পুল প্রথায় যাচ্ছে নারী ফুটবল লিগ

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ পিএম, ০৫ জানুয়ারি ২০২৫

প্রথমবারের মতো নারী ফুটবল লিগে প্রবর্তন হতে পারে পুল প্রথা। লিগে অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলোর চাওয়া অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বাফুফের নারী ফুটবল কমিটি।

রোববার বিকেল সর্বশেষ লিগে অংশ নেওয়া দলগুলো এবং দেশের শীর্ষ ১০টি ক্লাব নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছে বাফুফের নারী ফুটবল কমিটি। সেখানে ক্লাবগুলো লিগে অংশ নেওয়ার জন্য বাফুফের কাছে অর্থিক সহায়তা অথবা পৃষ্ঠপোষকের ব্যবস্থা করে দেওয়ার দাবি করেছে।

সভা শেষে বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নারী উইংয়ের চেয়ারপারসন মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেছেন, ‘আগামী লিগ নিয়ে আমরা মতবিনিময় করেছিল। গত লিগে অংশ নেওয়া দলের পাশাপাশি আমরা দেশের শীর্ষ ক্লাবগুলোকে এই আলোচনায় ডেকেছিলাম। শীর্ষস্থানীয় ৫ ক্লাব ব্রাদার্স, রহমতগঞ্জ, ফরাশগঞ্জ, পুলিশ, চট্টগ্রাম এই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন।’

কিরণ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের নারী ফুটবল লিগ নিয়মিত হলেও ফিফার গাইডলাইন অনুসারে হচ্ছে না। সেটা করতে হলে আমাদের কমপক্ষে ৯০টি ম্যাচ থাকতে হবে এবং লিগের সময়কাল হতে হবে ৬ মাস। দেশের ক্লাবগুলোর পক্ষে লম্বা সময় ক্যাম্প চালানো এবং খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের বেতন দেওয়া কষ্টকর। তাই তারা বাফুফের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছে।’

উপস্থিত ক্লাবগুলোর দাবিদাওয়াগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল পুল প্রথা চালু করা। এ প্রসঙ্গে মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেছেন,'আমরা জানি পুল করলে খেলোয়াড়রা পারিশ্রমিক কম পান। তাই আমরা কখনো পুল করিনি। পুল না করে আমরা দেখেছি, যে ক্লাব আর্থিকভাবে শক্তিশালী তারা সেরা খেলোয়াড়দের দলে নিয়ে নেয়। অন্য ক্লাবগুলো হয়ে যায় দূর্বল। তাই লিগেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে না। তাই আমরা আগামী লিগে পুল প্রথা করতে যাচ্ছি।'

ফিফার গাইডলাইন অনুসারে লিগ পরিচালনা করলে সেখান থেকে কিছু অনুদান পাবে বাফুফে। তবে সে পরিমান তেমন কিছু না। অনুদান যদি পর্যাপ্ত না হয় তাহলে ফিফার গাইডলাইন মেনে ক্লাবগুলোকে চাপ দেওয়ার দরকার আছে কি? জবাবে কিরণ বলেন, ‘ফিফার গাইডলাইন মেনে লিগ আয়োজনের দরকার আছে। ওয়ার্ল্ড ফুটবলে টিকে থাকতে হলে আমাদের ফিফার গাইডলানইন মেনে চলতেই হবে। আমাদের ফিফার রেজিস্ট্রেশনের মধ্যে ঢৃকতে হবে। ফিফার রেজিষ্ট্রেশনে না ঢুকতে পারলে আমাদের এখানে যে লিগ হয় তা ফিফার অনুমোদিত হবে না। আমরা দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন। যদি আমাদের লিগই ফিফার গাইডলাইনে হবে না। সেটা তো হয় না। ফিফা যে কয় টাকাই দিক তার ওপর আমাদের নির্ভর করলে চলবে না।’

ফিফার গাইডলাইন অনুসারে লিগ আয়োজন না করলে বাংলাদেশ কি এএফসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়নন্স লিগে খেলার সুযোগ পাবে না? এমন প্রশ্নের জবাবে কিরণ বলেন, ‘ফিফার গাইডলাইন ও এএফসির বিষয় এক না। ফিফার গাইডলাইন না মানলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে পারা না পারা সম্পর্কিত নয়। ফিফার গাইডলাইন মেনে লিগ আয়োজন করতে পারলে আমরা ওয়ার্ল্ড ফুটবলে সম্পৃক্ত হতে পারবো।’

মোহামেডান-আবাহনীসহ বড় ক্লাবগুলোকে বারবার আমন্ত্রণ জানানো হলেও নারী লিগে তারা অংশ নেয় না। এবার কি নারী কমিটি আশাবাদী? ‘আমি আশাবাদী তখনই হবো যখন তাদের আর্থিক সহায়তা দিতে পারবো। সেটা দিতে পারলে তাদের অংশ নেওয়ার বিষয়ে আশাবাদী’- বলেছেন কিরণ।

শীর্ষ ১০ ক্লাবকে ডাকা হয়েছে যারা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খেলে। এ দলগুলো প্রফেশনাল লিগ ম্যানেজমেন্ট কমিটির অধীনে। এই মতবিনিময়ের আগে পেশাদার লিগ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সাথে আলোচনার দরকার ছিল না এমন প্রশ্নের জবাবে মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেছেন, ‘আমি প্রফেশনাল ক্লাবকে ডাকিনি। আমি দেশের শীর্ষ ১০ ক্লাবকে ডেকেছি। প্রফেশনাল লিগ কমিটির কোনো ইস্যু থাকলে অবশ্যই সেই কমিটির চেয়ারম্যান বা সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তাদের সঙ্গে কথা বলে এটা করতাম। শীর্ষ ক্লাবগুলো অন্য কি প্রতিযোগিতা বিপিএল বা বিসিএল খেলে সেটা তো বিষয় নয়।’

আগামী লিগ কবে হতে পারে? ‘প্রথম মতবিনিয় হলো। সব মতামত নোট করা হয়েছে। এগুলো নিয়ে আমি সভাপতির সঙ্গে বসবো। তারপর সিদ্ধান্ত নেবো কবে নাগাদ লিগ শুরু করা যায়’- বলেছেন কিরণ।

আরআই/আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।