বিধ্বস্ত আবাহনী ক্লাব দেখতে গেলেন মোহামেডানের ফুটবলাররা
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সন্ধ্যার আগে একদল মানুষ ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালায় দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী আবাহনী ক্লাবে। ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে ধানমন্ডিস্থ এই ক্লাবে। ক্লাবের ইতিহাসে অর্জন করা ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক সব ট্রফি লুট করে নিয়ে যায় আক্রমণকারীরা। আবাহনী ক্লাব পরিণত করা হয়েছে ধ্বংসস্তুপে।
আবাহনী ক্লাবে লুটপাটের পর অনেক ক্রীড়াবিদ আহ্বান জানিয়েছেন অন্তত ট্রফিগুলো যেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও কোনো ট্রফি ফেরত পায়নি ক্লাবটি। ফুটবল, ক্রিকেট কিংবা হকি যে কোনো খেলায় মাঠের লড়াইয়ে আবাহনীর প্রবল প্রতিপক্ষ মোহামেডান। অনেকে দেখেন দুই ক্লাবকে একে অন্যের চিরশত্রু হিসেবে।
মাঠের সেই বিবেধ ভুলে রোববার মোহামেডান ক্লাব ফুটবল দলের প্রতিনিধি হিসেবে আবাহনী ক্লাবে গিয়েছিলেন একটি প্রতিনিধি দল। সাবেক তিন তারকা ফুটবলার কাজী জসিম উদ্দিন জোসি, ছাঈদ হাছান কানন ও ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব আবাহনী ক্লাবের ধ্বংসস্তুপ দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
মোহামেডানের এই তিন ফুটবলার কখনো আবাহনীতে খেলেননি। তারপরও বিবেকের তাড়নায় তারা সহমর্মিতা দেখাতে রোববার দুপুরে ছুটে গিয়েছিলেন চির প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবে।
এ সময় অন্যান্য ফুটবলারদের মধ্যে গোলাম গাউস, বিপ্লব ভট্টাচার্য্য, জাকির হোসেন, সহিদ হোসেন স্বপন, জাকির হোসেন, মাসুদ রানা, অমিত খান শুভ্র, জুলফিকার মাহমুদ মিন্টু, ইকবাল হোসেনসহ আরো বেশ কয়েকজন ফুটবলার ছিলেন।
জাতীয় দল ও মোহামেডানের সাবেক তারকা ফুটবলার কাজী জসিম উদ্দিন জোসি বলেছেন, ‘রাজনীতি আর ক্লাব আলাদা বিষয়। আমরা চাইবো খেলাধুলার সাথে যেন রাজনীতি জড়ানো না হয়। আবাহনীর দীর্ঘদিনের অর্জন তাদের ট্রফিগুলো। যারা নিয়েছেন তাদের এগুলো কোনো কাজে আসবে না। কিন্তু আবাহনীর চিরদিনের অর্জন ও স্মৃতিগুলো তারা যেন ফিরিয়ে দেন।’
জাতীয় দল ও মোহামেডানের সাবেক তারকা গোলরক্ষক ছাঈদ হাছান কানন জাগো নিউজকে বলেছেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন মাঠে প্রতিপক্ষ হিসেবে খেলেছি। মাঠে তারা প্রতিপক্ষ হলেও ক্লাবের অবস্থান ক্লাবের জায়গায়। বাংলাদেশের ক্রীড়ার ইতিহাস লিখলে মোহামেডান ও আবাহনীকে বাদ দিয়ে হবে না। আজ আবাহনী না থাকলে দেশের খেলাধুলাও শেষ হয়ে যাবে। আমি মনে করি, যারা এক ন্যাক্কারজনক কাজ করেছেন তারা কোনো দলের নয়। তারা সন্ত্রাসী, দুর্বৃত্ত। যারাই আবাহনী থেকে ট্রফিগুলো নিয়েছেন, তারা যেন সেগুলো ফেরত দিয়ে দেন।’
আরআই/এমএমআর/জিকেএস