৬৪ বছর পর এক ঢিলে দুই পাখি মারার সুযোগ ইংল্যান্ডের
১৯৬৬ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জেতার দুই বছর পর ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের টপ ফেবারিট হিসেবে ইতালি গিয়েছিল ইংল্যান্ড। সেটি ছিল ইউরোপের ফুটবলের বড় এই প্রতিযোগিতার তৃতীয় আসর।
সেবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ফিরতে হয়েছির তৃতীয় হয়ে। সেমিফাইনালে যুগোস্লাভিয়ার কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল ইংলিশরা।
এরপর থেকে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ যেন তাদের কাছে অভিশপ্ত এক নাম। ২০২০ আসরে ঘরের মাঠে ফাইনালে উঠেও পারেনি শিরোপা বন্ধ্যাত্ব দূর করতে।
দীর্ঘদিনের শিরোপা খরা ও ইউরোতে বিজয়ের হাসি দিতে না পারার আক্ষেপ মেটানোর সুযোগ ছিল হ্যারি কেইনদের। কিন্তু পারেনি এক ঢিলে দুই পাখি মারতে। পারতে দেয়নি ইতালি। ওয়েম্বলির দর্শকদের কাঁদিয়ে ট্রফি জিতে নেয় আজ্জুরিরা।
ইংল্যান্ডের সামনে আবার এক ঢিলে দুই পাখি মারার সুযোগ। ইউরোতে প্রথম এবং ৫৮ বছর পর কোনো ট্রফি ছুঁতে ইংল্যান্ডের দরকার একটি ম্যাচ জেতা। ১৫ জুলাই জার্মানির বার্লিনে স্পেনকে হারাতে পারলেই স্বপ্নপূরণ হবে ইংলিশ সমর্থকদের।
আন্তর্জাতিক ফুটবলের ট্রফি কেমন, তা প্রথমবারের মতো দেখবে ইংল্যান্ডের এই প্রজন্মের সমর্থকরা। ১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপ জেতার পর দীর্ঘ সময় হাসি নেই ইংলিশদের।
১৯৬০ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর পর দ্বিতীয়বার ফাইনালে উঠেছে তারা। ৬৪ বছরের না পাওয়ার অতৃপ্তি ঘোচানোর আরেকটা সুযোগ তাদের সামনে। প্রথমবারের মতো দেশের বাইরে কোনো বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠে একটা বন্ধ্যাত্ব দূর করেছে তারা। এবার আরো দুটি লক্ষ্যপূরণের পালা।
কথা হলো- ইংল্যান্ড যতই স্বপ্ন দেখুক, তা পূরণ সহজ হবে না। কারণ, ফাইনালে তাদের মুখোমুখি হতে হবে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে দুর্বার দল স্পেনের। শুরু থেকেই যারা দাপট দেখিয়েছে।
স্পেন যতটা দাপুটে ফুটবল খেলে ফাইনালে উঠেছে, তার ধারেকাছে নেই ইংল্যান্ড। দুই দলের গোলের সংখ্যাই পার্থক্যটা বুঝিয়ে দিচ্ছে। গ্রুপ পর্বে সব ম্যাচ জিতেছে স্পেন, ইংল্যান্ড এক জয় ও দুই ড্র নিয়ে পরের রাউন্ডে উঠেছে।
৬ ম্যাচে স্পেন গোল করেছে ১৩ টি, ইংল্যান্ড ৭ টি। তবে ফুটবল এমনই এক খেলা যেখানে অনেক সময় আগের পরিসংখ্যান বিকায় না। ওই ম্যাচে সেরাটা দিতে পারলে প্রতিপক্ষকে টপকানো সম্ভব। ইংল্যান্ড হয়তো তেমন একটা দিনই চাইবে।
আন্তির্জাতিক ফুটবলে দুই দেশ ২৭ বার মুখোমুখি হয়েছে। তবে সর্বাধিক ১৯ বার ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে। বিশ্বকাপে দুইবার, ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে ৪ বার ও ইউরোপা লিগে ২ বার।
জয়ের পাল্লা ভারী ইংল্যান্ডের। ১৪ ম্যাচ জিতেছে তারা, হেরেছে ১০টি। তিনটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে চারবারের সাক্ষাতে একবারও হারেনি ইংল্যান্ড। এই টুর্নামেন্টে সর্বশেষ দেখা হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড জিতেছিল টাইব্রেকারে।
যে কোনো টুর্নামেন্টেই ফেবারিট হিসেবে অংশ নেয় ইংল্যান্ড। সেটা বিশ্বকাপ হোক বা ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্ট। তবে শিরোপা জয়ের দিক দিয়ে স্পেনের চেয়ে ঢের পিছিয়ে ইংলিশরা।
দুই দলই একবার করে বিশ্বকাপ জিতেছে। মহাদেশীয় এই টুর্নামেন্টে স্পেন যেখানে তিনবার চ্যাম্পিয়ন সেখানে ইংল্যান্ড একবার রানার্সআপ। স্পেনের চোখ এখন ইউরোর চতুর্থ শিরোপায়, ইংল্যান্ডের লক্ষ্য না পাওয়ার আক্ষেপ ঘোচানোর।
আরআই/আইএইচএস/