একটি হেড, একটি সেভ- যেভাবে চ্যাম্পিয়ন করলো স্পেনকে
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দুই দলই লড়াই করেছে সমানতালে। প্রথমার্ধ গোলশূন্য, দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে স্পেনের গোল। মাঝপথে কোল পালমারের গোলে সমতায় ইংল্যান্ড। ৮৬তম মিনিটে আবারও স্পেনের গোল। ২-১ গোলে এগিয়ে তারা।
এই অবস্থায় শেষ মুহূর্তে ম্যাচ বাঁচাতে ইংল্যান্ড ঝাঁপিয়ে পড়বে এটা জানা কথা। পুরো টুর্নামেন্টে এমনই শেষ মুহূর্তে ঝাঁপিয়ে পড়ে, গোল আদায় করে ফাইনাল পর্যন্ত উঠে এসেছিলো ইংল্যান্ড।
দ্বিতীয় রাউন্ড, কোয়ার্টার ফাইনাল বা সেমিফাইনাল। ইংল্যান্ড শেষ মুহূর্তে গোল করে জয় ছিনিয়ে নিতে ওস্তাদ। ৯০ মিনিট, ৮০ মিনিট কিংবা ৯৫ মিনিটেও গোল করতে দেখা গেছে তাদের।
নকআউটের প্রতিটি ম্যাচেই দ্বিতীয়ার্ধে যেন আসল রূপে জ্বলে ওঠে তারা। সেখানেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে এবং গোল করে জয় ছিনিয়ে নেয়।
ইউরোর ফাইনালে স্পেনের বিপক্ষেও কী আগের সব নকআউট ম্যাচের মত তেমন কিছু করে দেখাবে ইংল্যান্ড! বিচিত্র কিছু নয়। আগের ম্যাচের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আক্রমণের ধারও বাড়িয়ে তুলেছে তারা।
ঘড়ির কাঁটায় সময়টা ৮৯ মিনিট ১৫ সেকেন্ড। অবিশ্বাস্য সেই কাণ্ডটিই ঘটিয়ে দিলো ইংলিশরা। কোল পালমার দুর্দান্ত একটি কর্ণার কিক নিলেন। বল বাতাসে সুইং করে এসে পড়লো ৬ গড়ের ছোট বক্সের সামনে। ডেকলান রাইস দুর্দান্ত এক হেড নিলেন। স্পেন গোলরক্ষক উনাই সিমোন ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই বল রক্ষা করলেন।
কিন্তু ফিরতি বলটি খুব বেশি দুরে যায়নি। একেবারে পোস্টের সামনেই মার্ক গুয়েহির মাথায়। তিনিও নিলেন দুর্দান্ত হেড। এবার আর উনাই সিমোনের এই হেডটিকে কোনোভাবেই ফিরিয়ে দেয়ার সুযোগ পাওয়ার কথা নয়। কারণ, তখনও সিমোন মাটি থেকে উঠে দাঁড়াতে পারেননি।
কিন্তু তখন ঠিক গোললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে দানি ওলমো। ৩ গোল করে যিনি গোল্ডেন বুটের দাবিদার। আর একটি গোল করতে পারলেই এককভাবে গোল্ডেন বুট জয় করে নেবেন।
সেই ওলমো গোল লাইনে দাঁড়িয়ে হেড করেই ফিরিয়ে দিলেন মার্ক গুয়েহির নেয়া খুব জোরালো হেডটি। শেষ মুহূর্তে গোল করার যে ঐতিহ্য ইংলিশদের, সেটাকে পুরোপুরি নষ্ট করে দিলেন ওলমো। ফাইনালে নিজে গোল করতে না পারলেও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে একটি গোল ফিরিয়ে দিয়ে স্পেনকে ইউরো চ্যাম্পিয়ন করে দিলেন দানি ওলমো।
ওই সময় যদি ওলমো বলটি ফেরাতে না পারতেন, তাহলে নিশ্চিত ম্যাচ হয়ে যেতো ২-২ সমতা। ম্যাচ গড়াতো অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে যে কোনো কিছু হতে পারতো। তা না হলে টাইব্রেকার। তাতে ইংল্যান্ডেরই জয়ের সম্ভাবনা থাকতো। কিন্তু দানি ওলমোর অসাধারণ ক্ষিপ্রতা অনাকাঙ্খিত ঘটনা থেকে বাঁচিয়ে চ্যাম্পিয়ন করে দিলো স্পেনকে।
ইএসপিএন ওলমোর এই গোল সেভের হেডকে অভিহিত করেছে, ‘মোমেন্ট অব দ্য ডে’ নামে।
আইএইচএস/