মেসি। চিয়ার্স চিয়ার্স, ভামোস ভামোস মেসি- চিৎকারে পুরো মেটলাইফ যেন কাঁপছিল।

কিন্তু এভাবে হতাশা উপহার দেবেন মেসি? প্রথমার্ধে সহজ সুযোগ পেয়েও গোল করতে না পেরে যে অপরাধ করেছিলেন হিগুয়াইন, তার চেয়েও যে বড় অপরাধ করে ফেললেন মেসি! বলটা যে তিনি মেরে দিলেন পোস্টের ওপর দিয়ে। তার  মতো এমন স্পট কিক মাস্টারের কাছ থেকে এমন বাজে শট কল্পনাও করা যায় না। বল উড়িয়ে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যেন আর্জেন্টিনার শিরোপাকে উড়িয়ে দিলেন তিনি!

এমআর/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।