শিরোপা ধরে রাখা কঠিন মেনেই সকালে কাঠমান্ডু যাচ্ছেন সাবিনারা

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৭:০৫ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

দেশের নারী ফুটবলের ঐতিহাসিক দিন ছিল ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। ওই দিন নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে প্রথমবার দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছিল বাংলাদেশের মেয়েরা।

সাবিনা খাতুন, সিরাত জাহান স্বপ্না আর কৃষ্ণা রানী সরকাররা ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে উড়িয়েছিল লাল-সবুজ পতাকা। দুই দিন পর মেয়েরা যখন ট্রফি নিয়ে ঢাকায় পা রেখেছিলেন, তখন স্মরণীয় অভ্যর্থনা পেয়েছিলে দেশের মানুষের কাছ থেকে। দেশের খেলাধুলার ইতিহাসে অন্যতম উৎসবমুখর সে দিনটি। ২৫ মাস পর সেই শিরোপা ধরে রাখার মিশনে মঙ্গলবার সকালে কাঠমান্ডু যাচ্ছেন সাবিনারা।

নারী ফুটবলের ইতিহাস, ঐতিহ্য, শাক্তি আর সাফল্যে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ভারত ও নেপাল। দুই দলকেই প্রথমবারের মতো পরাজিত করে বাংলাদেশ জিতেছিল ঐতিহাসিক ট্রফি। শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে সেই নেপাল আর ভারতই যে হবে বড় চ্যালেঞ্জিং, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপখ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে যাচ্ছে লাল-সবুজ জার্সিধারী মেয়েরা। যাওয়ার আগে অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বললেন, ‘এবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। এক কথায় কঠিনই হবে শিরোপা ধরে রাখা। তারপরও আমরা যোগ্যতার ১২০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করবো মাঠে। আমাদের ম্যাচ বাই ম্যাচ টার্গেট করে এগুবো। আমাদের গ্রুপে থাকা ভারত ও পাকিস্তান দুই দলই শক্তিশালী।’

বাংলাদেশ গ্রুপে দল তিনটি হওয়ায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ম্যাচে অঘটনের শিকার হলে বাংলাদেশ গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়তে পারে। এমন কোনো আশঙ্কা করছেন কিনা প্রশ্ন করা হলে সাবিনা খাতুন বলেছেন, ‘এমন কিছু হলে আমাদের জন্য সমস্যা তৈরি হবে। তবে বিশ্বাস করি পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা অঘটনের শিকার হবো না। দলের সবাই তা নিয়ে সতর্ক। আমরা পাকিস্তানকে হারিয়ে এবং ভারতের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচ খেলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে চাই। গ্রুপসেরা হতে না পারলে আমাদেরকে সেমিফাইনালেই হয়তো নেপালের মুখোমুখি হতে হবে।’

দুই বছর আগে যে দলটি নিয়ে বাংলাদেশ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিল সেই দলের প্রায় ৪০ ভাগ খেলোয়াড় নেই এবার। তবে এই দলটি বেশি মিস করবে ডিফেন্ডার আাঁখি খাতুন ও ফরোয়ার্ড সিরাত জাহান স্বপ্নাকে। গত সাফের পরপরই এই দুইজন বাফুফের ক্যাম্প ছেড়ে চলে গেছেন। স্বপ্না ফুটবল ছেড়ে সংসার পেতেছেন, চীনে পাড়ি জমিয়েছেন আঁখি খাতুন। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেছেন, তারা আঁখি ও স্বপ্নাকে মিস করবেন। তবে এখন যারা আছেন তাদের ওপরও ভরসা রাখছেন অধিনায়ক।

নতুন কোচ জেমস পিটার বাটলার যে ২৩ ফুটবলার নিয়ে কাঠমান্ডু যাচ্ছেন তাদের ৯ জনেরই প্রথম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। অনূর্ধ্ব-১৬, অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ভালো পারফরম্যান্স করে তারা এরই মধ্যে জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন। সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়ন দলের গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম ছাড়া অন্যদের জাতীয় দলে অভিষেকও হয়েছে।

কোচ বাটলার বলেছেন, ‘অভিজ্ঞ ও তারুণ্য নির্ভর দল এটি। এ দল নিয়েই আমরা শিরোপা ধরে রাখার জন্য লড়াই করবো। প্রথমে আমাদের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে হবে, তারপর ফাইনাল।’

প্রথমবারের মতো সাফ খেলতে যাচ্ছেন গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম, মিলি আক্তার, ডিফেন্ডার আফঈদা খন্দকার, মিডফিল্ডার আইরিন খাতুন, ডিফেন্ডার কোহাতি কিসকু, ফরোয়ার্ড মাতসুসিমা সুমাইয়া, মুনকি আক্তার, শাহেদা আক্তার রিপা ও সাগরিকা।

পুরনো ১৪ জন হচ্ছেন-রূপনা চাকমা, মাসুরা পারভীন, সিউলি আজিম, শামসুন্নাহার, নিলুফা ইয়াসমিন নিলা, মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্দা, স্বপ্না রানী, সানজিদা আক্তার, ঋতুপর্ণা চাকমা, সাবিনা খাতুন, তহুরা খাতুন, শামসুন্নাহার (জুনিয়র) ও কৃষ্ণা রানী সরকার।

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হবে ১৭ অক্টোবর। ২০ অক্টোবর পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের মিশন। গ্রুপে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ ২৩ অক্টোবর ভারতের বিপক্ষে। ২৭ অক্টোবর দুটি সেমিফাইনাল। ৩০ অক্টোবর ফাইনাল।

আরআই/এমএমআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।